২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গা সংস্থার ব্রিফিং

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের আদেশ অমান্য করছে মিয়ানমার

-

রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (আইসিজে) অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের আদেশ মিয়ানমার অমান্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে (বিআরওইউকে) সাম্প্রতিক এক ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করে বলেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের নিয়মিতভাবে হয়রানি, নির্বিচার আটক ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা রোহিঙ্গাদের জীবিকা ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সীমিত করে রেখেছে এবং মানবিক সহায়তা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ সব কারণে মুসলিম সংখ্যালঘু এই সম্প্রদায় অনাহারের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। অনেক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ এই অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালাতে চাইছে। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের আটক করে অপরাধীর মতো আচরণ করছে। মিয়ানমারে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গত কয়েক মাসে মংডু এলাকায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে সেনাবাহিনী। এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদে গত আগস্টে অন্তত একজন রোহিঙ্গা মারা গেছে। বিআরওইউকের সংগৃহীত এসব তথ্য-উপাত্ত গণহত্যার ঝুঁকিকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দুই বছর আগে মিয়ানমারকে নির্দেশ দিয়েছিল আইসিজে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড আজো অব্যাহত রয়েছে। অর্থাৎ মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আইসিজের অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের আদেশ অমান্য করছে।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিং অং এবং সামরিক বাহিনীর অন্য নেতৃবৃন্দ অব্যাহতভাবে এবং প্রকাশ্যে রোহিঙ্গাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করে আসছে। তারা রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে এবং মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য তাদের হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। সামরিক জান্তার অধীনে কাজ করা বেসামরিক প্রশাসনকে দেয়া একটি গোপন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব নেই। তারা বাঙালি। এই ইস্যুতে সাহসের সাথে কথা বলতে হবে।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের পর জান্তা সরকার মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে একযোগে নৃশংসতা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নৃশংসতার বিচারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা জান্তা সরকারকে আরো সাহসী করে তুলেছে। দুঃখজনকভাবে আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশ প্রতিপালনে মিয়ানমারের নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলো জনসমক্ষে যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ নেই। আইসিজের আদেশের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে এটি গুরুতর বাধার সৃষ্টি করেছে, যা রোহিঙ্গাসহ নিজ দেশের মানুষের ওপর সম্পূর্ণ দায়মুক্তি নিয়ে নৃশংসতা চালাতে জান্তা সরকারকে উৎসাহিত করছে।
অন্তর্বর্তী আদেশ প্রতিপালনে মিয়ানমারের নেয়া পদক্ষেপগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করার বিধান রাখার জন্য আইসিজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিআরওইউকে।
ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গাম্বিয়া জাতিসঙ্ঘের গণহত্যার সনদ ভঙের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আইসিজেতে মামলা করে। গাম্বিয়ার অভিযোগ, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে, যার প্রক্রিয়া আজো অব্যাহত রয়েছে। একই বছর ডিসেম্বরে প্রাথমিক শুনানির পর আইসিজে পরবর্তী মাসে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপের আদেশ দেন। এতে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-নির্যাতন বন্ধ, তাদের বাস্তুচ্যুতি রোধ এবং গণহত্যার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আলামতগুলো সংরক্ষণ করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। এই আদেশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা চার মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে। এরপর অভিযোগের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারকে ছয় মাস অন্তর প্রতিবেদন দিতে হবে। একই সাথে গাম্বিয়াকে এ সব প্রতিবেদন সরবরাহ করতে হবে, যাতে দেশটি তাদের মতামত দিতে পারে। তবে এসব প্রতিবেদন বা মতামত জনসমক্ষে প্রকাশ করা যাবে না।
আইসিজেতে বিচারের পরবর্তী শুনানি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। এবার আইসিজের এখতিয়ারসহ অন্যান্য ইস্যুতে মিয়ানমারের তোলা অভিযোগের ওপর শুনানি হবে। এর পরের শুনানিতে গণহত্যার অভিযোগের বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল