বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ কমেছে

চলমান করোনা মহামারীতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একই সাথে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত শনিবার থেকে রোববার ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ২৩ লাখ ৫৩ হাজারে।
এ সময়ে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তবে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে পোল্যান্ড, ব্রিটেন, ইতালি, ফ্রান্স ও ব্রাজিল। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩২ কোটি ৬৫ লাখের ঘর। অন্য দিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ লাখ ৫৩ হাজার।
রোববার সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিগত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন পাঁচ হাজার ৬০৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় দুই হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৩ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪১১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে আট লাখের বেশি। এতে মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৬৫ লাখ ৮৭ হাজার ১১০ জনে।
বিগত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন চার লাখ দুই হাজার ৭৩৫ জন এবং মারা গেছেন ৮৮২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ছয় কোটি ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৮৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং আট লাখ ৭৩ হাজার ১৪৫ জন মারা গেছেন।
রাশিয়ায় বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭২৩ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৭ হাজার ১৭৯ জন। এ ছাড়া মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি সাত লাখ ৭৪ হাজার ৩০৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ ২০ হাজার ৬৩৪ জনের।
এ সময়ে ব্রিটেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৭১৩ জন এবং মারা গেছেন ২৮৭ জন। মহামারীর শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৫১ লাখ ৪৭ হাজার ১২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং এক লাখ ৫১ হাজার ৮৯৯ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৮০ হাজার ৪২৬ জন এবং মারা গেছেন ২৩৯ জন।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ২৪ হাজার ৫৮০ জন এবং মারা গেছেন ১৪৮ জন। মহামারীর শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৩৮ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং এক লাখ ২৬ হাজার ৮৬৯ জন মারা গেছেন। একই সময়ে কলম্বিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৭৫ জন এবং মারা গেছেন ১২৯ জন।
জার্মানিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ৯১৬ জন এবং মারা গেছেন ১৪৪ জন। করোনা মহামারীর শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭৯ লাখ ৪৬ হাজার ১৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং এক লাখ ১৬ হাজার ২৪২ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৫৬৯ জন এবং মারা গেছেন ১২৭ জন।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে মারা গেছেন ১৬০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৫২০ জন। অপর দিকে মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৭২৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ ২১ হাজার সাতজনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারীর শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত তিন কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬১ জন এবং মারা গেছেন চার লাখ ৮৬ হাজার ৯৪ জন।
এ ছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিগত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে ১৭৭ জন, পোল্যান্ডে ৪২৯ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৬১ জন, ফিলিপাইনে ৪৩ জন, কানাডায় ১৪৬ জন এবং ভিয়েতনামে ১৩৯ জন মারা গেছেন। অন্য দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ১৯৫ জন। মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ এক হাজার ১০৭ জনের।
ওমিক্রনের বিরুদ্ধে স্পুটনিক ভ্যাকসিন কার্যকর : করোনাভাইরাস ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাকসিন ভালো কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে। স্পুটনিক ভ্যাকসিনের টুইটার অ্যাকাউন্টের বরাত দিয়ে রাশিয়ার ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ শনিবার এ কথা বলেন। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দিমিত্রিয়েভ বলেন, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে ভ্যাকসিন বর্তমান এবং ভবিষ্যতের মিউটেশনের বিরুদ্ধে কাজ করবে। সে ক্ষেত্রে স্পুটনিক বেশ ভালো কাজ করছে। তিনি বলেন, বুস্টার ডোজ হিসেবে স্পুটনিক লাইটের পাশাপশি বিদ্যমান ভ্যাকসিনগুলোর সংমিশ্রণ করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অত্যন্ত কার্যকর।