২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকান ধরন থাকা সত্ত্বেও টিকা নিতে হবে

-

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব থাকা সত্ত্বেও করোনার টিকা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারলেও টিকাটি নেয়া থাকলে আক্রান্ত ব্যক্তির গুরুতর ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, টিকা নেয়া থাকলে অন্তত আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা এমন হবে না যে কারণে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হতে পারে।
মহাখালীর আইসিডিডিআরবি গত মার্চের শেষ সপ্তাহে যতগুলো জিনোম সিকুয়েন্সিং করেছে এর ৮১ শতাংশ দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট (করোনা ভাইরাসের রূপান্তরিত নতুন ধরন) পেয়েছে বলে জানিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকান এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অকার্যকর। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ওই ভ্যারিয়েন্টে (বি.১.৩৫১.) আক্রান্ত মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের রোগীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারেনি। সে কারণে দক্ষিণ আফ্রিকান সরকার অ্যাস্টাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনার টিকা ফেরত পাঠিয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই এই ভ্যারিয়েন্টটি বিশ্বের ৩৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে তখন পরীক্ষায় পাওয়া যায়।
চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল, গণস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে বলে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিল। তারা তখন জানিয়েছেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টটির মতো করোনার একটি ভ্যারিয়েন্ট ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশে বসবাসরত মানুষের মধ্যে পাওয়া গেছে। তখন অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, যাদের মধ্যে এই ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া যায় তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের ট্রেসিং করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গত ২৪ মার্চ পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে দুই হাজার ২৫১ জনকে করোনা আক্রান্ত পাওয়া যায়। আইসিডিডিআরবির গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত ৬ জানুয়ারিতেই ইউকে ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে বলে তারা জেনেছে। তারা মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পরীক্ষায় যে ক’টি নতুন ধরন পেয়েছে এর ৫২ শতাংশই ইউকে ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছে বলে আইসিডিডিআরবি জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা আগেই সরকারকে সতর্ক করেছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকান ধরনের ভ্যারিয়েন্টটির ব্যাপারে। বলেছিলাম, ওই ভ্যারিয়েন্টটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু সরকার আমাদের কথা আমলে নেয়নি। শুধু তাই নয়, কোনো কথাই আমলে নিচ্ছে না। করোনা আক্রান্ত বেড়ে গেলে তো হাসপাতালে রোগীরা জায়গা পাবে না, এখনই পাচ্ছে না। রোগীদের আইসিইউ লাগবে কিন্তু এত আইসিইউ সরকারের নেই। তা ছাড়া আইসিইউর রোগীদের কমপক্ষে ৪-৫টি ইনজেকশন দিতে হয়। প্রতিটি ইনজেকশন কমপক্ষে এক হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু আমি যে ওষুধ নীতি করেছিলাম তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারলে এই একই ইনজেকশনের দাম পড়ত ৩০০ টাকা। আমরা বলেছিলাম অ্যান্টিবডি টেস্ট করাতে। কিন্তু আমাদের অ্যান্টিবডি কিটের অনুমোদনই দিলো না সরকার। তাহলে পিসিআর মেশিনে চাপ কমে যেত। তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে চিন্তা করতে হবে সামগ্রিকভাবে।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিহাদ আদনান বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে আমরা যে পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছিলাম সেটা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের কাছাকাছি একটি ধরন। তখন আমরা বলেছিলাম, বাংলাদেশে খুব দ্রুত নতুন ধরনটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এখন আইসিডিডিআরবি বলছে, বাংলাদেশে তারা অনেক দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পেয়েছে।
‘দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা সুরক্ষা দিতে পারছে না। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকান সরকার সিরাম ইনস্টিটিউটের ১০ লাখ ডোজ টিকা ফেরত পাঠিয়েছে। আমাদের দেশে বর্তমানে একই টিকা কি দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে?’ এ প্রশ্নের জবাবে ড. নিহাদ আদনান নয়া দিগন্তকে জানান, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে একদম সুরক্ষা দেবে নাÑ এ কথাটি সঠিক নয়। কারণ টিকা দেয়া হলে কিছু ব্যতিক্রম বাদে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে থাকে। তবে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও কেউ কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। পরীক্ষায় এটা প্রমাণিত যে, শরীরে অ্যান্টিবডি থাকলে করোনাভাইরাস আক্রান্তের খুব বেশি ক্ষতি করতে পারে না। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহীতার শরীরে করোনাভাইরাসের ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও থামাতে পারবে অথবা অন্যভাবে বললে বলব, ক্ষতির পরিমাণ কমে যাবে। সে কারণে বাংলাদেশে যে টিকাটি দেয়া হচ্ছে তা নিয়ে নিতে হবে। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদেরকে সময় হলে দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
তৃণমূল সংগঠনের মজবুতির জন্য কাজ করতে হবে : মাওলানা আব্দুল হালিম ‘দেশ ও জাতি দুঃসময় পার করছে’ ওসমানীনগরে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ২ সহ-অধিনায়ক হতে পারেন রিজওয়ান মেক্সিকোয় মেয়র প্রার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহেও ক্লাস বন্ধ ঘোষণা দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালককে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ আ’লীগের চুয়াডাঙ্গায় হিট‌স্ট্রো‌কে যুবকের মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর নারীর মৃত্যু

সকল