২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তালেবান সরকারকে ভারতের স্বীকৃতি শিগগিরই!

তালেবান শাসন এখন অনেক বেশি নিরাপদ; ১০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দাতাদের; ভবিষ্যৎ আফগানের ওপর পাক-মার্কিন সম্পর্ক মূল্যায়ন
-

আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ঘোষণা করা হয়েছে গত সপ্তাহে। তবে এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি তারা। অবশেষে সেই অপেক্ষা হয়তো শেষ হতে চলেছে বলে আভাস দিয়েছে ভারতের কলকাতাভিত্তিক দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন। ভারত শিগগিরই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদটি। গতকাল মঙ্গলবার কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে পত্রিকাটি জানিয়েছে, আফগানিস্তান ইস্যুতে পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ভারত আফগানিস্তানে সদ্যগঠিত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেবে কি না, সেই প্রশ্নই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারতের কূটনৈতিক মহলের দাবিÑ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি সপ্তাহেই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে পারে নয়াদিল্লি।
সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর তাজিকিস্তানে বসছে সাংহাই করপোরেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) বৈঠক। এতে যোগ দেবেন ভারত, চীন, রাশিয়া, পাকিস্তানসহ এসসিওভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। ভার্চুয়ালি তাতে অংশ নিতে পারেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তাদের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হবে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি। সেখান থেকেই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতির বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত আসতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
পত্রিকাটির দাবিÑ মূলত গত সপ্তাহে নয়া দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা হয়। গত রোববার অন্য এক বৈঠকে এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ারও সম্মতি আদায় করেছে দিল্লি। ভারত-অস্ট্রেলিয়া উভয়ই মনে করে, আফগানিস্তানে ‘ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সরকার’ গঠন করছে তালেবান। আফগান ইস্যুতে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার অবস্থানের বিষয়ে একই কথা জানিয়েছে প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসও। সোমবার তাদের এক প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘ভারত স্বীকার করেছে : ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অবস্থানে তালেবান।’
ওই প্রতিবেদনের মূল অংশে বলা হয়, ভারত অস্ট্রেলিয়ার সাথে যৌথ বিবৃতিতে স্বীকার করেছে, ‘আফগানিস্তানে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অবস্থান’ গ্রহণ করেছে তালেবান। এই মন্তব্য কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের দিকে একটি পদক্ষেপ। শুধু তালেবান প্রশাসনকে আফগানিস্তানের সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়াই বাকি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, তালেবান মন্ত্রিসভা ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে ‘অনেক বিতর্ক ও আলোচনার’ পর রোববারের বক্তব্যটি এসেছে। ওই দিন টু প্লাস ট বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা। সংবাদ প্রতিদিনের সূত্র জানিয়েছে, এ অবস্থায় তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের আঁচ থেকে কাশ্মিরকে বাঁচাতে চায় নয়াদিল্লি। আর এ ইস্যুতে ভারতের পাশে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কারণ তালেবানরা ক্ষমতা দখলের আগে আফগানিস্তানে বিনিয়োগ করেছে ক্যানবেরাও।
আগের চেয়ে তালেবান শাসন এখন অনেক বেশি নিরাপদ : ইসলামী ব্যাংক অব আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদ মুসা কালিম আল ফালাহি বলেছেন, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় তালেবান শাসন এখন বেশি নিরাপদ। স্কাইপে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখলের পর থেকেই বিশেষায়িত শাখার কর্মীদের যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এবং তাদের নিরাপদে নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ক্ল্যারিয়ন ইন্ডিয়া নামে একটি সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
দেশটির শীর্ষ এ ব্যাংকার আরো জানান, আশরাফ গনি সরকারের চেয়ে বর্তমান আফগানিস্তান সাধারণ মানুষের জন্য এখন অনেক বেশি নিরাপদ। আল ফালাহির এ বক্তব্য আফগান ইস্যুতে ভারতসহ বিশ্ব মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। তিনি জানান, তার বিদেশী বংশোদ্ভূত সহকর্মীদের সাথে অত্যন্ত ভালো আচরণ করেছে তালেবানরা। অপর্যাপ্ত ফ্লাইটের কারণে প্রবাসীদের কাবুল ত্যাগ করতে এক সপ্তাহ বা ১০ দিনের মতো সময় লেগে যায়। এ সময়ে প্রবাসীদের নিরাপত্তা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে তালেবান। আল ফালাহি জানান, তার বিদেশী সহকর্মীরা তালেবানের ব্যবহারে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
১০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দাতাদের : আফগানিস্তানের গরিব জনগোষ্ঠীর জন্য ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দাতারা। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে বিদেশী সাহায্য প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। অন্য দিকে আফগান সরকারের বিপুল পরিমাণ তহবিল জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থনৈতিক সঙ্কটে বাড়তে থাকে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জাতিসঙ্ঘ। ওই হুঁশিয়ারির পর সোমবার এই অর্থসহায়তার ঘোষণা আসে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে আয়োজিত এক দাতা সম্মেলন থেকে এই সহায়তার ঘোষণা আসে। তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় এড়াতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলন শেষে উল্লেখযোগ্য দাতাদের মধ্যে ফ্রান্স ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র ৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের জন্য ৩১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করে চীন। এই সহায়তার মধ্যে থাকবে খাবার, শীতকালের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং কোভিড-১৯ এর টিকা। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, এই সহায়তা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে পুনর্গঠনে সাহায্য করবে।
ভবিষ্যৎ আফগানের ওপর পাক-মার্কিন সম্পর্ক মূল্যায়ন : রয়টার্স জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সিদ্ধান্তের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। একই সাথে আফগানিস্তানের বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে যেভাবে মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে, তার পক্ষেও কথা বলেন তিনি। বলেন, ভবিষ্যতে আফগান পরিস্থিতির আলোকে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক মূল্যায়ন করবে যুক্তরাষ্ট্র। তার ভাষায়, সামনের সপ্তাহগুলোতে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কের বিষয় আমলে নেবে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী করতে পারে ওয়াশিংটন তা নির্ধারণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সাথে স্বার্থের দ্বন্দ্ব আছে এমন কিছু দেশের সাথে বহুবিধ স্বার্থসংশ্লিষ্ট সম্পর্ক আছে পাকিস্তানের। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে সোমবার সাক্ষ্য দানকালে এসব কথা বলেন ব্লিনকেন।
এ সময় তিনি বলেন, এখনো আফগানিস্তানে যে ১০০ বা তার কমবেশি মার্কিনি আছেন, তাদের উদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র। তবে এখনো যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক হাজার আফগান মিত্র আছেন। তারা ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। কারণ, তালেবানদের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নেয়ার ঝুঁকিতে আছেন তারা। তাদের উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্র সক্ষম হবে কি না সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি ব্লিনকেন।
ব্লিনকেন বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যদি তার উত্তরসূরির প্রতিশ্রুতি অনুসরণ না করতেন তাহলে আফগানিস্তানে আমাদের সেনা ও মিত্রদের ওপর হামলা বৃদ্ধি পেত। আফগানিস্তানের বড় বড় শহরে তালেবানরা বড় রকমের হামলা চালাত। এরই মধ্যে ডেমোক্র্যাটিক নেতৃত্বাধীন কংগ্রেশনাল কমিটি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি তদন্ত করছে।
কমিটিতে আইনপ্রণেতারা জানতে চান, পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করবে কিনা ওয়াশিংটন। জবাবে ব্লিনকেন বলেন, প্রশাসন শিগগিরই তা করবে। আমরা এ বিষয়টি নিয়েই কয়েক দিন কাজ করছি। সামনের সপ্তাহগুলোতেও করব। পাকিস্তান গত ২০ বছরে যে ভূমিকা রেখেছে এবং সামনের সময়ে তারা কী ভূমিকা রাখতে পারে আমরা সেটা মূল্যায়ন করে দেখছি।
তুরস্কের সাথে সম্পর্কোন্নয়ন চায় তালেবান : তুরস্কের সাথে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। তালেবান সরকারও দেশটির সাথে সম্পর্কোন্নয়নে আগ্রহী। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ জানায়, এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন। তালেবান মুখপাত্র বলেন, তার দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আঙ্কারার সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। তিনি বলেন, তুর্কি প্রকৌশলী ও অন্যরা তাদের কাজের সুবাদে আফগানিস্তানের জন্য অবদান রেখেছেন। তালেবান ভবিষ্যতে এই সম্পর্কগুলোকে আরো শক্তিশালী করতে চায়।
তালেবান মুখপাত্র বলেন, দুই দেশের সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে শিক্ষা, নির্মাণ ও অর্থনৈতিক খাতের মতো সেক্টরগুলো থাকতে পারে। তুর্কি বিনিয়োগের মাধ্যমে আফগান নাগরিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের পররাষ্ট্রনীতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করে তালেবানÑ প্রশ্নের জবাবে সুহাইল শাহিন বলেন, প্রতিটি দেশের নিজস্ব নীতি রয়েছে। তালেবান এটিকে সম্মান করে।
তিনি বলেন, প্রতিটি দেশ তার নিজের মতো করেই নিজেদের নীতি প্রণয়ন করে। তালেবান বরং বিভিন্ন দেশের সাথে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে চায়। সুহাইল শাহিন বলেন, তুরস্ক তালেবানের সাথে যেমন আচরণ করবে, তালেবানের কাছ থেকেও তারা একই আচরণ পাবে। তিনি বলেন, তুরস্ককে আমরা ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশ হিসেবে বিবেচনা করি। তারা যদি মুসলিম ভাই হিসেবে এগিয়ে আসে তাহলে তালেবান তাকে স্বাগত জানাবে।
আফগানিস্তানে ১০ লাখ শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে : শীত আসার আগেই আফগানিস্তানে লাখ লাখ মানুষের খাবার ফুরিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানো না গেলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে প্রায় ১০ লাখ শিশু মারাও পড়তে পারে। সোমবার জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের এক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আফগান সঙ্কট প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
