২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিবর্ণ বাংলাদেশ

-

আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেট খেলা হচ্ছে দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে। বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ ও দ্বিপক্ষীয় সিরিজ মিলে ইংল্যান্ড ছাড়া টেস্ট খেলুড়ে সব দলের বিপক্ষেই টি-২০ খেলেছে বাংলাদেশ। উন্নাসিক ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) সে সুযোগও রাখেনি। বিশ্বকাপের আগে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজ খেলার স্লট ছিল। আইপিএলের কারণে সে সিরিজটিও পিছিয়ে গেছে ২০২৩ সালে। যারা এত দিন এড়িয়ে গেছে, সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের টি-২০ অভিষেক হয়েছে বিশ্বকাপ মঞ্চে। ভাগ্যই বাংলাদেশকে নিয়ে এসেছে ইংল্যান্ডের গ্রুপে। অথচ তাদের বিপক্ষে পাত্তাই পেল না লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
পাকিস্তানকে অবহেলা করায় ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে প্রতিজ্ঞা করে এসেছিল দেশ থেকে, সেটির শতভাগ জবাব দিয়েছে। বাংলাদেশ সেখানে পারেনি ইংল্যান্ডের অহঙ্কারের জবাব দিতে। বরং হয়েছে উল্টো, কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রান করে বাংলাদেশ। সেখানে ১৪.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১২৬ করে ৮ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় ইংলিশরা। টি-২০তে ইংল্যান্ড বাংলাদেশের ১৯তম প্রতিপক্ষ। এ বিশ্বকাপেই পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে প্রথমবার খেলেছে বাংলাদেশ, তারা ছিল ১৮তম প্রতিপক্ষ।
যে ইংল্যান্ড আগের ম্যাচে ৫৫ রানে অলআউট করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের কাছে বাংলাদেশের এমন হার স্বাভাবিক হওয়ার কথা। জেতার জন্য সে অদম্য বাসনা সেটিই ছিল না বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্বল্পপুঁজি নিয়ে লড়াই করা যায় না। ১৮ বলে ১৮ করা জস বাটলারের যে একটা উইকেট পড়ল তা পেলেন নাসুম আহমেদ। প্রথম ১০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ৯০ রান। ১২.৫ ওভারে ৩৮ বলে পাঁচটি চার ও তিনটি ছয়ে ৬১ রান করা জেসন রয়কে ফেরান শরিফুল্লাহ। ২৮ রানে অপরাজিত থাকা ডেভিড মালান ও ৮ রানে অপরাজিত থাকা বেয়ারস্টো দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়ে। একটি করে উইকেট নেন নাসুম ও শরিফুল্লাহ। আরো একবার আমিরাত প্রবাসীসহ সারা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের হতাশ করলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা!
এর আগে প্রথমবারের মতো ইংলিশদের বিপক্ষে টি-২০ খেলতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধাস্ত নিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুুদুল্লাহ রিয়াদ। লিটন দাস শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত। মঈন আলীর করা প্রথম ওভারে টানা দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন। এটা ফর্মে ফেরার যেন ঘোষণা। পাওয়ার প্লেতে প্রথম ছয় ওভারে দু’জন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকেন। লিটন (৯) এই দুইজনের একজনের হাতে তুলে দেয়াটা যেন নিয়ম বানিয়ে ফেলেছেন। গতকালও এর ব্যত্যয় হলো না। পরের বলেই আরেক ওপেনার নাঈম শেখ (৫) তো ক্যাচ তুলে দিলেন ত্রিশ গজ বৃত্তের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতেই। মঈন আলী এক ওভারেই ফেরান দুই ওপেনারকে। ফের ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বের হতে ব্যর্থ হয় উদ্বোধনী জুটি। দ্রুতই ফেরেন সাকিবও (৪)। তার টাইমিংটা ঠিকঠাক হয়নি সত্যি। কিন্তু আউট হওয়ার পেছনে আদিল রশিদের দুর্দান্ত ক্যাচের কৃতিত্বটাই বেশি। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হওয়ার আফিফ হোসেন ধ্রুবর। নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহানো অধিনায়ক রিয়াদের কারণেই ধ্রুবকে ফিরতে হলো। যেখানে এক রানও হয় না, সেখানে দুই রানের কল দিলেন। পরে নিজে থেমেও গেলেন, তাতে আফিফকে আউট হতে হলো দৃষ্টিকটূভাবে (৫)। সে ক্ষতি পোষাতে পারেননি রিয়াদও। আউট হয়েছেন অসময়ে মারমুখী খেলতে গিয়ে (১৯)। মুশফিক ব্যক্তিগত ৯ রানে একবার জীবন না পেলে চতুর্থ উইকেটে তাদের ৩৭ রান পার্টনারশিপটা আরো আগেই শেষ হয়ে যেত। সে­া উইকেটে মুশফিক হলেন লেগ বিফোর আউট। ৩০ বলে খেলে ২৯ রানেই থামতে হয় মুশফিককে। ‘বিতর্কিত’ রিভার্সসুইপে উইকেট বিলিয়ে আসেন মুশফিক।
৮৩ রানে ৬ উইকেট শেষ! শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদরা কিছুটা লড়াই করেন! মেহেদী ও সোহান সমান ১১ রান করেন। অপরাজিত নাসুমের ব্যাট থেকে আসে ৯ বলে ১৯।
বিস্ময়কর হলেও সত্য ১২০ বলের ইনিংসে ৫১ বলে রান পায়নি বাংলাদেশ!


আরো সংবাদ



premium cement