২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মহামারীর মধ্যে তিন গুণ খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা পাচ্ছে কৃষকরা : প্রধানমন্ত্রীা

-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার কৃষকদের সর্বপ্রকার সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন, যাতে তারা অধিক খাদ্য উৎপাদন করতে পারেন এবং কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাবে চলমান উৎপাদনকে দুই থেকে তিন গুণ বাড়াতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে উৎপাদন যাতে দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ হতে পারেÑ তার জন্য যথাযথ মাটি পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রাতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন। প্রায় পৌনে ৮ মিনিটের ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী চলমান কোভিড-১৯ এর সময় উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকেই কৃষকদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় তাদের কষ্ট লাঘব হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম যা বিএনপি সরকারের আমলে ৯০ টাকা ছিল, তা বর্তমানে ১২ টাকায় নামিয়ে এনেছি। গবেষণার মাধ্যমে উন্নত বীজ আমরা উৎপাদন করছি এবং সেই বীজ আমরা সরবরাহ করছি।’
কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ যেটি জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল, তার সরকার সেই লক্ষ্য কার্যকর করে দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ৭০ শতাংশের ওপর ভর্তুকি দিচ্ছি এবং কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ করে যাচ্ছি, যাতে আমাদের কৃষকরা আরো অধিক পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন করতে পারে। তিনি বলেন, আমরা উন্নতমানের বীজ সরবরাহ ও প্রতিটি কৃষি-উপকরণ কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেই সাথে সেচ কাজে কৃষক যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন সেখানে আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি এবং কৃষকের বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয় তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং বর্তমানে সেচ কাজে আমরা সোলার-প্যানেল ব্যবহারও আমরা শুরু করে দিয়েছি।
ন্যায্যমূল্য যাতে আমাদের কৃষকরা পায়, তার জন্য সরকার যথাযথ দাম নির্দিষ্ট করেছে এবং কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকের গুদামে যাতে খাদ্য সংরক্ষিত থাকে, প্রত্যেক কৃষকের ঘরে খাদ্য যেন থাকে, কারণ যারা উৎপাদন করবে তারা খাবার পাবে না বা তাদের ছেলেমেয়েরা খাদ্যে কষ্ট পাবেÑ এটি হতে পারে না। আমরা সে ব্যবস্থাও নিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি এবং সেই সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, এবারো ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সে ধরনের সহযোগিতা পাবেন। তার জন্য থোক বরাদ্দ রাখছি।
তার সরকার গবেষণার ওপর সবসময় অধিক গুরুত্বারোপ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন থেকেই কৃষি গবেষণায় আমরা গুরুত্ব দেই। আজকে গবেষণার ফলে আরো নতুন নতুন ধরনের ফসল উৎপাদন; তরিতরকারি, ফলমূল ও দানাদার খাদ্যশস্য থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য যেন উৎপাদন হতে পারে তার জন্য ব্যাপকহারে গবেষণা হচ্ছে এবং উন্নতমানের বীজ আমরা সরবরাহ করছি। এর ফলে আজকে কৃষক খুব অল্প কষ্টে অধিক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করতে পারছেন। ধান, গম, ভুট্টা ও সব ধরনের ফসল উৎপাদন করার সুযোগ পাচ্ছেন। তা বাজারজাত করার ব্যবস্থাও আমরা করে দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা করোনায় ধান কাটার সমস্যায় তার দল এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের সময় যখন ধানকাটা নিয়ে সমস্যা হলোÑ আমি যখন আমার দলের নেতাকর্মী বিশেষ করে ছাত্রলীগকে আহ্বান করলাম, আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ থেকে শুরু করে সকলে মাঠে নেমে পড়লেন। কৃষকের সাথে কঁাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলে দিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাংলাদেশের সকল কৃষক-কৃষাণীকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। কারণ তারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাদ্য উৎপাদন করেন। সেই খাদ্য খেয়েই আমরা বেঁচে থাকি। কাজেই তাদের প্রতি আমাদের সব সময় সমর্থন রয়েছে এবং তাদের সহযোগিতা করা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের কর্তব্য মনে করে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর যখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতা দখল করে এ দেশের কৃষকদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করল। সার চাইতে গিয়ে ১৮ জন কৃষককে জীবন দিতে হলোÑ এ ধরনের ঘটনাও বাংলাদেশে ঘটেছে। তিনি বলেন, আমি কৃষকলীগকে ধন্যবাদ জানাই। আজকের এই দিনে আমার দুঃখ একটাইÑ করোনাভাইরাসের কারণে আমি নিজে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। সকলের সাথে দেখাও আমার হলো না।
প্রধানমন্ত্রী করোনার সম্পর্কে পুনরায় সতর্ক করে বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, মাস্ক পড়তে হবে। গার্গল করা, ভাপ নেয়া, যেখানে বেশি জনসমাগম সেখানে না যাওয়া, দূরত্ব বজায় রেখে চলা এবং আমরা যে স্বাস্থ্য-সুরক্ষার নির্দেশনাগুলো দিয়েছিÑ অবশ্যই সে নির্দেশনাগুলো মেনে নিজেকে ও অপরকে সুরক্ষিত করুন ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনাভাইরাসের হাত থেকে যেন দেশ ও জাতি মুক্তি পায়Ñ তার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সবাই দোয়া করেনÑ বাংলাদেশ এই মহা-দুর্যোগ থেকে যেন দ্রুত মুক্তি পেতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল