২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পরিস্থিতি খারাপ হলে ফের বন্ধ হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু
-

সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্র্থী। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও সংক্ষিপ্ত সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ পরীক্ষা।
এ দিকে কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেছেন, বর্তমানে করোনার নতুন ধরন যেভাবে প্রভাব বিস্তার করছে তাতে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে। তিনি বলেছেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে আবারো বন্ধ রাখা হবে। গতকাল প্রথম দিনে রাজধানীর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তবে এখনো আমাদের এ-জাতীয় কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা চাই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু থাকুক। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি সতর্ক থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা লাগবে না। তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। টেকনিক্যাল কমিটির সাথে আলোচনাও চলছে। বিজ্ঞানের বাইরে গিয়ে তো কিছু করতে পারব না।
এ দিকে গতকাল সকাল ১০টা থেকে সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে দেড় ঘণ্টায় হচ্ছে এবারের পরীক্ষা। এ বছর ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। সকাল-বিকেল দুই শিফটে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বতসোয়ানা, ইসরাইল, হংকং, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও ভারতেও এ ধরনের সন্ধান মিলেছে। এটি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনার এ ধরনটিকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছে।
আগামী এসএসসি ও এইচএসসি পেছাচ্ছে : এ দিকে ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি। কেন্দ্র পরিদর্শনকালে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার তারিখ বলা সম্ভব না। এ বছর যেভাবে নভেম্বর-ডিসেম্বরে এই পরীক্ষা হলো, আশা করছি আমরা করোনা মোকাবেলা যেভাবে করতে পেরেছি তাতে আগামী বছর এত সময় লাগবে না। তার অনেক আগে হয়তো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বছরের প্রথম ভাগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না। নেয়া হলে হয়তো মাঝামাঝি বা তার পরে হতে পারে। আমরা যদিও সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করেছি তার পরও শিক্ষার্থীরা যতদূর সম্ভব যেনো ক্লাস করতে পারে। তাই আশা করছি, পরবর্তী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা চলতি বছরের মতো এত দেরিতে হবে না।
অন্য শ্রেণীর ক্লাসের সংখ্যাও বাড়ছে না : শিক্ষামন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণী ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না। বর্তমানে করোনার নতুন ধরনের কারণে আগের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম নতুন বছরের শুরু থেকেই ক্লাসের সংখ্যা বাড়াতে। তবে ওমিক্রনের প্রভাবে টেকনিক্যাল কমিটি ক্লাস সংখ্যা না বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন। সেটির ভিত্তিতে এখনই ক্লাস সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়নি।
সহজ প্রশ্নে ভালো পরীক্ষা : গতকাল প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্র থেকে বের হয়ে অনেক শিক্ষার্থী জানালেন তাদের ভালো পরীক্ষা দেয়ার কথা। অনেকেরই অভিব্যক্তি ছিল পরীক্ষা যথেষ্ট ভালো হয়েছে। এবার প্রশ্ন ছিল সহজ। নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা শেষ করতে পেরে ভালোই লাগছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী সারা জাহান মৌ জানান, আমি পরীক্ষার হলে কিছুটা নার্ভাস হয়ে গেছি। এ কারণে সব দিয়ে আসতে পারিনি। তবে প্রশ্ন সহজ হয়েছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তাহসিন প্রীতি বলে, পরীক্ষার জন্য তেমন সময় পাইনি। সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে। একটির সাথে আরেকটির সম্পর্ক ছিল। তাই সংক্ষিপ্ত সময়ে প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে প্রশ্ন ছিল সহজ। পরীক্ষাও ভালো হয়েছে।
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বোর্ডের অধীনে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা ও শেরপুর জেলার ৮৭টি কেন্দ্রে ২৮১টি প্রতিষ্ঠানের ৭০ হাজার ৯৪১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। এদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬৩০ জন ছাত্র ও ৩৬ হাজার ৩১১ জন ছাত্রী। ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. গাজী হাসান কামাল গতকাল কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।
জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার আট হাজার ২৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৫ জন, জামালপুর জেলায় দুই হাজার ৫৮৫ জনের মধ্যে ৫৫ জন, শেরপুর জেলায় এক হাজার ৬৩৪ জনের মধ্যে ৪১ জন এবং নেত্রকোনা জেলায় ৮৮৭ জনের মধ্যে ২০ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। প্রথম দিনের পরীক্ষায় কেউ বহিষ্কার হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement