সরকারি চাকরি করা হলো না শাহাদাতের
- এস এম রাসেল মাদারীপুর
- ০৫ মে ২০২১, ০১:৩১
পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ শাহাদাত হোসেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবে মার্স্টাস শেষ করে চাকরির জন্য বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছেন। ঈদে বাড়িতে আসার সময় গত সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পদ্মার বুকে বাল্কহেড ও স্পিডবোটের সংঘর্ষে প্রাণ হারান তিনি। শাহাদাত হোসেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।
পরিবারের লোকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের আদম আলী মোল্লার ছয় ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ শাহাদাত হোসেন। সবার ছোট হওয়ায় তার পড়াশুনার দিকে পরিবারের সবার নজর বেশি ছিল। আর শাহাদাতও মেধার স্বাক্ষর রাখে প্রতিটি ক্লাসে। পরিবার ধর্মীয় অনুশাসনে থাকায় আল-বাইতুল মামুর সিনিয়র মাদরাসা থেকে জিপিএ ৪.৮১ পেয়ে দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর আর মাদরাসায় পড়াশুনা হয়নি। এইচএসসি পাস করেন শিবচর উপজেলার বহরামগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে। মানবিক শাখায় সেখানেও জিপিএ ৪.৪০ পান। মেধাবী শাহাদাত এরপর ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে সরকারি চাকরির জন্যে বিভিন্ন দফতরে আবেদনও করে যাচ্ছিলেন শাহাদাত। এবার মহামারী করোনায় লকডাউন হওয়ায় আগেভাগে ঈদ করতে বাড়িতে আসছিলেন শাহাদাত। সেটি আর হলো না। সোমবারের বাল্কহেড আর স্পিডবোটের সংঘর্ষে প্রাণ গেল শাহাদাতের। শাহাদাতের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না পরিবার। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো এলাকাজুড়ে।
শাহাদাতের বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সব আশা-ভরসা শেষ হইয়া গেল। আমরা অন্য ভাই-বোন বেশি পড়াশুনা করতে পারি নাই। আমাদের ছোট ভাই, কলিজার টুকরাকে পড়াশুনা করাইছি। সে বড় চাকরি করে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। সেটি আর হলো না। এখন আমরা কী নিয়া বাঁচুম।’
শাহাদাতের বন্ধু শাহিন মিয়া জানান, ‘ছোট থেকে শাহাদাত আর আমি একসাথে বড় হইছি। ও অনেক মেধাবী ছিল। জগন্নাথ থেকে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে। সরকারি চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছে। হয়তো করোনা না হলে চাকরি হয়েও যেত। এখন আর কোনো পরীক্ষা দিতে হবে না। সব কিছুর ঊর্ধ্বে শাহাদাত।’
সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি স্পিডবোটের সাথে কাঁঠালবাড়ী এলাকায় বাল্কহেডের সাথে সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর আহত উদ্ধার হয় আরো পাঁচজন যাত্রী। নিহতের তালিকায় শিবচরের শাহাদাত হোসেনও ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা