১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উত্তরাঞ্চলের কয়েক জেলায় শৈত্যপ্রবাহ

মধ্যাঞ্চলেও ঠাণ্ডা হাওয়া
শীতে কাবু মানবকুলের মতো প্রাণিকুল। দুটি চিল গাছের ডালে পাখা উঁচিয়ে শরীরে রোদ লাগানোর চেষ্টা করছে। ছবিটি গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা : নাসিম সিকদার -

দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় বিরাজ করছে অতি ঠাণ্ডা আবহাওয়া। হঠাৎ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে এই হাড়ে কাঁপন ধরিয়ে দেয়া বাতাস আসছে। এ সময় উপরের আকাশে বয়ে চলে জেট স্ট্রিম নামের অতি ঠাণ্ডা বাতাস। এই বাতাসের গতি বিমানের গতির কাছাকাছি থাকায় এটাকে জেট স্ট্রিম বলে। এই জেট স্ট্রিম বাতাস আকাশের কিছুটা নিচ দিয়েই বয়ে চলেছে। ফলে হঠাৎ করে ঠাণ্ডা বেড়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ ও কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এবং এর আগের দিন বুধবার এই দুই দিন ধরে মৃদু ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ শুক্রবারও উল্লেখিত অঞ্চলের কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহ থাকবে, তবে কোনো কোনো এলাকা থেকে প্রশমিত হওয়ারও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে উল্লেখিত অঞ্চলের বাইরের আবহাওয়ায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে। দেশের মধ্যাঞ্চল ও অন্যান্য অঞ্চলের তাপমাত্রা কমে গেছে।
গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর বিভাগে দেশের শীতলতম স্থানগুলোর মধ্যে তেঁতুলিয়া অন্যতম। সেখানকার তাপমাত্রাও গতকাল সামান্য বেশি ছিল রাজশাহী থেকে। তা সত্ত্বেও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে হার কাঁপানো শীত চলছে বলে সেখানকার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন। গতকাল তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আশপাশের এলাকার তাপমাত্রা এর কাছাকাছি ছিল। গতকাল শীতের মধ্যেও বাতাসের সামান্য উচ্চগতি শীতের মাত্রাকে কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশে ছয় থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে গেছে সারা দিনই। শীতের এই সময়ে ১২ কিলোমিটারে বেগে প্রবাহিত বাতাসও ঠাণ্ডা বানিয়ে দিতে যথেষ্ট। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকাতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৪.৪ ও ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ দিকে আজ রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। একই সাথে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশাও পড়বে। কুয়াশা সূর্যালোককে কিছুটা বাধাগ্রস্ত করবে। ফলে সকালে শীতের মাত্রা বেশি অনুভূত হতে পারে।
নীলফামারীতে কাবু জনজীবন
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, মাঘের তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে নীলফামারীর জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতের সাথে হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে উত্তরের এই জনপদে। কুয়াশা না থাকলেও গতকাল মেঘলা আকাশের কারণে দিনভর সূর্যের দেখা মেলেনি এই জেলায়। তীব্র শীত আর শীতল বাতাসের কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ। এর পরেও কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে তাদেরকে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে। অনেকে শীতবস্ত্রের অভাবে বাড়িতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। হিমেল বাতাসের কারণে গবাদিপশুকেও দিনভর ঘরের ভেতরে রাখতে হচ্ছে। এ দিকে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


আরো সংবাদ



premium cement