২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এবার টি-২০তে অসিদের হারাল টাইগাররা

-

ওয়ানডে ও টেস্টে আগেই অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। বাকি ছিল টি-২০। এবার এই ফরম্যাটেও অসিদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো জয়ের স্বাদ নিলো টাইগাররা। গতকাল মিরপুরে ৫ ম্যাচের টি-২০তে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী বোলিং মোকাবেলা করে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৭ উইকেটে ১৩১ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্লো বাঁহাতি অর্থোডক্স স্পিনার নাসুম আহমেদের ঘূর্ণি বলের সামনে অস্ট্রেলিয়া ১০৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। নাসুম আহমেদ ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। আরেক তরুণ শরিফুল ইসলাম নেন ২ উইকেট। নাসুম আহমদেই হন ম্যাচসেরা।
অস্ট্রেলিয়া রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশী স্পিনারদের ছোবলের মুখে পড়ে। প্রথম বলেই মেহেদী হাসানের বলে হন বোল্ড অ্যালেক্স ক্যারি।এরপর ১১ রানে সফরকারীদের তিন উইকেটের পতন। পরে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি। স্পিনার ও পেস বলের সমন্বয়ে বাংলাদেশের সামনে আর সুবিধা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ২০ ওভারের শেষ বলে মিচেল স্ট্রার্ক মোস্তাফিজের বলে বোল্ড হলে জয় নিশ্চিত হয় টাইগারদের। পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
জিততে রেকর্ড গড়তে হতো বাংলাদেশের। নিজেদের সর্বনিম্ন রান ডিফেন্ডের এই চ্যালেঞ্জে দল জিতেছে অনায়াসে। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে উজ্জ্বল সাকিব আল হাসান। দারুণ বোলিংয়ে নায়ক নাসুম আহমেদ। মাঝারি পুঁজি নিয়ে যেমন শুরু প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের, ঠিক তেমন শুরুই এনে দিলেন মেহেদি হাসান। ইনিংসের প্রথম বলেই বোল্ড করেন অ্যালেক্স কেয়ারিকে। ৫ বলে ৯ রানে আউট ফিলিপি।
অস্ট্রেলিয়ার রান ১.৪ ওভারে ২ উইকেটে ১০। ফিলিপি যদিও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ঝড় তোলার। নাসুমের শর্ট বলে বলে পুল করে ছক্কা মারেন তিনি, পরের বলে নেন দুই রান। এরপর চেষ্টা করেন বেরিয়ে এসে খেলার। কিন্তু নাসুমের ফ্লাইট ও লুপ ছিল দুর্দান্ত। বল টার্ন করে বেরিয়ে যায় ফিলিপির ব্যাটের পাশ দিয়ে। বল গ্লাভসে জমিয়ে চোখের পলকে বেল উড়িয়ে দেন কিপার নুরুল হাসান সোহান।
প্রথম দুই ওভারের ধারাবাহিকতায় তৃতীয় ওভারেও বাংলাদেশ পেল আরেকটি উইকেট। প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান। সাকিবের বলটি ছিল অফ স্টাম্পে, ফ্লাইটেড ডেলিভারি। মোইজেস হেনরিকেস চেষ্টা করেন সুইপ খেলার। বল তার ব্যাটের নিচে লেগে দুই পায়ের ফাঁক গলে আঘাত করে স্টাম্পে। ২ বলে ১ রানে আউট হেনরিকেস। ২.১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ৩ উইকেটে ১১।
পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়ার। চ্যালেঞ্জিং উইকেটে বল হাতে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে বাংলাদেশের। পাওয়ার প্লেতে ফিরিয়ে দিয়েছে তিন ব্যাটসম্যানকে। হিট উইকেটে কাটা পড়েন অ্যাশটন অ্যাগার (৭)। টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় হিট উইকেট। ২০১৬ এশিয়া কাপে মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে হিট উইকেট হয়েছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমজাদ জাভেদ। ২৩ বলে ১৩ রান করেন অধিনায়ক ওয়েড।
সাকিব আল হাসানকে ছক্কা মেরে ডানা মেলার আভাস দিয়েছিলেন মিচেল মার্শ। আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ থামালেন ছন্দে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে। সীমানা থেকে দৌড়ে এসে দুর্দান্ত এক ডাইভিং ক্যাচ নেন শরিফুল ইসলাম। ৪৫ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ৪৫ রান করেন মার্শ। ১৮ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৭ উইকেটে ১০১। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ৩১ রান দরকার ছিল। চার মেরে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন অ্যাশটন টার্নার (৮)। পরের বলেই তাকে ফিরিয়ে দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।
১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে উইকেট পেলেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসার ফিরিয়ে দিলেন অ্যান্ড্রু টাই ও অ্যাডাম জ্যাম্পকে। ছক্কার চেষ্টায় লং অফে নাঈম শেখকে ক্যাচ দেন টাই। পুল করে ডিপ মিডউইকেট সীমানায় আফিফ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন জ্যাম্পা। নাসুম আহমেদ ৪টি, মোস্তাফিজ, শরিফুল দুটি করে, মেহেদি ও সাকিব একটি করে উইকেট নেন। এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের অজি বোলারদের গতির কাছে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। সেই পরীক্ষায় ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩১ রান করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সাকিব সর্বোচ্চ ৩৬ ও নাঈম ৩০ রান যোগ করেন। জবাবে খেলতে নেমে নাসুম-সাকিব ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয় সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১০৮ রানে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-২০তে জয় পায় ২৩ রানে।
ইনিংসের শুরু হয় ছয় দিয়ে। মিচেল স্টার্কের দ্বিতীয় বলেই ওভার বাউন্ডারি মারেন নাঈম শেখ। স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না ওপেনার সৌম্য সরকার। হ্যাজেলউডের বলে ৯ বলে ২ রান করে বোল্ড হন। অন্য প্রান্তে এগিয়ে নিচ্ছিলেন নাঈম শেখ। শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হন জাম্পার জাদুতে। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ২৯ বলে ৩০ রান করে। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও যেন ছিলেন নিষ্ক্রিয়। ৫ রানে জীবন পেলেও বেশি দূর যেতে পারেননি। হ্যাজলউডকে একটা ছয় মারার পরেই বিদায়-ঘণ্টা বাজে তারও। ফিরেন ২০ বলে ২০ রান করে।
ব্যাট হাতে ব্যর্থ নুরুল হাসান সোহানও। ঠিকঠাক টাইমিং করতে পারলেন না অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শেষ পর্যন্ত ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪ বলে ৩ রান। কচ্ছপগতিতে রান তোলার দিনে জ্বলে উঠতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। খেলেছেন ধীরলয়ে। শেষদিকে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেনের সাথে। কিন্তু তাতে বাদ সাধেন হ্যাজেলউড। ৩৩ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ প্রশংসায় ভেসে যাওয়া শামীম পাটোয়ারীও ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাট হাতে। মাত্র ৪ রান করে স্টার্কের শিকার হন।
ধীরগতিতে রান তোলার ম্যাচে বাংলাদেশ ১০০ পেরোয় ১৬.৪ ওভারে। শেষ পর্যন্ত ধুঁকতে ধুঁকতে ১৩১ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত আফিফ করেন ১৭ বলে ২৩ রান। এছাড়া মাহেদি হাসান অপরাজিত থাকেন ৭ রানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হ্যাজেলউড ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া স্টার্ক ২টি, জাম্পা ও টাই নেন একটি করে উইকেট।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু নীলফামারীতে তিন হাজার ১৭০ চাষির মাঝে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ কারাগারে কয়েদির মৃত্যু উজ্জ্বল হত্যার বিচার দাবিতে সরিষাবাড়ীতে মানববন্ধন পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২১ খাবারের সন্ধানে বসতবাড়িতে হরিণ, মহামায়ায় অবমুক্ত সিঙ্গাপুর প্রবাসী ফিরোজ মাহমুদের লাশ দেশে ফিরেছে ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সব ধর্মের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে: ড. সুকোমল বড়ুয়া

সকল