১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংলাপে ৩০ শিক্ষাবিদের ১৭ জনই আসেননি

সূচনাতেই হোঁচট খেল ইসি

রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না : সিইসি
-

নতুন দায়িত্ব পেয়ে সংলাপ দিয়ে শুরু হলো নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কার্যক্রম। তবে শিক্ষাবিদদের সাথে শুরু করা প্রথম সংলাপের সূচনাতেই হোঁচট খেলো কাজী হাবিবুল আউয়ালের কমিশন। ৩০ জন শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ১৭জনই আসেননি সংলাপে। আর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা অভিযোগ করেন, ভোটের বাক্সের ব্রেকফাস্ট বা নাশতার টাইম হচ্ছে সকাল। খাবার হচ্ছে ব্যালট। কিন্তু গত নির্বাচনে এই বাক্স ব্রেকফাস্ট না করে সাহরি খেয়েছে। এ ছাড়া ইভিএমকে অনেক হাই লেভেলের টেকনোলজি বলা হলেও আসলে তা নয়। অন্য দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, অতীতে বেশ কিছু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই আগামী নির্বাচন যেন বেশি অংশগ্রহণমূলক হয়, প্রকৃত অংশীদারিত্বমূলক হয়-সে লক্ষ্যে কমিশন সবার মতামত নিচ্ছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে ইসির একার পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের কনফারেন্স রুমে গতকাল বেলা ৩টায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে শিক্ষাবিদরা এমন মন্তব্য করেন। এ সময় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, ইসির সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ সংশ্লিস্টরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আগামী ২২ মার্চ বিশিষ্টজনদের সাথে এবং ৩০ মার্চ গণমাধ্যমের সাথে বসতে পারে ইসি। অন্য মহলের সাথে কবে বৈঠক হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, কমিশনের কাজ হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও লোকাল গর্ভমেন্ট নির্বাচন সম্পন্ন করা। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্নজন বিভিন্ন কথা বলেছেন। আগের নির্বাচন পুরো অংশগ্রহণমূলক বিভিন্ন কারণে হয়নি। সেজন্য আমরা চাই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যাতে আরো বেশি অংশগ্রহণমূলক হয়। তিনি বলেন, সংলাপের মাধ্যমে প্রকৃত জনগণের মতামত ওঠে আসবে। সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে কী কী করণীয় হতে পারে, আপনাদের (শিক্ষাবিদ) মতামত নিয়ে আমরা অনেক কিছু আহরণ করতে পারব, আরো ঋদ্ধ হবো।
সংলাপে উপস্থিত ১৩ শিক্ষাবিদ হলেন, অধ্যাপক জাফর ইকবাল, ড. এম আনোয়ার হোসাইন, প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, প্রফেসর এম আবুল কাশেম মজুমদার, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, অধ্যাপক লায়লুফার ইয়াসমিন, প্রফেসর ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার, অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, ড. নিয়াজ আহম্মেদ খান ও ড. বোরহান উদ্দিন খান।
সংলাপে যারা আসেননি তারা হলেন, প্রফেসর ইমেরিটাস ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি, অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. ফারজানা ইসলাম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আতিকুল ইসলাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. তানভীর হাসান, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক ড. মোহাব্বত খান, অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের হোসেন, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক ড. তাসলিম আরিফ সিদ্দিকী ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামছুল আলম।
সংলাপে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, ইভিএম সম্পর্কে বলা হচ্ছে এটা নাকি অনেক হাই লেভেলের টেকনোলজি। আসলে তা না, এটা খুবই লো লেভেলের টেকনোলজি। এখন তো অনেক হাইটেক জিনিসপত্র আছে। আমাদের ভার্সিটির স্টুডেন্টরা ইভিএম নিয়ে প্রজেক্ট করে। ইসিকে জাফর ইকবাল বলেন, আপনারা যত ভালো কাজই করেন, আপনাকে গালি খেতেই হবে। গালি নিয়ে ভাববেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে যেন বলতে পারেন, আমি কাজটা ঠিকমতো করতে পেরেছি। এটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে থাকেন। তারা কিভাবে ভোট দিতে পারে সেটা দেখতে হবে। ইদানিং দেখা যাচ্ছে অনেক জাতীয়পরিচয়পত্রে ভুল হচ্ছে। এটার জন্য অনেকে অনেক টাকা খরচ করেও সমাধান পাচ্ছে না। কমিশন এটার সমাধান করলে একটা পজিটিভ ইমপ্রেশন পড়বে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াহিয়া আখতার বলেন, ভোটের বাক্সের ব্রেকফাস্ট বা নাশতার টাইম হচ্ছে সকাল। খাবার হচ্ছে ব্যালট। কিন্তু গত নির্বাচনে এই বাক্স ব্রেকফাস্ট না করে সেহরি খেয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের বাক্স ‘সাহরি খেয়েছে’ মন্তব্য করে আগামীতে ‘ব্রেকফাস্ট’ নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন অধ্যাপক ইয়াহিয়া। বর্তমান সিস্টেমে ভালো নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মনে করেন তিনি। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সমঝোতা করার তাগিদ দেন তিনি। তিনি বলেন, না হয় আগের কমিশনের মতো দায় নিয়ে বিদায় নেন। আরেকটা কাজ করতে পারেন, সেটা হচ্ছে পদত্যাগ করে সম্মান বাঁচানো। আমরা ১৭ বার সংবিধান সংশোধন করেছি, আরেকবার করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলে এমন কিছু ক্ষতি হতো না। আগামী নির্বাচনে কোনো কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, কারণ, আমাদের দেশের ভোটাররা প্রযুক্তি সচেতন নয়। আর ইভিএম দিতে হলে গণভোট করে যাচাই করতে হবে যে জনগণ ইভিএম চায় কিনা। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে প্রশাসনিক রদবদল জরুরি। আগের নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম নির্বাচনের আগে বললেন, প্রশাসনিক রদবদল করা হবে না। ওটা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেছিলাম।


আরো সংবাদ



premium cement
চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’

সকল