২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আন্দোলনের আগে দল গোছানোর দাবি বিএনপি তৃণমূলের

-

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারসহ একগুচ্ছ দাবি নিয়ে এককভাবে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। দলের তৃণমূল নেতাদের মতেÑ আওয়ামী লীগ সরকারকে মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত আন্দোলনের বিকল্প নেই। তবে তার আগে বিএনপি এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে। অর্থাৎ সংগঠন গোছানোর কোনো বিকল্প নেই। সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের সিরিজ বৈঠকে এমন প্রস্তাবনা এসেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের এই অভিন্ন মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে আন্দোলনের পরিকল্পনা প্রণয়নে দফায় দফায় বৈঠক করছেন নীতিনির্ধারকরা। সেইসাথে সমমনা অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্ট নাগরিকদেরকে একই প্ল্যাটফর্মে আনার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। গত ১৪, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর এবং ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর দুই দফায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকমণ্ডলী, নির্বাহী কমিটির সদস্য, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং জেলা সভাপতিদের সাথে পৃথকভাবে ধারাবাহিক মতবিনিময় করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সিরিজ বৈঠকের ধারাবাহিকতায় এবার পেশাজীবী নেতাদের মতামত নেয়া হবে। আগামীকাল বুধবার রাতে পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময় করবেন তারেক রহমান। গতকাল সোমবার রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসন কার্যালয়ে ঢাকা বারের আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন তারেক রহমান। এসময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বৈঠকগুলোয় অনুপস্থিত ছিলেন এমন দেড় শতাধিক নেতাকে গত শুক্রবার চিঠি দিয়ে অনুপস্থিত থাকার ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে সাত দিনের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিএনপির সিরিজ বৈঠকগুলোয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছয় শতাধিক নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বেশ কিছু নেতা অংশ নেননি। ফলে তাদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব স্বাক্ষরিত চিঠি সংশ্লিষ্টদের নামে ইস্যু করা হয়েছে। অনেকেই চিঠি পেয়ে ব্যাখ্যা পাঠানো শুরু করেছেন। জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (দফতরের চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত) সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স নয়া দিগন্তকে বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে সিরিজ বৈঠকে আমাদের অনেক নেতা উপস্থিত থাকতে পারেননি। ফলে দেড়শতাধিক নেতার কাছে অনুপস্থিত থাকার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। অনেকেই তাদের চিঠির জবাব দিয়েছেন। হয়তো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সবাই জবাব দিবেন।
গত ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ধারাবাহিক মতবিনিময় শুরু করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সেসব বৈঠকে উপস্থিত দলের অধিকাংশ নেতা একক এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বৈঠকে অংশ নেয়া কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতি ও অন্যান্য ইস্যুতে মতামত দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, জোটবদ্ধ আন্দোলন করা যাবে না। কেউ বলেছেন, জোটবদ্ধ আন্দোলন করলেও বিএনপির হাতেই রাখতে হবে আন্দোলনের চাবিকাঠি। আর আন্দোলন সংগ্রামের আগেই অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। তা না হলে আন্দোলন সফল হবে না। তারা বলেন, বৈঠকে যেসব নেতা বক্তব্য দিয়েছেন সেসব বক্তব্য তারেক রহমান মনোযোগ সহকারে শোনেন। বৈঠকের শেষে তিনি কিছু নির্দেশনা দেন।
এরপর গত ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা সভাপতিদের মধ্যে ৩৬৩ জন নেতাকে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের মধ্যে আড়াই শতাধিক উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি নির্বাহী কমিটির কয়েকজন সদস্য ও একাধিক জেলা সভাপতি নয়া দিগন্তকে বলেন, তারা তারেক রহমানের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনি যেভাবে দল গোছানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তা ভালো এবং নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু যাদেরকে বিশ^াস করে সাংগঠনিক টিমের দায়িত্ব দিয়েছেন তারা তো রীতিমতো ব্যবসায় নেমেছে। দলের কমিটি দেয়ার নামে টাকার লেনদেন করছে। অনেক এলাকায় যোগ্য ও দক্ষদের বাদ দিয়ে নতুন কাউকে কমিটিতে পদ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে অঙ্গসংগঠনগুলোর ইউনিট কমিটি গঠনে এই ঘটনা বেশি ঘটছে। এতে করে তৃণমূলের নেতারা ভীষণ ক্ষুব্ধ। শুধু তাই নয়, বিএনপি তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সরকারের হামলা মামলায় জর্জরিত। তৃণমূলে জনপ্রতি সর্বনি¤œ তিনটি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দুই শতাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় অ্যাফিডেভিট করাতে গেলে আমাদের দলীয় আইনজীবীরা অতিরিক্ত টাকা নেন। যেখানে সাধারণ পেশাদার কোনো আইনজীবীর কাছে গেলে একই কাজে দুই হাজার টাকার মধ্যেই কাজ করেন, সেখানে আমাদের দলীয় আইনজীবীরা সেই কাজে নেন চার থেকে ছয় হাজার টাকা। এভাবে চললে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কী অবস্থা হয় সেটা আপনি নিশ্চয়ই অবগত। সুতরাং আমরা এই সমন্বয়হীনতার একটি সুরাহা ও গাইডলাইন চাই।’
উপস্থিত ওই সব নেতা জানান, তারেক রহমান তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন। তিনি সব অভিযোগ এবং পরামর্শ নোট করেন। পর্যায়ক্রমে অনেকের বক্তব্য শোনে সবার শেষে কিছু দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান। তবে সেসব বিষয়ে কোনো নেতা কথা বলতে রাজি হননি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গুলশান দলীয় কার্যালয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি ও বিষয়ভিত্তিক কমিটির আহবায়ক এবং সদস্য সচিবদের সভা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করবেন স্থায়ী কমিটি সদস্য ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এছাড়া ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় পেশাজীবী নেতাদের সাথে তারেক রহমান মতবিনিময় করবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত

সকল