২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারতকে লজ্জা দিয়ে ইতিহাস পাকিস্তানের

-

‘পাকিস্তান কেন বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জিততে পারে না’ এই বাক্যটি আর শুনতে হবে না পাকিস্তানিদের। বিশ্বে আরো অনেক সিরিজে পাকিস্তানের কাছে ভারত পরাজিত হলেও বিশ্ব আসরে ভারত ছিল দুর্ভেদ্য এক প্রাচীরের নাম। বিশ্বকাপের ১২ ম্যাচের ১২ টিতেই হার পাকিস্তানের। অবশেষে বাবর আজমরা তাই করে দেখালেন যা পারেননি বিশ্বজয় করা ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, শহীদ আফ্রিদি, ইনজামাম, রমিজ রাজা, সাঈদ আনোয়াররা। টি-২০ বিশ্বকাপে চূড়ান্ত পর্বের প্রথম খেলায় ভারতকে কোনো রকম পাত্তা না দিয়ে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করল পাকিস্তান।
ভারতের ছুড়ে দেয়া ১৫২ রানের লক্ষ্য কোনো উইকেট না হারিয়েই পার হয়ে যান পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। হাতে তখনো বাকি ছিল ১৩টি বল অর্থাৎ ২.১ ওভার। ৫৫ বলে সর্বোচ্চ ৭৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন রিজওয়ান। তার ম্যাচজয়ী এ ইনিংসটিতে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। অপর প্রান্তে বাবর আজম ৫২ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তার উইলো থেকে এসেছে ৬টি চার ও ২টি ছক্কার মার। তাতেই ১৭.৫ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। বৃথাই চেষ্টা করেছেন ভারতীয় বোলার জসপ্রিত বুমরাহ, জাদেজা, ভুবনেশ্বর, সামি, বরুনরা।
তিন সংস্করণ মিলিয়ে দুই দলের মুখোমুখি ২০০তম ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের শুরুটা হয় বাজে। পাকিস্তানের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে পারেনি। ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান তুলতে সক্ষম হয় বিরাট কোহলিরা। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শাহিন শাহ আফ্রিদির তোপের মুখে পড়েন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মাকে এলবিডব্লিউ করেন শাহিন আফ্রিদি। কোনো রান না করেই ফিরে যান হিটম্যান। তৃতীয় ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই ফিরিয়ে লোকেশ রাহুলকে বোল্ড করেন আফ্রিদি। ৮ বলে মাত্র ৩ রান করেন তিনি।
এরপর ষষ্ট ওভারে হাসান আলির বলে রিজওয়ানের তালুবন্দী হয়ে ফেরেন সূর্যকুমার যাদব। ১ চার ও ১ ছক্কায় ৮ বলে ১১ রান করে ক্রিজ ছাড়েন তিনি। ৩১ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। দলকে খেলায় ফেরাতে চেষ্টা করেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। চতুর্থ উইকেটে পান্তকে সঙ্গে নিয়ে ৫৩ রানের গড়েন কোহলি। ৩০ বলে ৩৯ রান করে শাদাব খানের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ঋষভ পান্ত।
এরপর একাই হাল ধরেন কোহলি। ৪টি চার ও ১ ছক্কায় ৪৫ বলে ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ভারত অধিনায়ক। ১৮তম ওভারে হাসান আলির বলে নওয়াজের হাতে ধরা পড়েন রবীন্দ্র জাদেজা। ১ বাউন্ডারির সাহায্যে ১৩ বলে ১৩ রান করেন তিনি। দলীয় ১৩৩ রানে শাহিন আফ্রিদির শিকার হন কোহলি। রিজওয়ানের তালুবন্দী হওয়ার আগে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫৯ বলে ৫৭ রান করে ক্রিজ ছাড়েন তিনি। শেষ ওভারে হ্যারিস রউফের বলে বাবরের হাতে ধরা হার্দিক পান্ডিয়া। ২ বাউন্ডারিতে ৮ বলে ১১ রান করেন পান্ডিয়া। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান তুলতে সক্ষম হয় বিরাট কোহলিরা।
কৃতিত্ব দিতে হবে পাকিস্তানের বোলারদের। হাসান আলী, শাহিন আফ্রিদি ও ইমাদ ওয়াসিম মিলে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ভারতকে ৩ উইকেটে ৩৬ রানের বেশি তুলতে দেননি। ১০ ওভার শেষেও ভারতের ওভারপ্রতি রান তোলার গড় ৬ এর ওপরে তুলতে দেননি পাকিস্তানের বোলাররা। পাকিস্তানের হয়ে অসাধারণ বল করেন শাহিন আফ্রিদি। ৩১ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। ৪ ওভারের কোটায় ২.১ ওভার (১৩ বল) দিয়েছেন ‘ডট’। এ ম্যাচে পাকিস্তানের আর কোনো বোলার এত বেশি ডট বল আদায় করতে পারেননি। গোটা ইনিংসে ৩৩ বল (৫.৩ ওভার) ডট খেলেছে ভারত।


আরো সংবাদ



premium cement