গুতেরেস বলেন, তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে দেশটিতে দারিদ্র্যের হার হু হু করে বাড়ছে। জনসাধারণের জন্য থাকা সাধারণ সরকারি পরিষেবাগুলো ধ্বংসের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধে অনেকে ঘরহারাও হয়েছেন। ‘কয়েক দশকের যুদ্ধ, দুর্ভোগ আর নিরাপত্তাহীনতার পর তারা (আফগান) সম্ভবত তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়ের মুখোমুখি,’ বলেন তিনি। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বলেন, এখন প্রতি তিন আফগানের একজন জানেন না, পরের বেলার খাবার কোথায় মিলবে।
কাবুল বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগে সমর্থন দেবে ইইউ : কাবুল বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগে সমর্থন দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহের সাথে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত ইইউর দূত নিকোলাস মেয়ার-ল্যান্ড্রুট। নিকোলাস মেয়ার-ল্যান্ড্রুট বলেন, কাবুল এয়ারপোর্ট চালুর যাবতীয় উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্কের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানায়। বিমানবন্দরটি ফের পুরোদমে চালু করতে বর্তমানে কাতার ও তুরস্কের সাথে কাজ করছে তালেবান সরকার। আফগানিস্তানে বর্তমানে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তানের পাশাপাশি এই দুই দেশেরও দূতাবাস চালু রয়েছে।
১ লাখ ২৪ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র : আফগানিস্তানে তালেবান উত্থানের পর দেশটি থেকে এক লাখ ২৪ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এয়ারলিফটগুলোর একটি। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, গতকাল টুইটারে দেয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস। তিনি জানান, সরিয়ে নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আফগানিস্তানে দায়িত্ব পালনকারী যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক, সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরা রয়েছেন।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের স্বীকৃতি নিয়েও কথা বলেন নেড প্রাইস। তিনি বলেন, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের এখনই কোনো প্রস্তুতি নেই। তবে মার্কিন স্বার্থ থাকলে তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হবে। তালেবানের সাথে যোগাযোগ রাখা নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের পরিকল্পনা জানতে চাইলে নেড প্রাইস বলেন, ‘স্বীকৃতি এবং বৈধতার মতো বিস্তৃত ইস্যুর সাথে যোগাযোগের একটা পার্থক্য আছে।’
তিনি বলেন, আপনারা আমাদের কাছ থেকে শুনে থাকবেন, অন্য সরকারের কাছ থেকেও শুনে থাকবেন যে, আমাদের জাতীয় স্বার্থে তালেবানের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখার দরকার পড়লে আমরা তা করব।’ আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে জানতে চাইলে মার্কিন মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির সাথে যৌথ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ইসলামাবাদ তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। তিনি বলেন, গত ২০ বছরের অর্জন জলাঞ্জলি দিতে চায় না পাকিস্তান।
পুরুষের পাশাপাশি কাজ করা নারীদের উচিত নয় : তালেবানের জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি রয়টার্সকে বলেছেন, তারা আফগানিস্তানে ‘শরিয়া আইন’ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে চায়। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রায় ৪০ বছর ধরে আমরা লড়াই করে চলেছি। আর পরিবারের বাইরে নারী ও পুরুষ একসাথে থাকা, এক ছাদের নিচে বসা, এসব তো শরিয়তে নেই। নারী আর পুরুষ একসাথে কাজ করতে পারে না, এটা স্পষ্ট। তারা আমাদের অফিসগুলোতে আসতে পারবে না, আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোতে কাজ করতে পারবে না।’ ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি আরো বলেন, ‘নারীদের অবশ্যই দরকার, যেমন শিক্ষায়, স্বাস্থ্য খাতে। তাদের জন্য আমরা আলাদা প্রতিষ্ঠান করব। আলাদা হাসপাতাল, আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়, আলাদা স্কুল, আলাদা মাদরাসা হতে পারে।’
উচ্ছেদের নোটিশ কান্দাহারে বিক্ষোভ
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কান্দাহারের একটি আবাসিক সেনা কলোনি থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের চলে যেতে বলার পর কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্থানীয় টেলিভিশনে মঙ্গলবার কান্দাহারে হওয়া বিক্ষোভের ফুটেজ দেখা গেছে। এ উচ্ছেদের নোটিশ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে তালেবান মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : কাদের রোববার থেকে স্কুল খোলা : শনিবারও চলবে ক্লাস যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বরাজনীতির মঞ্চ থেকে সরিয়ে আনতে চান ট্রাম্প : বাইডেন কলিং ভিসায় প্রতারণার শিকার প্রবাসী দেশে ফেরার সময় মারা গেলেন চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু ভারতীয় ৫২৭ খাদ্যপণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পেয়েছে ইইউ তীব্র তাপদাহের জন্য দায়ী অবৈধ সরকার : মির্জা আব্বাস অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি : বন্ধ থাকবে পরীক্ষা ইউরোপ ও কিরগিজস্তানগামী শ্রমিকদের বহির্গমন ছাড়পত্রে অনিয়ম চুয়েট বন্ধ ঘোষণা : ভিসি অফিসে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তালা এলএনজি ও সার আমদানিসহ ক্রয় কমিটিতে ৮ প্রস্তাব অনুমোদন

সকল