১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টাকা তুলতে ব্যাংকে উপচে পড়া ভিড়

এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় গ্রাহক হয়রানি
-

মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় আগামী ১৪ এপ্রিল বুধবার থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা আসছে। একই সাথে পরের দিন থেকে পবিত্র রমজান শুরু হচ্ছে। এ কারণে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা এবং নগদ টাকা হাতে রাখতে গ্রাহক ছুটছে ব্যাংকের দিকে। অনেকেই প্রায়োজনীয় টাকা উত্তোলন করতে এটিএম বুথে ছুটছে। কিন্তু দুপুরের আগেই বেশির ভাগ এটিএম বুথে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় গ্রাহক ব্যাংকের শাখায় যেতে থাকে। গতকাল সপ্তাহের প্রথম ব্যাংক খোলার দিনে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় ছিল গ্রাহকের উপচে পড়া ভিড়। গ্রাহকদের টাকা সরবরাহ করতে গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময়ের পরেও ব্যাংকের শাখায় লেনদেন করতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহ থেকেই সীমিত পরিসরে ব্যাংকে লেনদেন হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে গত ৪ এপ্রিল থেকে ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা কমিয়ে আড়াই ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হয়েছে। ব্যাংক লেনদেন হচ্ছে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, এক দিকে ব্যাংকে লেনদেনের সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে, সেই সাথে বেড়েছে টাকা উত্তোলনের চাপ। ফলে ব্যাংকাররা সীমিত সময়ের মধ্যে বেশি গ্রাহকের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। একটি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, ব্যাংকাররা ঠিকই ব্যাংকে আসছেন। শুধু সময় কমিয়ে দেয়ায় অল্প সময়ে গ্রাহকের ভিড় বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে লেনদেনের সময়সীমা না বাড়ালে ব্যাংকারদের পক্ষে বাড়তি টাকা উত্তোলনের চাপ সামলানো কঠিন হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গ্রাহকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় আজ থেকে ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা আরো আধা ঘণ্টা বাড়িয়ে ১টা পর্যন্ত পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা বাড়িয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত করা হলো। পরবর্তীতে ব্যাংকের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আরো ২ ঘণ্টা অর্থাৎ ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
এ দিকে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে কড়া লকডাউনের ঘোষণা আসছে। ওই সময়ে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকতে পারে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় সরকার লকডাউন কড়াকড়ি করার ঘোষণা দিয়েছে। এমনি পরিস্থিতিতে মানুষ অনেকটা ঘরবন্দী হয়ে পড়বে। তাই প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারতে ও নগদ টাকা হাতে রাখতে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে ভিড় করেন। সকাল থেকে এটিএম বুথগুলোতে টাকা উত্তোলনের চাপ থাকে। কিন্তু এক সাথে বেশি মানুষের টাকা উত্তোলনের চাপ থাকায় দুপুরের আগেই বেশির ভাগ এটিএম বুথে টাকা শেষ হয়ে যায় বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করতে অনেকেই ব্যাংকের শাখায় আসেন। সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা বেঁধে দেয়ায় নির্ধারিত সময়েই প্রতিটি ব্যাংকের শাখায়ই গ্রাহকের উপচে পড়া ভিড় থাকে। বাধ্য হয়েই গ্রাহকের চাপ সামলাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া সময়সীমার চেয়ে বেশি সময়ে লেনদেন করতে দেখা গেছে।
ব্যাংকের মতো এটিএম বুথগুলোতে ছিল গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন। এটিএম বুথের ধারণক্ষমতা সীমিত। কিন্তু গতকাল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়তি টাকা উত্তোলন করায় বার বার এটিএম বুথে টাকার সঙ্কট দেখা দেয়। গ্রাহকরা এক বুথ থেকে টাকা না পেয়ে অন্য বুথে যায়। এ কারণে গ্রাহকদের বাড়তি পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করতে হয়।
এ বিষয়ে একটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের ভয় উপেক্ষা করে কোনো গ্রাহক যখন তার প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংকের শাখায় টাকা উত্তোলন করতে আসেন তখন শাখা ব্যবস্থাপকের গ্রাহকের অর্থ সরবরাহ করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প থাকে না। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা শাখায় এসেছেন তাদেরকে একসাথে শাখায় প্রবেশ করিয়ে ব্যাংক শাখার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। বিকল্প ফটক দিয়ে ভেতরের গ্রাহকদের লেনদেন শেষে বের করা হয়। ওই শাখা ব্যবস্থাপকের মতে, ব্যাংক লেনদেন কমপক্ষে ৩টা করা প্রয়োজন। অন্যথায় স্বল্প সময়ে গ্রাহকের ভিড় সামলানো সম্ভব হয় না। এ সময় স্বাস্থ্য বিধি মানাও কঠিন হয়ে পড়ে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল