২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অসময়ে কিছু কিছু স্থানে ভারী বৃষ্টি

সাগরে আবারো লঘুচাপ
-

অসময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হয়ে গেছে। অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়ে গেছে আরেকটি লঘুচাপ। এই লঘুচাপটি পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় বিরাজ করছে। এর বাইরে পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় আরেকটি স্থল লঘুচাপেরও সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর সৃষ্ট অন্য লঘুচাপটি এখনো ভারতের মধ্যপ্রদেশে বিরাজমান রয়েছে। এই তিন লঘুচাপের প্রভাবে এর আশেপাশে সৃষ্টি হয়েছে উচ্চচাপ এলাকা এবং এই সুযোগে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকা থেকে বাংলাদেশের ভেতরে আসছে প্রচুর জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু। এ কারণেই গতকাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হয়ে গেছে।
এদিকে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল থেকে ইতোমধ্যে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বিদায় নিয়েছে। দেশের অবশিষ্ট অঞ্চল থেকেও মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয়ার অবস্থায় রয়েছে। ঠিক এমন সময়ে ভারী বৃষ্টিপাত একটু অস্বাভাবিকই ঠেকছে আবহাওয়াবিদদের কাছ থেকে। মৌসুমি বায়ুর প্রস্থানের সাথে সাথে এমন ভারী বৃষ্টি সাধারণত হয় না। গতকাল পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় যে নতুন লঘুচাপটি সৃষ্টি হয়েছে এটা হয়তো দীর্ঘায়িত হতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত এই লঘুচাপটি শক্তি জমা করে নি¤œচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে এটার নাম হবে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ।
লঘুচাপের প্রভাবে গতকাল সোমবার রাজধানী ঢাকায় সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। বিকালে ঘণ্টাখানেক সময় বেশ ভারী বৃষ্টিপাত হয়ে গেছে। গতকাল সারা দেশেই একই রকম অবস্থা ছিল। হঠাৎ দীর্ঘ বৃষ্টির জন্য মানুষ প্রস্তুত ছিল না। ঢাকা শহরে যেসব মানুষ রাস্তায় সারাক্ষণ চলাচলের মধ্যে থাকে তারা পড়েছিল বেশ বেকায়দায়। যেমন মটরসাইকেল চালক, রিকশাওয়ালা কিংবা হেঁটে হেঁটে চলাচলকারী শ্রমজীবী মানুষ রেইনকোট কিংবা ছাতা না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজেই চলাচল করেছে। বিকালে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম ব্যাহত হয়। হঠাৎ বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট এবং কোথাও কোথাও জলজট হয়ে পড়ে। যানবাহন কে কার আগে যাবে এই প্রতিযোগিতায় রাস্তায় জট তৈরি করে ফেলে এবং এই যানজট দীর্ঘক্ষণ বিরাজমান থাকে। অন্যদিকে রাজধানীর ড্রেইনগুলো দিয়ে পানি স্বাভাবিক গতিতে নিচে নেমে যেতে পারেনি বলে পানি জমে যায় রাস্তায়।
হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাতের ব্যাপারে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দুইটি লঘুচাপ বিরাজ করছে এই অঞ্চলে। স্থল লঘুচাপের চারপাশে উচ্চ চাপের সৃষ্টি হয়ে থাকে। আবার সাগরে যে লঘুচাপের সৃষ্টি হয় সেখানে সব সময় নিচ থেকে উপরের দিকে বায়ুচাপ উঠে যেতে থাকে। সে কারণে ওই স্থান থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু বাংলাদেশের দিকে এসে মেঘমালা তৈরি করছে এবং সেখান থেকে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
গতকাল সোমবার ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় দ্বীপ জেলা ভোলায় ৬৪ মিলিমিটার। গতকাল সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২১ মিলিমিটার। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে ৩৪ মিলিমিটার, খুলনায় ৩০ মিলিমিটার, রংপুরে ৬ মিলিমিটার বরিশালে ২৮ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ৮মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সিলেট বিভাগীয় শহরে সামান্য এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় শহরে কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। গতকাল চট্টগ্রাম ও তাড়াশ আবহাওয়া কেন্দ্রে সামান্য বৃষ্টিও হয়নি। এই দুইটি আবহাওয়া কেন্দ্র ছাড়া দেশের অন্য সব আবহাওয়া কেন্দ্রেই কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement