২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজধানীতে মা-বাবা ও বোনকে হত্যা করে মেয়ের আত্মসমর্পণ

-

রাজধানীর মুরাদপুরের একটি বাসা থেকে বাবা-মা ও মেয়ের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেনÑ বাবা মাসুদ রানা (৫০), মা মৌসুমী ইসলাম (৪০) ও ছোট মেয়ে জান্নাতুল (২০)। হত্যার অভিযোগে বড় মেয়ে মাহজাবিনকে (২৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ওই বাসা থেকে মাহজাবিনের স্বামী শফিকুল ইসলাম অরণ্য ও তার চার বছরের মেয়ে মারজান তাবাসসুম তৃপ্তিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং অরণ্যকে মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গতকাল শনিবার সকালে অভিযুক্ত মাহজাবিন নিজেই জাতীয় জরুরি সেবা ট্রিপল নাইনে কল করে পুলিশকে বলেন, ‘তিনজনকে মেরে ফেলেছি। আরো দু’জন বেঁচে আছে। তাদের জীবিত নিতে চাইলে দ্রুত চলে আসেন।’ তার এমন ফোন কল পেয়ে হাজী লাল মিয়া সরকার রোডের ওই বাসায় গিয়ে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে কদমতলী থানা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, খাবারের সাথে চেতনানাশক কিছু খাইয়ে অচেতন করে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে।
জানা গেছে, মা-বাবা ও বোনকে শুক্রবার রাতে খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরিবারের দাদী ছাড়া সবাইকে অচেতন করে বড় মেয়ে মাহজাবিন। এরপর একে একে বাবা, মা ও বোনের হাত-পা বেঁধে হত্যার কাজ সফল করে বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছে মাহজাবিন। আটকের পর হত্যায় জড়িত থাকার কথা অকপটে স্বীকারও করেছে সে। মাহজাবিন জানিয়েছে, তার মা মৌসুমী ইসলাম দুই বোনকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করত। অন্য দিকে বিষয়টি বাবা জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
থানা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, মাহজাবিন তার মা-বাবা ও বোনকে হত্যার পর লাশের পাশেই বসে ছিল। ভোরের আলো ফুটলে সে মনস্থ করতে থাকে পুলিশকে বিষয়টি জানাবে। এরপর সকাল ৯টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানায়। জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বলেন, এক নারী কল করে বলছিলেন, তাদের বাসায় তার বাবা মা ও বোনকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা হত্যা করল সে কিছুই বলছিল না। কিছুক্ষণ চুপ করে ছিল। পরে বাসার ঠিকানাও দেয়। এরপর দীর্ঘক্ষণ পর সে বলে, সেই তাদের খুন করেছে। এরপর সে বলেÑ আমি স্যারেন্ডার করতে চাই। আমরা দ্রুত যেন পুলিশ পাঠাই। না হলে বাকি যে দু’জন আহত অবস্থায় পড়ে আছে তাদেরও খুন করবে। তার এমন ফোন পেয়েই আমরা দেরি না করে বিষয়টি কদমতলী থানা পুলিশকে জানাই।
কদমতলী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জাকির হোসেন জানান, তারা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে মাহজাবিনকে আটক করেন। তার বাবা-মা ও বোনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। ওই পরিবারের শিশুসহ আরো দু’জনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
যে কারণে হত্যা : মাহজাবিন পুলিশকে জানিয়েছে, তার বাবা মাসুদ রানা ১২ বছর ধরে বিদেশে ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। কিন্তু বাবা বিদেশে থাকাকালীন তার মা মৌসুমী তাকে ও তার ছোট বোনকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করাত। এরই মধ্যে মাহজাবিনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু তার মায়ের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়নি। ছোট বোনকে দিয়েও চালাচ্ছিল সেই অনৈতিক কাজ। বাধ্য হয়ে মাহজাবিন তার ছোট বোনকে তার বাসায় নিয়ে যায়। সম্প্রতি তার মা ছোট বোনকে নিয়ে আসেন এবং আবারো একই কাজ করতে বাধ্য করছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে মাহজাবিন তার মাকে নিষেধ করেন এবং সেটি বন্ধেরও অনুরোধ করেন; কিন্তু মা শুনছিল না।
মাহজাবিনের বরাত দিয়ে পুলিশ জনায়, শুক্রবার রাতে সে স্বামী ও তার মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসে। এরপর রাতে খাবারের সাথে বাসার বৃদ্ধা দাদী ছাড়া সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়। একপর্যায়ে তারা অচেতন হয়ে পড়লে সে বাবা, মা ও বোনের হাত-পা বেঁধে তাদের হত্যা করে। এরপর সকালে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে।
কদমতলী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) বলেন, এ ছাড়াও হত্যার পেছনে আর কোনো কারণ রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
কদমতলী থানার ওসি মীর জামাল উদ্দিন বলেন, মাহজাবিনের স্বামী ও সন্তান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

সকল