২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাশিয়ায় ফের ইউক্রেনের হামলা : যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান

দনবাসের পরিস্থিতি খুবই জটিল : জেলেনস্কি; সেভেরোদোনেতস্কে চার দিক থেকে রুশ হামলা; ২২ মিলিয়ন টন খাবার রফতানি আটকে দিয়েছে রাশিয়া
-

ইউক্রেন আবারো হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের গভর্নর রোমান স্টারোভয়েট। শদনবার রাতে কুরস্ক অঞ্চলের গভর্নরের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাস নিউজ। খবর আলজাজিরার। স্টারোভয়েট বলেন, টেটকিনো ও আশপাশের আবাসিক এলাকায় আবারো ইউক্রেনের হামলায় বেশ কয়েক জায়গায় আগুন ধরে গেছে। তিনি বলেন, পরে পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানাবেন। হামলার ফলে কোনো হতাহত বা অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি।
এ দিকে জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হয়, মস্কোর সাথে এমন চুক্তি মানবে না কিয়েভ। রাশিয়াকে ছাড় দিলে তা ‘ব্যাকফায়ার’ করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, বিরতির পর রাশিয়া আরো তীব্র আক্রমণ করতে পারে। সুরক্ষিত প্রেসিডেন্সিয়াল কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের এই প্রধান মধ্যস্থতাকারী বলেছেন, ‘ছাড় দিলেও যুদ্ধ থামবে না। কিছু সময়ের জন্য স্থগিত থাকতে পারে। তারা নতুন আক্রমণ শুরু করবে, যা আরো রক্তাক্ত, আরো বড় আকারের হবে।’ সম্প্রতি যারা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগিও আছেন। জেলেনস্কির উপদেষ্টার এমন মন্তব্যে মস্কোর পক্ষে থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ইউক্রেনের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর মারিউপোল, দনবাসের লুহানস্ক ও দোনেস্কে ব্যাপক বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে রুশ বাহিনী। যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার ওপর জোর দিয়ে আসছে ইউক্রেন। তবে মস্কোর কাছে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়ার বিনিময়ে যুদ্ধবিরতিতে যাবে না বলে জানালেন মিখাইলো পোডালিয়াক।
দনবাসের পরিস্থিতি খুবই জটিল : জেলেনস্কি
ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের যুদ্ধ পরিস্থিতিকে ‘খুবই জটিল’ বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কারণ কয়েক দিন ধরে স্লোভিয়ানস্ক ও সেভেরোডোনেটস্কে ব্যাপকভাবে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। শনিবার রাতের ভাষণে এ কথা জানান তিনি। রোববার সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে। রুশ বাহিনীর আক্রমণের ধার বাড়ার পরও যুদ্ধবিরতি বা মস্কোকে ছাড় দেয়ার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে কিয়েভ। কিয়েভসহ ইউক্রেনের অনেক জায়গায় থেকে পিছু হটে এখন সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়ার সেনারা। এর মধ্যে দনবাস অঞ্চলের লুহানস্ক ও দোনেস্ক অন্যতম। চলতি মাসে কামান ও বিমান থেকে হামলা চালানো হচ্ছে। হামলায় বেসামরিক স্থাপনা ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে জেলেনস্কির সরকার। এ পরিস্থিতিতে এলাকা ছেড়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে। এ দিকে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দনবাসের বিভিন্ন দিক থেকে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা। দনবাসের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া হামলা চালিয়ে গেলেও প্রতিহত করছে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী। আমাদের প্রতিরোধ যোদ্ধারা রাশিয়াকে আক্রমণাত্মক পরিকল্পনা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আমরা বিজয়ের লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি।
সেভেরোদোনেতস্কে চার দিক থেকে রুশ হামলা : ইউক্রেনের সেভেরোদোনেতস্কে শহরে চার দিক থেকে প্রবেশের চেষ্টা করেছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সেরহি হাইদাই এ তথ্য জানান। রোববার বিবিসির লাইভ নিউজে এ তথ্য জানানো হয়েছে। টেলিগ্রাম পোস্টে হাইদাই লিখেন, রুশ বাহিনীর এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু আবাসিক এলাকায় গোলাবর্ষণ অব্যাহত আছে। তিনি আরো বলেন, শহরের কাছের লিসিচানস্কের সাথে সংযোগকারী একটি সেতু ধ্বংস হয়েছে। তবে বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গভর্নরের এই দাবি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
২২ মিলিয়ন টন খাবার রফতানি আটকে দিয়েছে রাশিয়া : ইউক্রেনের ২২ মিলিয়ন টন খাবার রফতানি আটকে দিয়েছে রাশিয়া। এমন অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ খবর জানিয়েছে আলজাজিরা। পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তার সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি ইউক্রেনকে তার বন্দরগুলোকে অবরোধমুক্ত করতে সহায়তা না করে তবে জ্বালানি সঙ্কটের পর খাদ্যসঙ্কট দেখা দেবে। চলমান সঙ্কট নিরসনে সামরিক সমাধান একটি উপায় হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এ কারণেই ইউক্রেন তার অংশীদারদের কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক অস্ত্র চাইছে।


আরো সংবাদ



premium cement