এক সপ্তাহে করোনা বেড়েছে ১৮০ শতাংশ
গতকাল শনাক্ত ছাড়িয়েছে ৩২ শতাংশ; সারা দেশে গতকাল শনাক্ত ১৪৮২৮ মৃত্যু ১৫- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে প্রচণ্ড গতিতে। গতকাল শনাক্ত ছাড়িয়েছে ৩২.৩৬ শতাংশ। এ দিকে গত এক সপ্তাহে সারা দেশে মোট করোনা বেড়েছে ১৮০ শতাংশের বেশি। বর্তমান সংক্রমণের সবই যে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। চিকিৎসকেরা বলছেন, সংক্রমণের গতি সামনে আরো বাড়বে। গতকাল সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৮২৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। এ দিকে মহাখালীর আন্তর্জাতিক কলেরা গবেষণা কেন্দ্র,আইসিডিডিআরবির এক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের অন্তত তিনটি উপ-ধরন (সাব-টাইপ) পাওয়া গেছে। সংস্থাটি জিনোম সিকোয়েন্স এ তথ্য জানিয়েছে। ঢাকা শহরে যে তিনটি উপ-ধরন আছে সেগুলো আফ্রিকান, ইউরো-আমেরিকান এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ওমিক্রন ধরনের সাথে মিলে গেছে বলে জানানো হয়েছে। আইসিডিডিআরবি বলছে, জানুয়ারির প্রথম দুই সপ্তাহে তাদের ল্যাবরেটরিতে এক হাজার ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ শতাংশই ছিল করোনায় আক্রান্ত। আক্রান্তদের মধ্যে ওমিক্রন ছিল ৬৯ শতাংশের নমুনায়।
দিন যতই যাচ্ছে করোনা হটস্পট ঢাকা থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা। উল্লেখ্য, করোনার এ পর্যন্ত যতগুলো ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কৃত হচ্ছে, ওমিক্রন হচ্ছে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রামক। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই ছিল সবচেয়ে সংক্রামক এবং সবচেয়ে বেশি মারাত্মক। এ ক্ষেত্রে ওমিক্রন ডেল্টার মতো বেশি মারাত্মক নয়। জ্বর, সর্দি, কাশি ছাড়া অন্য কোনো লক্ষ্মণ ও উপসর্গ দেখা যায় না ওমিক্রনের সংক্রমণে। অন্য দিকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হলে বেশির ভাগ আক্রান্তের ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। কিন্তু ওমিক্রনে বয়স্ক এবং দীর্ঘদিন যারা বিভিন্ন অসুখে ভুগছে কেবল তাদের কিছুটা ক্ষতি করে থাকে। আইসিডিডিআরবির জিমোম সিকোয়েন্সে বলা হয়েছে, সংস্থা ওমিক্রনে আক্রান্ত যে ২৯ জনের কথা বলেছে এদের মধ্যে ২৭ জনের মৃদু উপসর্গ কিংবা কোনো উপসর্গও ছিল না। ২৪ জন টিকার দুই ডোজ নিয়েছিলেন, বুস্টার ডোজ নিয়েছেন একজন। একজন শুধু এক দিনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
এক সপ্তাহে সারা দেশে মোট ৬৭ হাজার ৪২৫ জন করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে। আগের সপ্তাহের (১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি) তুলনায় ১৮০.৮ শতাংশ বেড়েছে শনাক্তের পরিমাণ। আবার ১০ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত যে পরিমাণ করোনা শনাক্ত হয়েছে তা এর আগের সপ্তাহ (৩ থেকে ৯ জানুয়ারি) ২৩১.৯ শতাংশ বেশি শনাক্ত ছিল বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সারা দেশে করোনা সংক্রমণ বেশি হলেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা খুবই কম। বাইরে চলাচলকারী মানুষের বেশির ভাগই মাস্ক ব্যবহার করে না। মাস্ক যারা ব্যবহার করে না এর মধ্যে যেমন উল্লেখযোগ্য হারে তরুণ-যুবক রয়েছে একই সাথে ঝুঁকিপুর্ণ জনগোষ্ঠী বয়স্কদের বিশাল অংশ রয়েছে। সরকারি তরফ থেকে মাস্ক ব্যবহারের ওপর জোর দেয়া হলেও মাস্ক বাধ্যতামূলক পরার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দৃষ্টান্ত খুবই কম। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটকে রাস্তায় পথচারীদের থামিয়ে জরিমানা করতেও দেখা গেছে।
গতকাল সকাল পর্যন্ত সারা দেশে যে ১৪ হাজার ৮২৮ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা শহরেই শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ৪২৬ জন। সারা দেশে গতকাল একই সময়ের মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৮০৭টি এবং ঢাকা শহরে পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৯৬৪টি। ঢাকার বিভাগের বাইরে চট্টগ্রাম বিভাগে গতকাল একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৭৮৫ জনে। অন্যান্য বিভাগেও সংক্রমণ বাড়ছে তবে ধীরে ধীরে।
চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ হার ৩৯.৯৬%
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কোনোভাবেই শনাক্তের লাগাম টানা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৪৭৫ নমুনায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আরো ৯৮৯ জন। শনাক্তের হার ৩৯.৯৬ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের এ হার ছিল ৩৮.৬৪ শতাংশ। তবে এ দিন করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৬৭৭ জন নগর ও ৩১২ জন উপজেলার বাসিন্দা। গতকাল চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পাঠানো প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত আক্রান্ত ১ লাখ ১২ হাজার ১১২ জন। মোট মৃত্যু ১ হাজার ৩৪৩ জনের।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা