২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে যুক্তরাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ

-

যুক্তরাজ্যে ‘নিশ্চিতভাবে’ করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ চলছে বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ সরকারের টিকা কর্মসূচির উপদেষ্টা অধ্যাপক অ্যাডাম ফিন। সরকারি তথ্যেও দেখা গেছে, দেশটির ৮০ শতাংশের বেশি নগর ও শহরে সাপ্তাহিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
গত সপ্তাহে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বেড়ে হয়েছে ৬১ হাজার ১৮১ জন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ‘ফ্রিডম ডে’ (বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের দিন) এক মাস পিছিয়ে দেয়ার পর সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগামিতা দেখা যাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিরর এ খবর জানিয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের পর এই প্রথম দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। এতে করে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর মধ্যে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। গত শনিবার সকালে ব্রিটিশ সরকারের জয়েন্ট কমিটি অন ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনের (জেসিভিআই) উপদেষ্টা অধ্যাপক অ্যাডাম ফিন বলেছেন, যুক্তরাজ্যে নিশ্চিতভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ চলছে।
মস্কোয় দ্বিতীয় দিনের মতো রেকর্ড রোগী শনাক্ত : রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে গত শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো রেকর্ডসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এএফপির। করোনার ডেলটা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণে মস্কোতে রোগী বাড়ছে। মস্কোর হাসপাতালগুলো নতুন রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় মস্কোতে পরপর দু’দিন রেকর্ডসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হলো। মস্কোতে শনিবার ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৯ হাজার ১২০ করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য জানানো হয়। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৯ হাজার ৫৬ রোগী শনাক্তের তথ্য জানানো হয়েছিল। এ ছাড়া মস্কোতে করোনায় ৭৬ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয় শনিবার। দুই সপ্তাহ আগে মস্কোতে দৈনিক তিন হাজার করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছিল। সেই সময়ের তুলনায় এখন মস্কোতে দৈনিক তিন গুণ করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
চীনে ভ্যাকসিনের ১০০ কোটি ডোজ দেয়া সম্পন্ন : চীনে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের ১০০ কোটিরও বেশি ডোজ দেয়া হয়েছে। গত শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। এর ফলে সারা বিশ্বে দেয়া করোনা ভ্যাকসিনের এক তৃতীয়াংশের বেশি ডোজ দেয়া হয়েছে শুধু চীনেই। খবর এএফপির।
গত শুক্রবার সারা বিশ্বে করোনা ভ্যাকসিনের আড়াই শ’ কোটি ডোজ দেয়া সম্পন্ন হয়েছে। এর পরদিনই দেশে ১০০ কোটি ডোজ দেয়ার কথা জানাল চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। চীনের কত শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। করোনা সংক্রমণ বেশ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করার পর সেখানে ভ্যাকসিন কার্যক্রম ধীর গতিতে শুরু হয়েছিল। ভ্যাকসিন নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব এবং অতীতে কেলেঙ্কারির কারণে চীনা জনগণ ভ্যাকসিন নিতে তেমন আগ্রহী ছিল না।
চীনের সরকার জুন মাসের শেষ নাগাদ দেশটির প্রায় ১০০ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত ৪০ শতাংশকে পুরোপুরি ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, দেশটি এ বছরের মধ্যে ৩০০ কোটিরও বেশি ভ্যাকসিন ডোজ প্রস্তুত করবে।
ব্রাজিলে টিকার দাবিতে বিক্ষোভ : করোনায় বিপর্যস্ত ব্রাজিলে মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর তালিকায় এখন বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে ব্রাজিল। এমন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন কার্যক্রম ধীরগতিতে চলতে থাকলে শীতের শুরুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুতে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে দেশটি। খবর বিবিসির। এমন বাস্তবতায় শনিবার টিকা কার্যক্রমের গতি বাড়াতে বলসোনারো সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির হাজার হাজার মানুষ। রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি শহরে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।
ভারতে ৮১ দিন পর শনাক্ত নামল ৬০ হাজারের নিচে : ধীরে ধীরে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ভারতে। দীর্ঘ ৮১ দিন পর ২৪ ঘণ্টায় ৬০ হাজারের নিচে নেমেছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এই সময়ে নতুন করে সেখানে শনাক্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৪১৯ জন। এ নিয়ে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৮ লাখ ৮১ হাজার ৯৬৫ জনে। দেশটিতে একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৭৬ জনের। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭১৩ জনে। গতকাল ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবে না সরকার : করোনাভাইরাসে মৃতদের প্রতি পরিবারকে চার লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ভারত সরকার। একটি জনস্বার্থ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে এ কথা জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। কেন্দ্রের বক্তব্য, প্রত্যেক পরিবারকে সাহায্য করার সামর্থ্য সরকারের নেই। শুধু করোনার ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য দিয়ে অন্য রোগের ক্ষেত্রে না দেয়া হলে তা অন্যায় হবে বলেও ব্যাখ্যা দেয় সরকার। করোনায় মৃতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেয়ার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের হয়। শনিবার কেন্দ্র ১৮৩ পাতার হলফনামায় জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কেন্দ্র যে মারাত্মক আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে তাতে সবাইকে আর্থিক সাহায্য দেয়া সম্ভব নয়।


আরো সংবাদ



premium cement