২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাউন্সিলের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর বিএনপিতে আসবে নতুন নেতৃত্ব

রুখে দাঁড়ানোর এখন সময় : ফখরুল
-

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি নতুন আহ্বায়ক কমিটি দিয়েছে গত সোমবার। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব আশা করছে, আহ্বায়ক কমিটি দ্রুত সময়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে মহানগরে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলের সময় তিন মাস।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে উত্তরার বাসায় মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটি দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, এই দু’টি কমিটি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি দু’টির প্রতি সারা দেশে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। এরা সবাই পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দ। আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে এটা (নতুন কমিটি গঠন) নিঃসন্দেহে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আমাদের প্রত্যাশাÑ এই কমিটির মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতির একটা গুণগত পরিবর্তন আসবে। বর্তমানে যে অগণতান্ত্রিক একটি সরকার যে আমাদের সব আশা-আকাক্সক্ষা বিনষ্ট করে দিচ্ছে, সেখানে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, ভূমিকা রাখবেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রত্যাশা অত্যন্ত সক্রিয়, সচল ও কার্যকর এই আহ্বায়ক কমিটি অতি দ্রুত দলকে সুসংগঠিত করবে এবং একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন করবে।
কবে নাগাদ মহানগরের কাউন্সিল হতে পারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা তো আমাদের যে গঠনতন্ত্র আছে সেই গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী কাউন্সিল করবে। সেটা তিন মাস।
বর্তমান কমিটি নিয়ে ক্ষোভ আছে যে মূল্যায়ন করা হয়নিÑ এ রকম প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি একটা বিশাল রাজনৈতিক দল। সেই দলের যখন একটি কমিটি তৈরি করা হয় তখন ছোটখাটো সমস্যা থাকতেই পারে। আমরা যেটা দেখছি যে, একবারে পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দকে দিয়েই এই কমিটি করা হয়েছে। প্রবীণ ও নবীনের সমন্বয়ে করা হয়েছে।
গত সোমবার আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে উত্তরের ৪৭ সদস্য এবং আবদুস সালামের নেতৃত্বে দক্ষিণের ৪৯ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উত্তরের সদস্যসচিব হয়েছেন আমীনুল হক এবং দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু।
মহানগর উত্তরের নতুন আহ্বায়ক দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজকে গণতন্ত্র অনুপস্থিত, একদলীয় শাসনব্যবস্থা চলছে। নির্যাতন-নিপীড়ন ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। সেজন্য সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশাÑ জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারে, একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয় সেই লক্ষ্যকে সফল করার জন্যে আমরা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ একসাথে একযোগে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কাজ করব। যদি প্রয়োজন হয় ১৯৯০ সালের মতো আরেক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই নব্য স্বৈরাচারী অগণতান্ত্রিক, অবৈধ, মিডনাইটের সরকারকে রাষ্ট্র ক্ষমতাকে সরানোর আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম করব।
মহানগর দক্ষিণের নতুন আহ্বায়ক চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, আমাদের একটাই উদ্দেশ্যÑ আজকের এই সরকার যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা এবং গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা।
মহানগরের অতীতে নেতৃত্বদানকারী মরহুম মীর শওকত আলী, মরহুম সাদেক হোসেন খোকা, মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ, হাবিবউন নবী খান সোহেল, এম এ কাইয়ুম, কাজী আবুল বাশার, মরহুম আহসান উল্লাহ হাসান, আবদুল আলীম নকি প্রমুখের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছেন। আমরা অতি অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের সাংগঠনিক অবস্থাটাকে সম্পূর্ণভাবে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করব, যাতে একটা কাউন্সিল করতে পারি।
এ সময়ে মহানগরের নেতা রফিকুল আলম মজনু, আমীনুল হক, আবদুল আলীম নকি, তাবিথ আউয়াল, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, মো: মোহন, আতিকুল ইসলাম মতিন, মোশাররফ হোসেন খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, মহানগর উত্তর যুবদলের এস এম জাহাঙ্গীর, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের মিডিয়া শাখার সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে আমান ও আবদুস সালামের নেতৃত্ব নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতারা বিএনপি মহাসচিবের বাসায় নিজস্ব চেম্বারে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। মির্জা ফখরুল নবগঠিত কমিটির নেতাদের অভিনন্দন জানিয়ে সংগঠনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।
আহ্বায়ক কমিটির নেতারা গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরো কয়েকজনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে তার কার্যালয়ে যান।
রুখে দাঁড়ানোর এখন সময় : ফখরুল
সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এখন সময় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
লকডাউনের মধ্যে রফতানিকারী শিল্প-কলখানার খুলে দেয়ার পর শ্রমিকদের অবর্ণনীয় ভোগান্তির কথা তুলে ধরতে গিয়ে গতকাল বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের কাজে যোগদান নিয়ে কী চরম ভোগান্তিতে পড়তে হলো! তাদের কাজে যাওয়া, তাদের কাজে ফিরে আসা নিয়ে সরকার কী একটা লেজে গোবরে অবস্থা তৈরি করেছে! তাদের জীবনের যেন কোনো মূল্য নেই। যখন ইচ্ছা বললাম বাড়ি চলে যাও, আর সংক্রমিত হয়ে সে চলে গেল। তারপর বললাম ফিরে আসো। তারা ময়মনসিংহ থেকে মানিকগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ থেকে হেঁটে কাজে যোগদানের জন্য ঢাকায় এলো- দিস ইজ টু মাচ।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনই সময় এগুলোর বিরুদ্ধে, এই অপশাসনের বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে এই একটা দানবীয় সরকারের বিরুদ্ধে যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসে আমাদের বুকের উপরে চেপে বসে আছে। মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকারার্থে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাদের জবাবদিহিতা থাকবে মানুষের প্রতি। সেই ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সবাই এক হয়ে কাজ করতে হবে এবং আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
‘মান্নান-নিলুফার মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে দলের মরহুম ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলার সভাপতি আব্দুল মান্নানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন হয়। সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মান্নানের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করে তার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি মরহুম আব্দুল মান্নানের ওপর একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের পরামর্শ দেন।
সংগঠনের সভাপতি মরহুম নেতার একমাত্র কন্যা ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নানের সভাপতিত্বে ও বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান অ্যাপেলো, ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম, আবদুস সালাম আজাদ, সেলিমুজ্জামান সেলিম, দেওয়ান মো: সালাহউদ্দিন, মীর হেলাল উদ্দিন, আবদুল হাই মল্লিক পারভেজসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।


আরো সংবাদ



premium cement
চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে‘ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের মোদির মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু নেতাকে বহিষ্কার ফ্লোরিডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নতুন কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন চান্দিনায় পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশু মৃত্যু কেএনএফ সম্পৃক্ততা : গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা সম্পর্কে যা জানা গেছে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ কোটি ২ লাখ শ্রমজীবি মানুষের মাঝে ক্যাপ, পানি ও স্যালাইন বিতরণ করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পশ্চিম নোয়াখালীতে হিট স্ট্রোকে শিক্ষার্থীর মৃত্যু বাবার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় স্ত্রীর ২৭ স্থানে স্বামীর ধারালো অস্ত্রের আঘাত

সকল