২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নভেম্বরে সড়কে ঝরেছে ৫৪ শিক্ষার্থীসহ ৪১৩ জনের প্রাণ

-

সারা দেশে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে গত নভেম্বর মাসে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪১৩ জন। তাদের মধ্যে নারী ৬৭ জন, শিশু ৫৮ জন। আহত হয়েছেন ৫৩২ জন। এ মাসে ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি। গত অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে দুর্ঘটনা বেড়েছে। অক্টোবর মাসে ৩৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত হন, যাতে গড়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটেছিল ১১ দশমিক ১৬টি এবং নিহত ১৩ দশমিক ১২ জন। নভেম্বর মাসে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ৪১৩ জন। গড়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটে ১২ দশমিক ৬৩টি এবং নিহত ১৩ দশমিক ৭৬ জন। এই হিসাবে অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
গতকাল শনিবার সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৮৪ জন, যা মোট মৃত্যুর ৪৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৯৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন। এ ছাড়া এ সময়ে সাতটি নৌ-দুর্ঘটনায় নয়জন নিহত এবং পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছেন। ১১টি রেল দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনাগুলোতে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটে। ঢাকা বিভাগে ৮৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০৪ জন। সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগে, ২২টি দুর্ঘটনায় নিহত ২৪ জন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটে। এ জেলায় ২১টি দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন। আর সবচেয়ে কম লালমনিরহাট জেলায়। সেখানে দু’টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হননি। এ ছাড়া রাজধানীতে ১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৬টি (৪১ দশমিক ১৬ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৩১টি (৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৫৩টি (১৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৩৫টি (৯ দশমিক ২৩ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে চারটি (১ দশমিক ০৫ শতাংশ) সংঘটিত হয়।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৮৪ জন (৪৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ), বাসযাত্রী ২৩ জন (৫ দশমিক ৫৬ শত্যাংশ, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি যাত্রী ১২ জন (২ দশমিক ৯০ শতাংশ), ইক্রোবাস- প্রাইভেট কার- অ্যাম্বুলেন্স-জিপ যাত্রী ৯ জন (২ দশমিক ১৭ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-মিশুক-টেম্পো-লেগুনা) ৬৬ জন (১৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-বোরাক-মাহিন্দ্র-টমটম) ১৭ জন (৪ দশমিক ১১ শতাংশ) এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-বাইসাইকেল আরোহী ছয়জন (১ দশমিক ৪৫ শতাংশ) নিহত হন।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ সক্ষমতার ঘাটতি; গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
সংগঠনটি দুর্ঘটনারোধে কিছু সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলোÑ দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্বরাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ৫৪ শিক্ষার্থী : গত নভেম্বর মাসে সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ৫৪ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া মোট হিসেবে দেশে গত এক মাসে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪১৩ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৩২ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৭ জন এবং শিশু ৫৮ জন। এসব দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ২ জনসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫৪ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সংগঠনটি সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ১৫৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৮৪ জন। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯৬ জন পথচারী। আর যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন। এছাড়া এ সময়ে ৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ঢাকা বিভাগে ৮৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১০৪ জন। সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগে, ২২টি দুর্ঘটনায় নিহত ২৪ জন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ জেলায় ২১টি দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছেন। আর সবচেয়ে কম লালমনিরহাট জেলায়। সেখানে ২টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় ১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬ জন। গত অক্টোবর মাসে ৩৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত হয়েছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement