১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অস্তিত্ব সঙ্কটে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম

-

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের এমন চিত্র অবিশ্বাস্য। অযতœ অবহেলায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়া এ এ মসজিদটির বাস্তব চিত্র বলে দিচ্ছে তা কতটা অস্তিত্বঝুঁকিতে রয়েছে। বয়সের ভারে রুগ্ণ হয়ে পড়া এ মসজিদের সংস্কার নেই ১১ বছর। ফলে খসে পড়ছে দেয়ালের প্লাস্টার। ছাদ চুয়ে পড়ছে বৃষ্টির পানি। অপরিচ্ছন্ন অজুখানা, টয়লেটে গা শিউরে ওঠে। অজুখানার ভাঙা পানির টেপের নিচে পড়ে আছে ফেনসিডিলের বোতল। একপাশে অশ্রয় গেড়েছে মাদকসেবীরা। সব মিলিয়ে এখন কঠিন বাস্তবতায় মাথা উঁচু করে আছে দেশের সব চাইতে বড় এ জাতীয় মসজিদটি।
সরেজমিন দেখা যায় মসজিদটিতে বহু বছর সংস্কার কিংবা রঙতুলির আঁচড় পড়েনি। ফলে খসে পড়েছে দেয়ালের রঙ। ভেতরের কিছু কিছু জায়গায় দেয়ালের প্লাস্টার খুলে পড়েছে। কোথাও দেখা দিয়েছে ফাটল। আবার খসে পড়া প্লাস্টারের ভেতরে রডে মরিচাও ধরেছে। বৃষ্টিতে ভেতরে পানি চুয়ে পড়ার দৃশ্যও ধরা পড়েছে। ভেতরের বিভিন্ন জায়গা অপরিচ্ছন্ন। অনেক জায়গায় অন্ধকার নোংরা ভুতুড়ে। মনে হয় যেন দীর্ঘদিন মানুষের ছায়াও পড়েনি।
মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে গিয়ে দেখা যায় সেখানে আস্তানা গেড়েছে মাদকসেবীরা। নামাজরত মুসল্লিদের পাশেই তারা আড্ডা দিচ্ছে। কেউ নেশা করছে আবার কেউ ঘুমুচ্ছে। পূর্ব গেটে গিয়ে দেখা যায় অসমাপ্ত সংস্কারকাজে সবই এলোমেলো। সামনে ময়লার স্তূপ। মসজিদের দক্ষিণ পাশের অজুখানায় গিয়ে দেখা যায় অজু করার কোনো পরিবেশ নেই। ভাঙা টেপ। নিচে ময়লার স্তূপ। আবার কোথাও কোথাও পড়ে আছে ফেনসিডিলের বোতল। একই অবস্থা টয়লেটের।
কয়েকজন মুসল্লি জানান, প্রায় ১১ বছর ধরে এ মসজিদে কোনো সংস্কার হচ্ছে না। সর্বশেষ ২০১০ সালে সংস্কারকাজ হয়। তখন মসজিদের দক্ষিণাংশের কলেবর বাড়ানো হয়। সে সাথে আটটি অজুখানা করা হয়েছিল। কিন্তু এই অজুখানার পাঁচটিই এখন বন্ধ।
একাধিক মুসল্লি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, যে অজুখানাগুলো চালু রয়েছে সেগুলোতে অজুর কোনো পরিবেশ নেই। এগুলো এত অপরিচ্ছন্ন যে সেখানে গেলে অজু তো দূরের কথা গা শিউরে ওঠে। তাদের অভিযোগ, মসজিদের একটি অংশে নেশাখোররা আশ্রয় নিয়েছে। তারা সেখানে নেশা সেবন ও বিক্রির পাশাপাশি যখন তখন ঘুমিয়ে পড়ে। তাদের অপতৎপরতায় বিব্রত মুসল্লিরা।
এ বিষয়ে মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) মো: বজলুর রশীদ গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, এ বিষয়গুলো সমাধানে তারা একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যেই এর কার্যক্রম শুরু হবে। আর পরিচ্ছন্নতা ও নেশাখোরদের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনার ভিত্তিতে এরই মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী ১৯৫৯ সালে ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদ সোসাইটি’ গঠনের মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। মসজিদের নির্মাণ ১৯৬৮ সালে সম্পন্ন হয়। এর স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। তৎকালীন পাকিস্তানের বিশিষ্ট শিল্পপতি লতিফ বাওয়ানি ও তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে এই মসজিদ নির্মাণের পদক্ষেপ গৃহীত হয়। মসজিদে একসাথে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। ফলে ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের দশম বৃহত্তম মসজিদ। তবে মসজিদটিতে জুমার নামাজ ছাড়াও বিশেষত রমজানের সময় অত্যধিক মুসল্লির সমাগম হয় বিধায় বাংলাদেশ সরকার মসজিদের ধারণক্ষমতা ৪০ হাজারে উন্নীত করে। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে।


আরো সংবাদ



premium cement
সবল-দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কাজ শেষ হতে কত দিন লাগবে? জনগণের শক্তির কাছে আ'লীগকে পরাজয় বরণ করতেই হবে : মির্জা ফখরুল টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের ট্রাকচাপায় নিহত ১৪ : তদন্ত কমিটি গঠন, চালক-হেলপার গ্রেফতার নেতানিয়াহুর একগুঁয়েমির কারণে মধ্যস্তকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাবে কাতার! আফ্রিদির সাথে বিবাদের বিষয়ে কথা বললেন বাবর বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত অধ্যাপক মাযহারুল ইসলামের বাসভবনে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইউক্রেনের ২০টি ড্রোন, ২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্কিৃয় করল রাশিয়া

সকল