২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
২৯ মে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন

করোনার নামে মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র জনতা মেনে নেবে না : হেফাজত

-

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, করোনার অজুহাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদরাসা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র দেশের তৌহিদী জনতা মেনে নেবে না। লকডাউনের নামে নামাজে মুসল্লি সীমিত করাসহ শরিয়তবিরোধী কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্যে কুরআন ও হাদিসের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা সরকারেরই নৈতিক কর্তব্য। তাই পবিত্র মাহে রমজানে হিফজখানা, নূরানী, মক্তব চালু রাখতে হবে। মসজিদে সুন্নাহ মুতাবেক নামাজ তারাবিহ, ইতিকাফ চলবে। দেশের সব মাদরাসা ও মসজিদে করোনা মহামারী থেকে মুক্তি ও সমকালীন সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য কুনুতে নাজেলার আমল চালু করার জন্য নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।
গতকাল সকালে দারুল উলুম হাটহাজারী মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এক বিশেষ জরুরি সভায় নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মাওলানা হাফেয তাজুল ইসলাম (পীর সাহেব ফিরোজশাহ), মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা শোআইব জমিরী, মাওলানা ওমর মেখলী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুনির হুসাইন কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদরিস, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, ড. নূরুল আবসার আজহারী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা ইলিয়াস হামিদী, মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
সভায় বলা হয়, বিগত ২৬ মার্চ হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের ওপর পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও সরকারদলীয় হেলমেট বাহিনী কর্তৃক আক্রমণের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল বের করে। হাটহাজারী ও বি-বাড়িয়ায় মিছিল বের হলে পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলি করে পাঁচজনকে শহীদ করে। এ হত্যাকাে র প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম ২৭ মার্চ বিক্ষোভ ও ২৮ মার্চ শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু হেফাজতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ২১ জনকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ ও সরকারদলীয় ক্যাডার বাহিনী।
আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, হেফাজত কোনো তা ব চালায়নি; বরং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরদের দিয়ে গুপ্ত হামলার তা ব চালিয়ে রাজনৈতিকভাবে এখন হেফাজতকে দোষারোপ করা হচ্ছে। সরকারের লোকজন এবং কিছু ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া এখন আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
সভায় আরো বলা হয়, আমরা জানতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতাল চলাকালীন কারা তা ব চালিয়েছিল? কারা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে, নিশ্চয়ই সেখানকার সিসি ক্যামেরাগুলোতে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন। কিন্তু নিরীহ আলেম, ওলামা, মাদরাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানি করবেন না। অবিলম্বে গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করুন। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিন।
সভায় আরো বলা হয়, করোনার অজুহাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদরাসা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র দেশের তৌহিদী জনতা মেনে নেবে না। করোনা মহামারী থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কুরআন তিলাওয়াত, যিকির, তাসবিহ পাঠ ও দোয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্যে কুরআন ও হাদিসের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা সরকারেরেই নৈতিক কর্তব্য। তাই পবিত্র মাহে রমজানে হিফজখানা, নূরানী, মক্তব চালু রাখতে হবে। মসজিদে সুন্নাহ মুতাবেক নামাজ তারাবিহ, ইতিকাফ চলবে। লকডাউনের নামে শরিয়তবিরোধী কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না। যথানিয়মে তাফসির, দাওয়াত ও তালিমের কাজ চালু রাখতে হবে। সভায় যেকোনো সঙ্কটকালে হেফাজতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
সভায় আগামী ২৯ মে ২০২১ শনিবার হাটহাজারীতে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement