১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

২০ হাজার ছাড়িয়ে গেল করোনায় মৃত্যু

আবারো ভাঙল শনাক্তের রেকর্ড
-

দেশে দ্রুতগতিতে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের সংখ্যা। গত বছর করোনার প্রথম ধাক্কায় মৃত্যু-সংক্রমণের হার মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এ বছরে বিশেষ করে জুন-জুলাইয়ে এসে দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে সংক্রমণ ও মৃত্যু। চলতি মাসে এসে প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে রেকর্ড। কোনো দিন মৃত্যুর, আবার কোনো দিন শনাক্তের। গত বছর যেখানে সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল ৬৪, সেটা গত মঙ্গলবার ২৫৮তে গিয়ে পৌঁছে। গত বছর যেখানে সর্বোচ্চ শনাক্ত ছিল চার হাজারের কিছু বেশি, গতকাল বুধবার সেটি ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৩৭ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়াল। এর আগে গত ১৯ জুলাই করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১৯ হাজার ছাড়িয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৩৭ জনকে নিয়ে দেশে মোট মারা গেলেন ২০ হাজার ১৬ জন।
এদিকে গতকাল করোনায় নতুন রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ২৩০ জন, যা দেশে করোনা মহামারীকালে দৈনিক শনাক্তে রেকর্ড। এর আগে গত ২৬ জুলাই একদিনে শনাক্ত হয়েছিলেন ১৫ হাজার ১৯২ জন। গতকালের শনাক্ত হওয়া ১৬ হাজার ২৩০ জনকে নিয়ে দেশে করোনা শনাক্ত ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেল। দেশে সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত শনাক্ত ১২ লাখ ১০ হাজার ৯৮২ জন। গত ১৮ জুলাই দেশে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছিল সে হিসাবে সর্বশেষ গত ১০ দিনে এক লাখ রোগী শনাক্ত হলেন।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনা এসব তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ১২ শতাংশ, আর এখন পর্যন্ত ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৬৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৩৭ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪৯ জন, আর নারী ৮৮ জন। এ সময় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯১-১০০ বছরের মধ্যে একজন, ৮১-৯০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ৪৫ জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ৭৮ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৪৪ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৩৪ জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ২১-৩০ বছরের মধ্যে ৯ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন ৬২ জন, খুলনা বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। রাজশাহীতে ১৮ ও রংপুরে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা অন্যান্য বিভাগের।
রামেক হাসপাতালে ১৮ জনের মৃত্যু
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনাভাইরাস ও করোনা উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় ছয়জন ও করোনা উপসর্গে ১২ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও চারজন নারী। এদের মধ্যে রাজশাহীর ছয়জন, নাটোরের তিনজন, পাবনার সাতজন, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরের একজন করে রয়েছেন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীর দুই ল্যাবে মোট ৭৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৫৯ জনের করোনা পজিটিভ ফল আসে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চলতি জুলাইয়ের প্রথম ২৮ দিনে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট ৪৯২ জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া গত জুনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৪০৫ জন রোগী।
ময়মনসিংহ মেডিক্যালে মৃত্যু চার শ’ ছাড়িয়েছে
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চলতি মাসে মৃত্যু চার শ’ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় পাঁচজন ও উপসর্গ নিয়ে আরো সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪১১ জনে। করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা: মহিউদ্দিন খান এ তথ্য জানান। বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪৪৫ জন। আইসিইউতে আছেন ২১ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলায় ১৩৯ জন, জামালপুরে ৮১ জন, নেত্রকোনায় ৭৭ জন ও শেরপুরে ৬৫ জন মারা গেছে। এ দিকে ময়মনসিংহ জেলায় এক হাজার ৩৫৮ নমুনা পরীক্ষায় আরো ৪৪০ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। আক্রান্তের হার ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশ। জেলায় মোট আক্রান্ত ১৩ হাজার ৬২৭ জন। সুস্থ হয়েছেন দশ হাজার ৩৪৮ জন।
চট্টগ্রামে মৃত্যু ১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৯১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭ জন। সংক্রমণের হার ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ৭৮ হাজার ৪৩৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৮ হাজার ৯৬৪ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ১৯ হাজার ৪৭২ জন। করোনায় চট্টগ্রামে মারা গেছেন মোট ৯৩২ জন। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৬১ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ৩৭১ জন।
বগুড়ায় শনাক্ত কমেছে
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়া জেলায় করোনায় সংক্রমণ কিছুটা কমলেও মৃত্যু কমছে না। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ এবং উপসর্গ নিয়ে আরো ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জন বগুড়া জেলার বাসিন্দা এবং দুইজন অন্য জেলার বাসিন্দা।
মৃতদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়ে আটজন এবং উপসর্গে ১৩ জন মারা গেছেন। জেলার তিনটি হাসপাতালে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হয়। একই সময়ে জেলায় ৪৯৪ নমুনায় নতুন করে আরো ১০৬ জন শনাক্ত হয়েছেন। বগুড়ার সিভিল সার্জনের এক প্রতিবেদনে বুধবার এসব তথ্য জানানো হয়।
বরিশালে একদিনে শনাক্ত ৮৫৪
বরিশাল ব্যুরো জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে নতুন করে ৮৫৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর ফলে বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৪২৮ জনে। পাশাপাশি একই সময় শেবাচিম হাসপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে আটজন এবং করোনা ওয়ার্ডে আক্রান্ত দুইজনসহ বিভাগে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪৪২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: বাসুদেব কুমার দাস।
রংপুর বিভাগে আরো ১৬ জনের মৃত্যু
রংপুর অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরো ১৬ জন। এ নিয়ে এই বিভাগে করোনায় মারা গেলেন ৮৮২ জন। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৬৫৭ জন।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা: মোতাহারুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বুধবার বেলা ১টা পর্যন্ত বিভাগের ছয় জেলায় মারা গেছে ১৬ জন। এদের মধ্যে রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচজন করে, দিনাজপুর ও কুড়িগ্রামে দু’জন করে এবং লালমনিরহাট ও গাইবান্ধায় একজন করে মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৩৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছেন ৬৫৭ জন। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ০২ শতাংশ।
রংপুর বিভাগের আট জেলায় করোনার শুরু থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত দুই লাখ ১০ হাজার ৪০৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪২ হাজার ২৩৮ জন শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮৮২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩২ হাজার ৫২৮ জন।
সাতক্ষীরায় কমেছে সংক্রমণের হার
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গে নিয়ে তিন নারীসহ আরো সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে একজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ নিয়ে জেলায় ২৬ জুলাই সোমবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৪ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৫২৭ জন।
এ দিকে জেলায় কমেছে করোনা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় ২২৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ। জেলায় গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ৮৪ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৫২৭ জন।
চুয়াডাঙ্গায় আরো ৬ জনের প্রাণহানি
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, জেলায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে নতুন করে আরো আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত দু’জন ও উপসর্গ নিয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। সদর হাসপাতালের ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটের রেড জোনে ও ইয়োলো জোনে এই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। অন্য তিনজনের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। জেলায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরো ৫৪ জনের শরীরে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯০৯ জনে। সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করে। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১৭৩ জনের। এর মধ্যে জেলায় আক্রান্ত হয়ে জেলার হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে ১৫৬ জনের।
গাইবান্ধায় নতুন শনাক্ত ৮৫ জন
গাইবান্ধা সংবাদদাতা জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় বুধবার করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৮৫ জন। এ নিয়ে জেলায় সর্বমোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৬০৬ জন।
২৪ ঘণ্টায় ৪০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে ৮৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ২১ শতাংশ। গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মেডিক্যাল অফিসার ডা: মো: হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নীলফামারীতে ১ জনের মৃত্যু
নীলফামারী সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা সদরের চড়াইখোলা গ্রামের আজিজার রহমানের (৬৬) করোনা শনাক্ত হওয়ার পর নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে মারা যান। এ নিয়ে চলতি জুলাই মাসের ৩ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত জেলায় ৩১ জনের মৃত্যু হলো। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৪ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নীলফামারী সিভিল সার্জন ডা: জাহাঙ্গীর কবির এসব তথ্য জানান।
টাঙ্গাইলে ৩ জনের মৃত্যু
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর তালিকায় যোগ হয়েছে আরো তিনটি নাম। এই তিনজনের মধ্যে দু’জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। অন্যজনের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নিয়ে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় মৃত্যু হয়েছে ২০৭ জনের।
এ ছাড়া গত এক দিনে ৭০৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৬ জন। শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ১৩ হাজার ৩৪৪ জন। সুস্থ হয়েছেন সাত হাজার ২২৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক হাজার ১০৭ জন। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
বোয়ালখালীতে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে বাবা-ছেলের মৃত্যু
পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে বোয়াখালী উপজেলার বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: জিল্লুর রহমান। করোনায় নিহত বাবা-ছেল হলেন উপজেলার চরখিজিরপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো: আবু সৈয়দ চৌধুরী (৮০) ও তার ছেলে মো: আলমগীর (৩৫)। গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় আবু সৈয়দ চৌধুরী ও গতকাল আলমগীর মৃত্যুবরণ করেন। চরখিজিরপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হোসনে আরা গতকাল বিকেলে দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, করোনায় আক্রান্ত হলে গত ২২ জুলাই আলমগীরকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার এক দিন পর করোনায় আক্রান্ত আবু সৈয়দকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়।
পটুয়াখালীতে নতুন শনাক্ত ১৬৮ জন
পটুয়াখালী সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যায় প্রতিদিন ভাঙছে রেকর্ড। গত ২৪ ঘণ্টায় আগের সব রেকর্ড ভেঙে ৫১১টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে সর্বোচ্চ ১৬৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের হার ৩২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৯৫০-এ। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৫৯৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭৬ জনের।
নোয়াখালীতে ১ দিনে ২৫১ জন শনাক্ত
নোয়াখালী অফিস জানায়, জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ২৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৮২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ ফল পাওয়া যায়। এতে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১৩৪ জন। এ দিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৭৮ জনে। গতকাল সকালে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মাসুম ইফতেখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ফেনীতে রেকর্ড শনাক্ত ২১৭, মৃত্যু ৬
ফেনী অফিস জানায়, জেলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা শনাক্ত। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। জেলায় এক দিনে নতুন করে রেকর্ড শনাক্ত হয়েছে ২১৭ জন। আগের দিন শনাক্ত হয়েছে ১৯৪ জন। একই সময়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটে আরো ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আইসোলেশন ইউনিটে উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া পাঁচজনই নারী। একই দিনে ৭১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২১৭ জন পজিটিভ হয়েছে। শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: আবুল খায়ের মিয়াজী এসব তথ্য জানান।
ভোলায় বাড়ছে সংক্রমণ
ভোলা সংবাদদাতা জানান, ভোলায় বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ১৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ১৪ মাসে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ দিন জেলাটিতে ২৩৬টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ১৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৭৪.৫৭ শতাংশ। এর আগে গত ২৬ জুলাই এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত ছিল ১৩৭ জন। এ দিকে জেলায় ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪০ জন। এ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছে ৩০ জন; যাদের মধ্যে গত সাত মাসেই ২৪ জনের মৃত্যু হয়।
বান্দরবানে দু’জনের মৃত্যু
বান্দরবান সংবাদদাতা জানান, বান্দরবান সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে করোনা ইউনিটে এক নারী ও পুরুষ রোগীর মৃত্যু হয়। জেলায় করোনায় এ পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হলো। বান্দরবান সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা: সমীরণ নন্দী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement