হুমকির মুখে খালেদা জিয়ার জীবন : ফখরুল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৮ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে জানিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশনেত্রীর পরিপাকতন্ত্রের ‘রক্তক্ষরণ’ বন্ধে তাকে বিদেশে নেয়া অতি জরুরি। গতকাল শনিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুখটা হচ্ছে প্রধানত তার পরিপাকতন্ত্রে। তার (খালেদা জিয়া) অনেক অসুখ। এখন পরিপাকতন্ত্র থেকে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সেই রক্তক্ষরণকে বন্ধ করাটা আসল কাজ। যা তার জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এখন ঠিক কোন জায়গায় তার রক্তপাত হচ্ছে এটাকে বের করার জন্য আমাদের ডাক্তাররা বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ডাক্তার তারা, গত কয়েক দিন ধরে তারা বিভিন্ন রকম কাজ করছেন। কিন্তু একটা জায়গায় এসে তারা এগোতে পারছেন না। কারণ সেই ধরনের কোনো টেকনোলজি বাংলাদেশে নাই, টেকনোলজি দিয়ে তারা সঠিক জায়গায় পৌঁছতে পারেন। যে কারণে ডাক্তারা বার বার বলছেন তাকে (খালেদা জিয়া) একটা অ্যাডভান্স সেন্টারে নেয়া দরকার, যেখানে এই ডিভাইসগুলো আছে, এই টেকনোলজিগুলো আছে, সেই যন্ত্রপাতিগুলো আছে, যেখানে গেলে তার যে সঠিক রোগের জায়গাটা তারা ধরতে পারেন।
সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে নব্বইয়ের ডাকসু ও ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ডা: শামসুল আলম মিলনের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর স্বৈরাচার এইচ এম এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: শামসুল আলম। তার স্মরণে গতকাল সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে ডা: মিলনের সমাধিস্থলে এবং টিএসসি সংলগ্ন মিলন চত্বরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন ৯০-এর ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের নেতৃত্বে ওই সময়ের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ। পরে দুপুরে আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ফজলুল হক মিলনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাবেক ছাত্র নেতা শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদ, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, খন্দকার লুতফর রহমান, সাইফুদ্দিন মনি, আসাদুর রহমান খান আসাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম আলিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যে, আমাদের দেশে যারা সরকারি দলের রাজনীতি করছেন তাদের ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার তো নেই, তাদের মানবিক বোধও নেই। আর নিজের সম্পর্কে তাদের এত বেশি দাম্ভিকতা যে তারা যেকোনো ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে কটূক্তি করতে এতটুকু দ্বিধা করেন না। তারা একবারও মনে করেন না যে, বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন সেই মহিয়সী নারী, যিনি ১৯৭১ সালে তার স্বামী যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন তার শিশু পুত্রকে হাতে ধরে তিনি পালিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন এবং সেখানে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে ক্যান্টনমেন্টের কারাগারে ছিলেন। অর্থাৎ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। পরিবর্তিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন গৃহবধূ থেকে খালেদা জিয়া রাজনীতিতে যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, সবকিছু ভুলে যায় তারা। ১/১১ তে যখন শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলেন তখন এই বেগম খালেদা জিয়া তার মুক্তির জন্য বিবৃতি দিয়েছিলেন। গণতন্ত্রের বিশ্বাস করা এমন একজন নেত্রীকে আজকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক। সব শ্রেণীর মানুষকে, সব পেশার মানুষকে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ আমি আগেই বলেছি, স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদ এক নয়। এই ফ্যাসিবাদ আরো ভয়ঙ্কর। ইতোমধ্যে আমাদের সব অর্জন তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা স্বাধীনতার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, যে আশা-আকাক্সক্ষা ছিল তা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে, আমাদের নতুন প্রজন্মের যে সম্ভাবনা আছে তাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। আসুন গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য এবং বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।
দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠায় ডা: মিলনের আত্মত্যাগ থেকে সবাইকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে যদি জনমত জরিপ করেন দেখবেন শতকরা ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ মানুষ এর পক্ষে। আওয়ামী লীগের অনেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর পক্ষে, অনেক মন্ত্রীর সাথে আলাপ করেন দেখবেন তারা বলবেন, তাকে যেতে দেয়া হোক। বিপক্ষে শুধু একজন ...।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা