২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সীমান্তে সংক্রমণ অব্যাহত

ঢাকায় আক্রান্তদের ৬৮ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট
-

দ্রুত গতিতেই ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণ। ইতোমধ্যে দৈনিক শনাক্ত চার হাজারের কাছাকাছি। সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণ আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞারা। প্রথম দিকে জানা থাকলেও এখন ভারতীয় (ডেল্টা) ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের উৎস পুরোপুরিভাবে শনাক্ত করতে না পারায় বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরনটি সাধারণ ভাইরাসের চেয়ে অনেক গুণ বেশি দ্রুত হারে ছড়িয়ে থাকে। এই ধরনটিতে আক্রান্তদের খুব দ্রুত ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়, আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হলে তাদের অনেক বেশি ভুগতে হচ্ছে। অতএব এ অবস্থায় শুরুতেই শনাক্ত করার ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
গতকাল আইসিডিডিআরবি জানিয়েছে ঢাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীর ৬৮ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২৪ হাজার ৮৭১টি নুমান পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৮৪০ জন। করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৩ জন। গত বুধবারের চেয়ে গতকাল করোনা শনাক্ত কম হলেও মৃত্যু বেড়েছে। বুধবার করোনা শনাক্ত হয় তিন হাজার ৯৫৬ জন। নমুনা পরীক্ষাসাপেক্ষে গত সারা দেশে গড়ে ১৫.৪৪ শতাংশ ছিল করোনা সংক্রমণের হার। কিন্তু কোনো কোনো স্থানে দেখা গেছে, নমুনা পরীক্ষার অর্ধেকই আক্রান্ত আবার কোনো কোনো স্থানে এক-তৃতীয়াংশ শনাক্ত হয়েছে ভাইরাসটিতে। যদি এসব অঞ্চলে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা খুব বেশি নয়। তবু বলা যায় আরো বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হলে ওই সব অঞ্চলে আরো বেশি সংক্রমিত রোগী পাওয়া যেতে পারত।
গতকাল বৃহস্পতিবারও রাজধানী ঢাকায় এককভাবে বেশি করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে। গতকাল রাজধানীতে আক্রান্ত হয়েছে ৯১৬ জন এবং নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৬৫৩ জন। গতকালকের মৃতদের মধ্যে ৩১ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। ১৫ জন ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। আবার মৃতদের ১৮ জন নারী এবং ৪৫ জন পুরুষ। খুলনা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা বিভাগে ১০, চট্টগ্রামে ১১ এবং রাজশাহী বিভাগে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণের দিক থেকে গতকাল শীর্ষে ছিল খুলনা বিভাগের জেলাগুলো। এ বিভাগের বেশির ভাগ জেলায় নমুনা পরীক্ষার সাপেক্ষে কোথাও অর্ধেক আবার কোথাও এক-তৃতীয়াংশ আক্রান্ত হয়েছে। যেমন বাগেরহাটে ১০৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৫২ জন শনাক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় ১২৯ নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যশোরে ৪৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় ২০৩ জন শনাক্ত হয়েছে।
ঝিনাইদহে ৬৮ নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩১ জনের। খুলনায় ৬৫৬ টি নমুনা পরীক্ষায় ৮১ জন, কুষ্টিয়ায় ২৭৪টি পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৩ জনের, মাগুরা জেলায় ৪৬টি নমুনায় ২১ জন শনাক্ত, মেহেরপুরে ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ২১ জন পাওয়া যায় করোনা আক্রান্ত। নড়াইলে ৯১ জনের মধ্যে ৩৮ জন এবং সাতক্ষীরায় ১৮৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮৮টি জনকে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: মোজাহেরুল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, এখনকার সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। তবে দেশব্যাপী জিনোম সিকোয়েন্স করা হলে তখন এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব। তবে ভ্যারিয়েন্ট যা-ই হোক সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার জন্য কাজ করতে হবে এবং এ জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সীমান্ত জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেশি। কোথাও নমুনা পরীক্ষার অর্ধেকই করোনা শনাক্ত হচ্ছে আবার কোথাও এক-তৃতীয়াংশ শনাক্ত হচ্ছে। সে কারণে সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে আপাতত নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে প্রত্যেকটা উপজেলায় এবং জেলা হাসপাতালগুলোতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার গবেষণাগার স্থাপন করে সন্দেহজনক প্রত্যেক ব্যক্তিকে এই টেস্টের আওতায় নিয়ে এসে শনাক্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে করোনা রোগীদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের প্রত্যেককে কোয়ারেন্টিন করতে হবে। একই চিকিৎসার জন্য উপজেলা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে সেখানে অক্সিজেন, মাস্ক, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, কম বয়সীদের চিকিৎসা লাগে না এমনিতেই এরা সুস্থ হয়ে যায়। তবে বয়স্কদের চিকিৎসা লাগে এবং এদের প্রতি বেশি নজর দিতে হবে। অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, শনাক্ত হওয়ার পর পরই চিকিৎসা শুরু করতে পারলে ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, মানুষকে করোনা টেস্টে উদ্বুদ্ধ করতে হবে এবং তাদের এ ব্যাপারে ‘ইনভল্ব’ করে ফেলতে পারলে তারাই আগ্রহী হয়ে নিজেরা পরীক্ষা করবেন এবং অপরকে উদ্বুদ্ধ করবেন।
ঢাকায় আক্রান্তদের ৬৮ শতাংশ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট : আইসিডিডিআর,বি
ঢাকায় শনাক্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর ৬৮ শতাংশ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা সংস্থা আইসিডিডিআর,বি। সম্প্রতি করা গবেষণায় তারা এমনটি দেখতে পেয়েছে বলে গতকাল জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।
আইসিডিডিআর,বির মিডিয়া ম্যানেজার এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান বিবিসিকে বলেছেন, মে মাসের শেষ সপ্তাহ এবং জুন মাসের প্রথম সপ্তাহজুড়ে গবেষণা চালানো হয়। এ সময়ে ঢাকার বাসিন্দা করোনাইরাস আক্রান্ত ৬০ জন ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের পর জিনোম সিকোয়েন্সিং করে সংস্থাটি এ তথ্য পেয়েছে।
তারিফুল ইসলাম বলেন, ‘সংগৃহীত নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে দেখা গেছে এর মধ্যে ৬৮ শতাংশ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট, ২২ শতাংশ দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট এবং বাকি নমুনাগুলো বড় অংশটি উহান ভ্যারিয়েন্ট ছিল।’ তিনি বলেছেন, এর মধ্যে অল্পসংখ্যক মানে এক-দু’টি ছিল নাইজেরিয়ার ভ্যারিয়েন্ট। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ও করোনা উপসর্গে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে চলতি মাসের ১৭ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৭১ জন।
এ দিকে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ রোধে সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতে ‘বিশেষ লকডাউনের’ মেয়াদ আরো এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে। গত বুধবার রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউজে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভা শেষে রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এই বিশেষ লকডাউনের মেয়াদ আগামী ২৪ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানোর কথা সাংবাদিকদের জানান। এর আগে গত ১০ জুন রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠক থেকে বিশেষ লকডাউনের আদলে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল জানান, লকডাউনের সময় সবধরনের ব্যবসায়িক দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। আশপাশের অন্য কোনো জেলা থেকে যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না, রাজশাহী থেকেও কোনো যানবাহন জেলার বাইরে যেতে পারবে না। রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ সব দূরপাল্লার রুটের যানবাহন ও ট্রেন চলাচল আগের মতোই বন্ধ থাকবে। তবে রোগী, খাদ্য, ওষুধ ও পণ্যবাহী পরিবহন, সংবাদমাধ্যম এবং লাশ দাফন ও সৎকার কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিসহ অন্য সব জরুরি সেবাদানকারীর ক্ষেত্রে জারিকৃত এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সর্বোচ্চ ১৮ জন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় চারজন, কুষ্টিয়ায় চারজন, যশোরে তিনজন, চুয়াডাঙ্গায় দু’জন, মেহেরপুরে দু’জন, বাগেরহাটে একজন, মাগুরায় একজন ও ঝিনাইদহে একজন মারা যান। এ দিকে খুলনা করোনা হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা এবং উপসর্গ নিয়ে মোট সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া খুমেক পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় ৩৮৪ জনের নমুনা ১১১ জনের করোনা পজেটিভ আসে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছেন আরো দুইজন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুনভাবে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৬৯ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসের নিয়মিত বুলেটিনে এমন তথ্য জানিয়েছে। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনায় মোট আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ৪৬৬ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৬৪৭ জন।
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল এক নারীসহ তিন ব্যক্তি মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় সরকারি হিসেবে গতকাল পর্যন্ত ৩৩৬ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতরা হলেনÑ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার আনোয়ারা বেগম (৪৯), ধুনট উপজেলার আবদুর রহমান (৬৫) ও বগুড়া সদরের ইকবাল হোসেন (৬৫)। এ ছাড়া জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৭ নমুনার ফলাফলে নতুন করে ৪২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৬ জন, সুস্থ হয়েছে ১২ হাজার ১০১ জন এবং মারা গেছে ৩৩৬ জন।
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে মাত্র ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে এক নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সামেক ও শহরের বুশরা হাসপাতালে করোনা উপসর্গে মোট সাতজনের মৃত্যু হলো। এ নিয়ে করোনাভাইরাস উপসর্গে সাতক্ষীরা জেলায় ১৬ জুন পর্যন্ত মারা গেছে অন্তত ২৫৫ জন। আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৫৫ জন। অপর দিকে সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময় সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৪৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চলতি মাসের ১৬ দিনে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে দুই হাজার ১৬০টি নমুনা পরীক্ষা করে এক হাজার ৮১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। জুন মাসের গড় হার ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ। এ দিকে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলায় চলমান লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আবারো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৯ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন, যা এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ৪৬ দশমিক ০৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন দু’জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো চারজন। চুয়াডাঙ্গা সদর ও দামুড়হুদা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালাচ্ছে ভাইরাসটি। চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ৭৪ জন।
নোয়াখালী অফিস জানায়, নোয়াখালীতে করোনার প্রকোপ না কমায় ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলমান লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, করোনার প্রকোপ না কমায় চলমান এ লকডাউন দ্বিতীয় দফায় বর্ধিত করা হয়েছে। আগামী ২৫ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এ লকডাউন কার্যকর থাকবে। এ দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৯ জনে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরো ১০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ।
চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোরের চৌগাছায় বাড়ছে কাশি-ঠাণ্ডা ও জ্বরের প্রাদুর্ভাব। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য। তবে এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। আশঙ্কাজনক হারে জ্বরের রোগী বেড়ে যাওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে করোনা ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জরুরি মিটিং করে চৌগাছা পৌর শহর সাত দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ ১ জুন থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৪ জন রোগী করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন তিনজন। সর্দি জ্বর, গলা ব্যথা নিয়ে গত সাত দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২০০ জন রোগী। জ্বরসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ২০০ থেকে ৩০০ জনের মতো রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement