২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এসএসএফকে দক্ষ করা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

-

প্রযুক্তির আধুনিকায়নে অপরাধের ধরন পরিবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়েই সরকার স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সকে (এসএসএফ) প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে তুলছে। বিজ্ঞান বা আধুনিকতা যেমন আমাদের সুযোগ দিচ্ছে, তেমনি জীবনে ঝুঁকিরও সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সবসময় চেষ্টা ছিল আধুনিক জগতের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের এই বিশেষ বাহিনী (এসএসএফ) সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত হবে এবং তাদের দক্ষতাও সবসময় বৃদ্ধি পাবে। সেজন্য দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ নানারকম সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার সকালে এসএসএফের ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তার কার্যালয়ে (পিএমও) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভূরাজনীতি যেমন পরিবর্তনশীল তেমনি অপরাধ জগৎটাও পরিবর্তিত হচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের সুযোগ করে দিচ্ছে, জীবনকে গতিশীল করার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রকেও বিস্তৃত করছে। একইভাবে অপরাধী তথা জঙ্গিদেরও সুযোগ করে দিচ্ছে। কাজেই আমার সবসময় চেষ্টা ছিল এই আধুনিক জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলার।’ তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি বা তাদের পরিবারবর্গই নয়, বিদেশী অতিথিরা এলে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে এসএসএফের একটা বিরাট ভূমিকা থাকে। আর এটা একটা কঠিন দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী এসএসএফ সদস্যদের সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিদেশ থেকে যে যখনই এসেছেন আমাদের এসএসএফ সদস্যরা এত চমৎকারভাবে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন যার প্রশংসা প্রত্যেকেই প্রায় করেছেন। সকলেই এসএসএফ সদস্যদের দক্ষতা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছেন। যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আমাদের মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে সফলতার পেছনেও এই এসএসএফ সদস্যদের অনেক অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, এক দিকে যখন করোনা অন্য দিকে ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে প্রটোকল এবং নিরাপত্তা দেয়া চ্যালেঞ্জিং ছিল। যাতে তারা সফল হয়েছেন। এজন্য এসএসএফের সব সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার দল, সশস্ত্রবাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সকলের অবদানের কথাও তিনি স্মরণ করে বলেন, সকলের সহযোগিতার জন্যই এটা আমরা করতে পেরেছি। এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো: মজিবুর রহমানও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কন্যা এবং অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পিএমও সচিব মো: তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং সরকার ঘোষিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার জন্য ১৯৮৬ সালে রাষ্ট্রপতি নিরাপত্তা বাহিনী গঠিত হয়। পরে এই বাহিনীকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স হিসেবে নতুন নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও আনসার বাহিনী থেকে প্রেষণে নিযুক্ত অফিসারদের নিয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স গঠিত।
‘সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ আরো সবুজ হোক’ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ উন্নত করে সুন্দর দেশ গঠনে দেশকে সবুজে আচ্ছাদিত করে ফেলতে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ আরো সবুজ হোক, আরো সুন্দর হোক এবং এর পরিবেশটা যেন ঠিক থাকে। এই বাংলাদেশের পরিবেশ এবং প্রতিবেশ ঠিক রেখে এর সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন আমরা করতে চাই। সেই উন্নয়নের জন্যই আমাদের এই পদক্ষেপ।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে কৃষক লীগ আয়োজিত সারা দেশে বৃক্ষরোপণ অভিযান উদ্বোধনকালে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
’৯৬ সালে দেশের বনভূমির পরিমাণ মাত্র ৭ শতাংশ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে তার সরকারের প্রচেষ্টায় দেশের বনভূমির পরিমাণ ২২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কেননা সারা দেশে সামাজিক বনায়ন থেকে শুরু করে মানুষের গৃহে বাগান তৈরি করার প্রচেষ্টাও তার সরকার বাস্তবায়ন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইভাবে আমরা চাই আমাদের বনায়ন বৃদ্ধি পাবে, পরিবেশ উন্নত হবে এবং প্রতিবেশ সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। সেই সাথে আমাদের দেশটা সারাবিশে^ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকেই অন্তত এই তিনটি গাছ লাগাবেনÑ একটা বনজ, একটা ফলদ এবং একটা ভেষজ গাছ। কারণ গাছ আপনাদের আর্থিকভাবে সচ্ছলতা দেবে, পাশাপাশি পরিবেশও রক্ষা হবে। আবার পুষ্টির জোগানও দেবে। কাজেই সেদিকে লক্ষ রেখেই এই তিনটি গাছ লাগানোর জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কন্যা অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদকে সাথে নিয়ে গণভবনে দু’টি গাছের চারা রোপণ করে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ১ আষাঢ় আমরা দলের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ করি। ১৯৮৩ সালে আমাদের দলের সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন প্রতি বছরই এই দিনে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়। আর এই দায়িত্বটা পড়েছে আমাদের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ওপর।
কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ্র এবং সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement