১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউক্রেন নিয়ে পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি রাশিয়া-ন্যাটোর

পশ্চিমের সাথে মস্কোর তিক্ত সম্পর্ক কিয়েভ নিয়ে
-

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যেকোনো নতুন সামরিক আগ্রাসনের জন্য মস্কোকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার বিপুল সৈন্য সমাবেশের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য নিয়ে পশ্চিমা সামরিক জোটটির বৈঠকের মধ্যেই মঙ্গলবার তারা এ সতর্কবার্তা দেয়। এ বার্তার প্রতিক্রিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটো যদি মস্কোতে কয়েক মিনিটের মধ্যে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে বসায় তাহলে রাশিয়াও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। রয়টার্স।
সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেন এখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ন্যাটোতে ঢুকতে আগ্রহী; সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবেশী এ দেশটিকে নিয়ে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমাদের সম্পর্ক স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে গেছে। সাংবাদিকদের ন্যাটো মহাসচিব জেনারেল জেনস স্টল্টেনবার্গ বলেছেন, ‘ইউক্রেন রাষ্ট্রের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে রাশিয়া যদি ফের একবার শক্তির প্রয়োগ ঘটায়, তাহলে এর জন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।’ একই সুরে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও।
তিনি বলেন, ‘উত্তেজনা বাড়াবে রাশিয়ার এমন যে কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গভীর উদ্বেগের হবে, আর নতুন করে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।’ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। রাশিয়া, ইউক্রেন ও ন্যাটো সবাই সামরিক মহড়া করেছে এবং কারা মূল আগ্রাসনকারী তা নিয়ে একে অপরকে দোষারোপও করে চলেছে। পুতিন এ প্রসঙ্গে আগের চেয়েও কড়া বক্তব্যে ইউক্রেন নিয়ে মস্কোর ‘লাল দাগের’ সীমা উল্লেখ করে বলেছেন, ন্যাটো যদি প্রতিবেশী দেশের মাটিতে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা মোতায়েন করে তাহলে বাধ্য হয়ে রাশিয়াকে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘হামলা চালাতে সক্ষম এমন ব্যবস্থাপনা ইউক্রেনের ভূখণ্ডে থাকলে ক্ষেপণাস্ত্রের মস্কোতে উড়ে আসতে ৭ থেকে ১০ মিনিট লাগবে, আর যদি হাইপারসোনিক অস্ত্র মোতায়েন করা হয় তাহলে লাগবে ৫ মিনিটি। ব্যাপারটি কেবল কল্পনা করে দেখুন। রুশ হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের সাম্প্রতিক পরীক্ষার দিকে ইঙ্গিত করে পুতিন বলেন, ‘এরকম পরিস্থিতিতে আমরা কী করব? যারা আমাদের এভাবে হুমকি দেবে তাদের জন্য আমাদেরও তখন একই ধরনের কিছু একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। আর আমরা সেটা এখনই পারি।’
রুশ প্রেসিডেন্ট জানান, তাদের হাইপারসোনিক অস্ত্রটি শব্দের ৯ গুণ গতিতে উড়ে গিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম। রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকি নিয়ে লাটভিয়ার রাজধানী রিগাতে মঙ্গলবার থেকে ন্যাটোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দুই দিনের বৈঠক শুরু হয়ে গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে। এ বৈঠকে ব্লিনকেন জোটের অপর ২৯ দেশকে রাশিয়ার পদক্ষেপ নিয়ে ওয়াশিংটনের গোয়েন্দা মূল্যায়ন অবহিত করেছেন। এ দিকে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মাইহল রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতচেষ্টার অভিযোগ এনেছেন। ক্রেমলিন এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও অভ্যুত্থানের চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন; এর জন্য একদল রুশ ও ইউক্রেনের নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও সরাসরি মস্কোকে দোষারোপ করেননি তিনি। স্মাইহল বলেছেন, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরো অস্ত্র চাইতে পারে। কিয়েভের এমন পদক্ষেপের ব্যাপারেই পুতিন সুনির্দিষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়ার দখল নেয়, তারা দেশটির উত্তরে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীদেরও সহযোগিতা করে আসছে।
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে সঙ্ঘাত এরই মধ্যে ১৪ হাজারের মতো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ। মে মাসে রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখের মতো সৈন্য মোতায়েন করে; ক্রিমিয়া দখলের পর ইউক্রেন সীমান্তে আর একসাথে এত রুশ সেনা দেখা যায়নি বলে জানান পশ্চিমা কর্মকর্তারা। সীমান্তের কাছে এখনো ৯০ হাজারের বেশি রুশ সেনা অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। এই সৈন্য সমাবেশকে ইউক্রেন দেখছে হামলার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে; যে ধারণাকে উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো।
তারা বলছে, তারা কাউকে হুমকি দেয় না এবং নিজেদের ভূখণ্ডে যখন খুশি সেনা মোতায়েন অধিকার তাদের রয়েছে। এ সৈন্য সমাবেশ নিয়ে ন্যাটোর মতো জার্মানি ও ব্রিটেনও রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন, ‘রাশিয়ার ক্ষতিকর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সাথীদের পাশে দাঁড়াবো আমরা।’ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস বলেছেন, ‘ইউক্রেনের প্রতি ন্যাটোর সমর্থন অব্যাহত থাকবে। কোনো ধরনের আগ্রাসন হলে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরের গণপিটুনিতে নিহত ২ নির্মাণশ্রমিক জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনি সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান

সকল