২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টিকা পাননি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ৩৭ লাখ শিক্ষার্থী

ঝুঁকি নিয়েই খুলবে সব বিশ্ববিদ্যালয়
টিকা পাননি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ৩৭ লাখ শিক্ষার্থী -

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৩৭ লাখ শিক্ষার্থীর করোনার টিকা প্রাপ্তি এখনো নিশ্চিত হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই খুলতে হবে সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিকা প্রাপ্তি কিংবা রেজিস্ট্রেশনে পিছিয়ে রয়েছেন। দেশের সরকারি বেসরকারি মিলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪৩ লাখ। এর মধ্যে মাত্র পৌনে ছয় লাখ শিক্ষার্থীর টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হলেও ৩৭ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতার বাইরে রেখে ঝুঁকি নিয়েই খুলতে হবে সব বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, পাবলিক প্রাইভেট মিলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ৪৩ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে সাড়ে চার লাখ ছাত্রছাত্রী এক ডোজ আর এক লাখ ২২ হাজার উভয় ডোজ টিকা নিয়েছেন। আবার মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে সাড়ে ১৮ লাখ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তারা এখনো টিকার নিশ্চয়তা বার্তা পাননি। অবশ্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী এক লাখ ৩২ হাজার। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া ৪৩ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ লাখেরই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই। আর জন্ম নিবন্ধন সনদ (বিআরসি) নেই অন্তত তিন লাখের। এনআইডি না থাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ওয়েবলিংকে নিবন্ধনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এখনো পিছিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৪৩ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে এখন পর্যন্ত পৌনে ছয় লাখ শিক্ষার্থী ন্যূনতম এক ডোজ টিকা নিয়েছেন। আর নিবন্ধন করেছেন সাড়ে ১৮ লাখ। এ অবস্থায় ইউজিসি অনলাইনে টিকাসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এতে তেমন একটা সাড়া নেই। গত ৮ দিনে মাত্র দেড় লাখ শিক্ষার্থী তাদের টিকা, এনআইডি ও বিআরসি সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

এ বিষয় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, এটা ঠিক যে একটা ঝুঁকি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হচ্ছে। তবে এটাও ঠিক যে, শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত অবস্থার জন্য আর অপেক্ষার সুযোগ নেই; সেটা সম্ভবও নয়। সবমিলিয়ে ন্যূনতম ১-২ শতাংশ ঝুঁকি সবসময়ই থাকবে। ইউজিসির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শিক্ষার্থী ৪৩ লাখ।

কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান জানান, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাড়ে চার লাখ ছাত্রছাত্রী এক ডোজ আর এক লাখ ২২ হাজার উভয় ডোজ টিকা নিয়েছেন। আবার মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে সাড়ে ১৮ লাখ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী এক লাখ ৩২ হাজার। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই টিকা নিয়েছেন। এনআইডি না থাকা এবং ওয়েবলিংকে নিবন্ধনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে ইউজিসির লিংকে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। তিনি বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রহরে শিক্ষার্থীদের টিকা সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধন শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেড় লাখ নিবন্ধন করেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে সরাসরি অনেক তথ্য আসছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ লাখ শিক্ষার্থীর এনআইডি কার্ডই নেই। যারা নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন না।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কতজন শিক্ষার্থীর এনআইডি ও বিআরসি আছে- সব শিক্ষার্থীর এ তথ্য সংগ্রহের পর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া যাবে। এরপর ক্যাম্পাসে মেডিক্যাল সেন্টার অথবা নিকটস্থ জেলা হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করা হবে। ইউজিসির কর্মকর্তারা বলছেন, আইন অনুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার এখতিয়ার তাদের সিন্ডিকেট বা রিজেন্ট বোর্ড এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের। তাই যখন তারা ‘সন্তুষ্ট’ হবে, তখন দায়িত্ব নিয়েই তারা ক্যাম্পাস খুলতে পারবে। ইতোমধ্যে দুই শর্তে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খুলে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ইউজিসি। এর আগে গত শুক্রবার ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শ্রেণী কার্যক্রম চালুর অনুমতি দিয়েছে ইউজিসি। তবে সেক্ষেত্রে দু’টি শর্ত মানতে হবে এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। ইউজিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে শর্তসাপেক্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজ ব্যবস্থাপনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ শিক্ষাকার্যক্রম চালু করতে পারবে। তবে ইউজিসি আরোপিত দু’টি শর্তের মধ্যে রয়েছে এক. শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে কমপক্ষে এক ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন অথবা টিকা গ্রহণের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে জাতীয় সুরক্ষা সেবা পোর্টালে অথবা সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন।

দুই. ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব শিক্ষার্থী, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা জন্মনিবন্ধন সনদের ওয়েবলিংক এ টিকা গ্রহণের জন্য প্রাথমিক নিবন্ধন করে থাকলে এবং পরবর্তীতে জাতীয় সুরক্ষা সেবা ওয়েবপোর্টালে অথবা সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে টিকা গ্রহণের নিবন্ধন করে থাকলে ক্লাসে অংশ নিতে পারবে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সাথে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনির এক বৈঠকে ২৭ সেপ্টেম্বরের পর যে কোনো সময় থেকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হল খুলে দেয়া যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রক্রিয়া হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করতে বলেছে। এজন্য সরকার শিক্ষার্থীদের বয়স এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের শর্তও শিথিল করে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা

সকল