২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ট্রাক ২৮০০, বাস ২৪০০ মোটরসাইকেল ১০০ টাকা

পদ্মা সেতুর টোল
-

পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন পারপারে সরকার টোল নির্ধারণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় টোলের হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বড় বাসের জন্য দুই হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকের জন্য দুই হাজার ৮০০ টাকা এবং মোটরসাইকেল পার হওয়ার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। আগামী জুন মাসের শেষের দিকে পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের উন্মুক্ত করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এখন শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে।  

গত ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতুতে টোলের হার প্রস্তাব করে অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠায় সেতু মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী দফতরের অনুমোদন পাওয়ার পর গতকাল সেটি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হয়। নির্ধারণ করা টোলের হার অনুযায়ী বর্তমানে ফেরিতে পদ্মা নদী পার হতে যে টাকা লাগছে, সেতু পার হতে এর চেয়ে গড়ে দেড় গুণ বেশি টাকা খরচ করতে হবে। 

সেতু বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের জন্য ম্যুরাল ও ফলক নির্মাণের কাজ চলছে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৪০ ফুট উচ্চতার দু’টি ম্যুরাল নির্মিত হচ্ছে। দু’টি ম্যুরালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি থাকবে। তারা বলছেন, জুনে সেতু উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়ে এখন দিনরাত কাজ চলছে। যেসব টুকিটাকি কাজ আছে, তা জুনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। 

পদ্মা সেতুর টোল আদায়কারী ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগ করেছে সেতু বিভাগ। এই কাজ পেয়েছে কোরিয়া এক্সপ্রেস করপোরেশন (কেইসি) ও চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। এর মধ্যে এমবিইসি বর্তমানে মূল সেতুর নির্মাণকাজ এবং কেইসি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই দু’টি প্রতিষ্ঠান টোল আদায়, সেতু ও সেতুর দুই প্রান্তে যানবাহন চলাচল ব্যবস্থাপনায় আধুনিক পদ্ধতি চালু এবং সেতু ও নদীশাসনের কাজ রক্ষণাবেক্ষণ করবে। এর জন্য পাঁচ বছরে তাদের দিতে হবে ৬৯৩ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলা সারা দেশের সাথে সরাসরি যুক্ত হবে। আগেই ঢাকা-ভাঙ্গা পথে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ফলে এই পথে যাতায়াতের সময় কমে ১ ঘণ্টায় নেমে আসবে বলে সওজের কর্মকর্তারা জানান। 

পদ্মা সেতু প্রকল্প কাজের অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুসারে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কাজ এগিয়েছে ৯৮ শতাংশ। নদীশাসন কাজের অগ্রগতি ৯২ শতাংশ। সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ।

পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। দুই প্রান্তের উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এই সেতু দিয়ে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াত সহজ হবে, সময়ও কমবে। চলাচল সহজের পাশাপাশি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব  ফেলবে পদ্মা সেতু।

 


আরো সংবাদ



premium cement