২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতার শপথ

-

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় রাজভবনে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে শপথ নেন তিনি। শপথ নেয়ার পরপরই মমতা জানান, তার প্রথম কাজ হবে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি মোকাবেলা করা। শপথ অনুষ্ঠান শেষে কর্মস্থল নবান্নে গিয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। আনন্দবাজার।
রাজ্যে ২১৩টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তবে নন্দীগ্রাম আসন থেকে পরাজিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন উঠেছিল, বিধায়ক না হয়েও কি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ায় কোনো বাধা থাকে? কিন্তু না, পরে নিশ্চিত হওয়া গেল, সংবিধান অনুযায়ী মমতার শপথগ্রহণে কোনো বাধা নেই। জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের পরের দিন আজ বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার জন্য মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে।
উল্লেখ, গত সোমবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রাজ্যপালের কাছে নতুন সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছে অনাড়ম্বর ও সংক্ষিপ্ত। বুধবার ২১৩ আসন নিয়ে একাই শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় সময় ১০টা ২৫-এ কালীঘাটের বাড়ি থেকে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা দেন তৃণমূল নেত্রী। তার সাথে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর ও ফিরহাদ হাকিম। সংক্ষিপ্ত হলেও অতিথি তালিকায় ছিলেন বিরোধী শিবিরের নেতাদের নামও। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিধানসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীদের রাজনৈতিক সৌজন্য মেনেই আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় ছিলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট তথা ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। নির্বাচন প্রাক্কালে সৌরভের বিজেপি-যোগ ঘিরে নানা গুঞ্জন আসে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সৌরভের নাম শোনা যায়। অমিত শাহের সাথে তার সখ্যতা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে চর্চা চলে। যদিও এর কোনোটিতেই সায় দেননি ‘প্রিন্স অব ক্যালকাটা’। তবে মমতার শপথ তালিকায় মহারাজের নাম থাকাকে তাৎপর্যপূর্ণই মনে করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন
কূটনৈতিক প্রতিবেদক জানান, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন। মমতার অঙ্গীকার ও সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে এবং অনিষ্পন্ন ইস্যুগুলোর সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
গতকাল বুধবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয়বার শপথ নেয়া মমতা ব্যানার্জিকে লেখা চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিনন্দন জানান। চিঠিতে তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ধারাবাহিকভাবে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনে জনগণের সমর্থন লাভ করেছে, যা আপনার নেতৃত্বের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের জনগণের অব্যাহত আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন। আমরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ আপনি বাঙালির দীর্ঘলালিত মূল্যবোধ ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ’ ধারণ করেছেন এবং এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সারা জীবন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিদ্যমান এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের পারস্পারিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো আরো প্রসারিত হয়েছে বলে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, অবিভক্ত ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, মূল্যবোধ এবং বংশানুক্রমিক সংযোগ দুই দেশের জনগণের সম্পর্ককে অনন্য ও শক্তিশালী করেছে। বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের জনগণ বাংলাদেশীদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষ এবং বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের এ বিশেষ বছরে আমি পশ্চিমবঙ্গের জনগণসহ ভারতের জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমর্থন ও আত্মত্যাগকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, অজানা শত্রু করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে দুই দেশের পারস্পারিক সম্পদ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে বাংলাদেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সবাই সম্মিলিতভাবে এ মহাবিপদ থেকে মুক্ত হয়ে শিগগির স্বাভাবিক জীবন ও জীবিকায় ফিরতে পারব।


আরো সংবাদ



premium cement