মহাপরিকল্পনার পাহাড়েই চাপা পড়ে আছে পর্যটনের উন্নয়ন
আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস- আবুল কালাম
- ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০৩
কয়েক যুগেও দেশের পর্যটন খাতের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। সম্ভাবনার এ শিল্পের উন্নয়নে একাধিক সংস্থা থাকলেও তাতে কাজের অগ্রগতি নেই। দফায় দফায় নেয়া পরিকল্পনা, মহাপরিকল্পনার মধ্যেই অনেকটা সীমাবদ্ধ রয়েছে তাদের কার্যক্রম। ফলে মহাপরিকল্পনার পাহাড় চাপায় আটকে আছে এ খাতের উন্নয়ন। এমনি পরিস্থিতিতে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব পর্যটন দিবস।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটন খাতের উন্নয়নে তারা বসে নেই। একাধিক পরিকল্পনা, মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু তার সফলতা নিয়ে তারা কিছু বলতে নারাজ। পাহাড়সম পরিকল্পনার কত শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে আর প্রক্রিয়াধীনই বা কতটুকু এসবের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তাদের জানা নেই। তাদের ভাষ্য হচ্ছে কাজ চলছে। ধীরে ধীরে তার বাস্তবায়ন মানুষ দেখতে পাবে। পর্যটনখাতের মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা অন্যতম দুই প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা-১) মো: নুরুল ইসলাম গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, পর্যটনের উন্নয়নে তারা বসে নেই। ইতোমধ্যে কিছু কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন। তিনি বলেন ইতোমধ্যে এর উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এটি তিনটি পর্যায়ে পরিচালিত হবে। প্রথম পর্যায়ে বিশ্লেষণ করা হবে দেশের পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থা, এর শক্তি কতটুকু, দুর্বলতা কোথায়, সম্ভাবনা কেমন, কোন ধরনের সঙ্কট রয়েছে। দেশের পর্যটন উন্নয়নের জন্য সব পর্যটন আকর্ষণ ও পর্যটন সম্পর্কে চিহ্নিত করা হবে। তদুপরি বেসরকারি অংশীজনের সাথে বৈঠক করা হবে এবং মতামত নেয়া হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করা হবে বাংলাদেশের পর্যটনের ভিশন, মিশন, স্ট্র্যাটেজিক অবজেক্টিভস, প্রায়োরিটিস ও লিংকেজ। এ পর্যায়ে বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়ন, প্রমোশন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরি করা হবে। আর তৃতীয় পর্যায়ে জোন বা এরিয়া নির্দিষ্ট করে অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হবে। প্রোডাক্ট উন্নয়নের পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও বিনিয়োগের কৌশল অন্তর্ভুক্ত করে কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত এবং বিপণন ও প্রমোশনাল কৌশল নির্ধারণ করা হবে। এভাবেই এগিয়ে যাবে এর উন্নয়ন কার্যক্রম।
অন্য দিকে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) (উপসচিব) মোহাম্মাদ সাইফুল হাসান নয়া দিগন্তকে বলেন, দেশের পর্যটন খাতের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। বিদেশী সংস্থা আইপিই গ্লোবাল এ কাজগুলো করবে। তিনি বলেন ইতোমধ্যে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এটি শেষ হলে আমরা একটি পরিবর্তনের দিকে যেতে পারব।
এই কর্মকর্তার মতে, এই বিশাল সম্ভবনার খাতের উন্নয়ন একা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য প্রতিটি সেক্টরকে এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন পরিকল্পনার বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে আকর্ষণীয় করা, পর্যটন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যটকদের জন্য দেশব্যাপী মানসম্মত পর্যটন সুবিধাদি সৃষ্টি, পর্যটন স্থাপনা উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও সংস্কার, পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তা প্রশস্ত করার পরিকল্পনাসহ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া জেলাভিত্তিক পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার পাশাপাশি ঐতিহ্যের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, নাফ ট্যুরিজম পার্ক এবং সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে পর্যটন খাতের সঙ্কট অনেকটা কেটে যাবে বলে তাদের প্রত্যাশা।
বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা