২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজধানীর সুরক্ষায় ৭ জেলা ‘ব্লকড’

করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে দুশ্চিন্তা বাড়ছে
-

দেশে দ্রুত গতিতে বাড়ছে করোনার বিস্তার। এত দ্রুত ছড়ানোর পেছনে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টকে (ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট) দায়ী করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এসব কারণে রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে ঢাকার বাইরের সাত জেলায় আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে কঠোর লকডাউন। ওই সাত জেলায় জরুরি সেবা ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কার্যক্রম ছাড়া অন্য সব ধরনের কর্মকাণ্ড এ সময় বন্ধ থাকবে। মূলত বিপজ্জনক ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার ঠেকাতেই ঢাকার সাথে এই সাত জেলার যোগাযোগ ‘ব্লকড’ রাখার উদ্দেশ্য বলছেন চিকিৎসকরা। যদিও সরকার এই ভয়াবহ ভ্যারিয়েন্টের পরিস্থিতি সম্বন্ধে কিছু বলছে না। নতুন লকডাউনের আওতায় থাকবে মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ জেলা।
রাজধানীতেও অস্বাভাবিক দ্রুত গতির ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এই ভ্যারিয়েন্টটি কাউকে আক্রান্ত করলে খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে আক্রান্তের ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করে ফেলে। আইসিডিডিআর,বি’র জিনোম সিকোয়েন্স অনুসারে, বর্তমানে রাজধানীর করোনা আক্রান্তের ৬৮ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত।
গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে চার হাজার ৬৩৬ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি বছরের ২০ এপ্রিলের পর গতকালই সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হলো। গত ঈদুল ফিতরের পরদিন (১৫ মে) দেশব্যাপী করোনা শনাক্ত ২৬১ জনে নেমে আসে। গতকালের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণের হার ছিল ১৯.২৭ শতাংশ।
সাত জেলায় নতুন করে লকডাউন নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘৩০ জুন পর্যন্ত ঢাকার বাইরের সাত জেলায় লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। এই সাত জেলায় সবকিছু বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না। শুধু মালবাহী ট্রাক এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছু চলবে না। জেলাগুলো ব্লকড থাকবে। কেউ ঢুকতে পারবে না।’ এসব জেলায় সরকারি অফিস কিভাবে চলবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জরুরি সেবা ছাড়া সব কিছুই বন্ধ থাকবে।
জানা গেছে, চার পাশের সাত জেলায় লকডাউন করে ঢাকাকে সুরক্ষিত করার চেষ্টা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার থেকে ওই সাত জেলায় জরুরি সেবা ও আইনশৃঙ্খলা ছাড়া সবকিছুই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা থাকবে। লকডাউনে বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে, কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/লরি।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, যদি কোনো লোকাল অথরিটি (স্থানীয় কর্তৃপক্ষ) মনে করে তাদের এলাকায় লকডাউন করা দরকার সেটি তারা করতে পারবেন। সেই অনুমোদন তাদের দেয়া হয়েছে। তবে ঢাকা জেলা নিয়ে শিগগিরই কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না বলে তিনি জানান।
এ দিকে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক ডা: মোজাহেরুল হক বলেন, দেখে-শুনে মনে হচ্ছে বর্তমানকার সংক্রমণের পেছনে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টই দায়ী বলে মনে হচ্ছে। আইসিডিডিআর,বি’র সিকোয়েন্স থেকে এটা বেরিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, টিকা কার্যক্রমকে জোরদার করতে পারলে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থেকে মানুষকে সুরক্ষা দেয়া যেত।
এ ব্যাপারে ব্রিটেনের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম নয়া দিগন্তকে বলেন, পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড অতি সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছে গত এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ১৪ হাজার রোগীর ওপর। এই গবেষণার একটি প্রি-প্রিন্ট তারা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ১৪ জুন। ফলাফলে দেখা গেছে, যারা অক্সফোর্ডের দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের ভেতরে ৯২ শতাংশ কোনো ধরনের মারাত্মক কোভিডে আক্রান্ত হননি বা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। আর যারা টিকাটির এক ডোজ নিয়েছেন, তাদের ৭১ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছেন। একই ধরনের ফলাফল দেখা গেছে ফাইজারের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও। যারা ফাইজারের দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৯৬ শতাংশ মারাত্মক কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছেন। আর যারা এক ডোজ নিয়েছিলেন, তাদের ৯৪ শতাংশ মারাত্মক কোভিড থেকে মুক্ত ছিলেন। ড. মেহেদী আকরাম এ ব্যাপারে বলেন, টিকা কার্যক্রম জোরদার করতে পারলে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট থেকে বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদ থাকতে পারত।
খুলনায় ৭ দিনের সর্বাত্মক লকডাউন
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সিভিল সার্জন অফিস বলছে, গত ২০ দিনে সংক্রমণের হার নমুনা পরীক্ষার তুলনায় বেড়ে হয়েছে ২৮ শতাংশ। অবশ্য গ্রাম এলাকায় আক্রান্ত অনেক মানুষ টেস্ট করাতে আসছেন না বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় করোনার প্রকোপ কমাতে প্রশাসন আজ মঙ্গলবার থেকে জেলাব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি জেলাব্যাপী গত ১৩ জুন এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। তবে সে লকডাউনে পরিবহন চালু রাখা হয় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের শর্র্তে। দোকানপাট খোলা রাখা হয় বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পরিবহনের ক্ষেত্রে শুধু ট্রেন অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছে। ঢাকাগামী কোচ সার্ভিসগুলোও মেনেছে। কিন্তু আন্তঃজেলা বাস, থ্রি হুইলার ও ইজিবাইক বর্ধিত ভাড়া আদায়ের নির্দেশ মানলেও যাত্রী অর্ধেক নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি। কোন যাত্রী এটা নিয়ে বাদানুবাদ করলে ড্রাইভার-কন্ডাক্টরদের সাফ কথা, আপনার যাওয়া লাগবে না, নেমে যান। দোকানপাট ও বাজারে লোকজন স্বাস্থ্যবিধির প্রতি খুব সামান্যই নজর দিয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করা হলেও তা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ১৫ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত দৈনিক জেলা ও মহানগরী এলাকায় করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে যথাক্রমে ১৬৬, ২২২, ১৮১, ২২৬, ১৪৯ ও ২২৩ জনের। সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়াকে বিপজ্জনক মনে করা হচ্ছে। এমনকি গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। অপরদিকে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চাপ পড়েছে চিকিৎসাব্যবস্থায়। করোনার শুরু থেকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কম্পাউন্ডে একটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ১০০ শয্যা নিয়ে চলছিল। কখনও রোগীর সংখ্যা হাসপাতালের ক্যাপাসিটি অতিক্রম করেনি। কিন্তু জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা ১০০ অতিক্রম করে ১৫০ পর্যন্ত পৌঁছায়। অগত্যা শয্যাসংখ্য বাড়িয়ে ১৩০ করা হয়। গতকাল সকাল পর্যন্ত সেখানে ১৬১ জন ভর্তি ছিলেন। এ অবস্থায় খুলনা আধুনিক (সদর) হাসপাতালকে ৭০ শয্যাকে করোনা ইউনিটে রূপান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা: নিয়াজ মোহাম্মদের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, খুলনার পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। গত ২০ দিনে আমাদের কাছে যে পরিসংখ্যান আছে তাতে সংক্রমণের হার ২৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সে জন্যে আমরা ১৩ তারিখ থেকে লকডাউন ঘোষণা করেছিলাম। অবশ্য সবকিছু খোলা রেখে। এজন্য মঙ্গলবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাস-ট্রেন, বাজারঘাট, দোকানপাট সবই বন্ধ থাকবে। এভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করি।
কুষ্টিয়ায় কঠোর লকডাউন শুরু
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, জেলার সর্বত্র সাত দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গত রোববার রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে ২৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত এ লকডাউন বলবৎ থাকবে। রোববার রাত ৮টায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পুরো জেলায় লকডাউন শুরু হওয়ায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি অনেকটা কম। এদিকে পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকায় যানবাহন চলাচলও কমে এসেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা, দোকানপাট, শপিংমল, রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। জেলার অভ্যন্তরে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব ধরনের গণপরিবহন, ইজিবাইক/থ্রি-হুইলারসহ সব ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন, সাপ্তাহিক হাট/গরুর হাট বন্ধ থাকবে। এদিকে লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় কুষ্টিয়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করছে।
ফরিদপুরে আরো কড়াকড়ির নির্দেশ
ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরে ক্রমেই বাড়তে থাকা সংক্রমণ প্রতিরোধে গতকাল থেকে সাত দিনের লকডাউন শুরু হয়েছে। জেলা সদরের ফরিদপুর পৌরসভা এলাকা ছাড়াও বোয়ালমারী ও ভাঙ্গা পৌর এলাকায় এ লকডাউন চলছে। তবে চলমান লকডাউনে দুর্ভোগে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষ যারা দিন এনে দিন খেয়ে জীবনধারণ করেন। বিশেষ করে রিকশা ও অটোচালকসহ সাধারণ দিনমুজরেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। লকডাউনে খোলা রয়েছে বিভিন্ন সরকারি অফিস ও পৌরসভার দফতর। ফরিদপুর পৌরসভায় হোল্ডিং ট্যাক্স শুনানি হতে দেখা গেছে। লকডাউন কার্যকর করতে ব্যাপক তৎপরতা চালানো হয়েছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের পক্ষ হতে। বিভিন্ন স্থানের দোকানপাট এমনকি হাসপাতালের আশপাশে ছাড়া অন্যান্য স্থানের ওষুধের দোকানও বন্ধ রয়েছে। শহরের গোয়ালচামটে লাক্সারি হোটেলের সামনে দেখা গেল এক পা দিয়ে রিকশা চালান এমন একজন পঙ্গু রিকশা চালকের গদি কেড়ে নেয়ার পর তাকে অনুনয় বিনয় করতে। পরে অবশ্য অন্যদের অনুরোধে তার রিকশার গদি ফিরিয়ে দিয়ে তাকে বাড়ি ফিরে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এই প্রতিবেদককে বলেন, বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটেই লকডাউন করা হয়েছে। আমাদের নিজেদের মঙ্গলের স্বার্থেই এই লকডাউন মেনে নিতে হবে। সবাইকেই এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, কেবিনেট ডিভিশনের সিদ্ধান্তে দেশের আরো কয়েকটি জেলায় সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা ফরিদপুরে একটু মেজর জায়গায় আছি। এজন্য কিছু কষ্ট হলেও সেটি মেনে নিতে হবে। লকডাউন যাতে ভালোভাবে সবাই পালন করে সেজন্য আমি ফরিদপুরের পুলিশ সুপারকে বলেছি আরো কড়াকড়ি করতে। এদিকে, লকডাউনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো রকম অপ্রীতিকর বা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ইতঃপূর্বে গত ৫ এপ্রিল জেলার সালথা উপজেলার ফুকরা বাজারে লকডাউন কার্যকর সংক্রান্ত এক অভিযানকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে।
মুন্সীগঞ্জে জরুরি সার্ভিস ছাড়া সব বন্ধ
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, রাজধানী ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ জেলায় আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হচ্ছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন। জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতকাল মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা: আবুল কালাম আজাদ জানান, জেলা প্রশাসন রাতের মধ্যেই এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন দিবে। সরকারের নির্দেশনাকে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, জরুরি পরিষেবা অর্থাৎ খাদ্য, অষুধ, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের মতো সেবা চলমান থাকবে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি-আধা সরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এমনকি সাধারণ যানচলাচল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী কোনো যানবাহন চলতে দেয়া হবে না। অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি খাদ্য, ওষুধ ও পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দেয়া হবে।
গাজীপুরে কঠোর বিধিনিষেধ
গাজীপুর সংবাদদাতা জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে গাজীপুর জেলায় জনসাধারণের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা) উপসচিব মো: রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত পত্রে এ বিধিনিষেধ জারি করা হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement