১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনার উৎস এ মাসেই জানাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

-

বৈশ্বিক মহামারী সৃষ্টি করা নভেল করোনাভাইরাসের উৎস কোথায়, তা এ মাসেই জানাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আরো সুনির্দিষ্টভাবে বললে আগামী ১৫ মার্চের সপ্তাহটিতে জানা যাবে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি কিভাবে কার মাধ্যমে ছড়িয়েছিল। খবর এএফপির।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস গত বৃহস্পতিবার সংস্থার সদস্য দেশগুলোর উদ্দেশে দেয়া এক বক্তব্যে বলেছেন, আমি জানি, অনেক সদস্য দেশই সার্স-কভ-২ ভাইরাসের উৎস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত গবেষণার প্রতিবেদন দেখতে উৎসুক। আমিও তা-ই। তিনি বলেন, দলটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পাশাপাশি একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছে। যা বুঝতে পারছি, সেগুলো ১৫ মার্চের সপ্তাহে একসাথে প্রকাশ করা হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, বাকিটা নিশ্চিত যে, প্রতিবেদনগুলো প্রস্তুত হওয়ার পর আমরা বিশেষজ্ঞ দলকে সেগুলো প্রকাশের আগে সদস্য দেশগুলোর সাথে শেয়ার করতে এবং অনুসন্ধানের সংক্ষিপ্তসার জানাতে বলব।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো চীনে শনাক্ত হয়েছিল নভেল করোনাভাইরাস, পরে যার নাম দেয়া হয় সার্স-কোভ-২ এবং এ থেকে সৃষ্ট রোগকে বলা হচ্ছে কোভিড-১৯। গত ১৫ মাসে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কোণে। এরই মধ্যে এতে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ কোটি ৬৬ লাখের বেশি মানুষ, মারা গেছেন প্রায় ২৬ লাখ।
প্রথমবার শনাক্ত হওয়ার প্রায় এক বছর পর গত জানুয়ারিতে চীনে করোনাভাইরাসের উৎসের সন্ধানে গিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তকারী দল। তারা উহানে প্রায় চার সপ্তাহ কাটায় এবং প্রথম দিকের সংক্রমণগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখে। বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, নতুন করোনাভাইরাসটি বাদুড়ের শরীরে তৈরি হয়েছিল এবং সেটি স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে। যদিও উহান অভিযানে ভাইরাসটির সুনির্দিষ্ট উৎস শনাক্তে ব্যর্থ হয়েছে ‘ডব্লিউএইচও এক্সপার্ট টিম’, তবে সেটি চীনাদের কোনো ল্যাবরেটরি থেকে ছড়িয়েছিল- এমন ধারণা চীন ছাড়া আগেই বাতিল করে দেন তারা। অবশ্য দলটি জেনেভায় পৌঁছানোর পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেছিলেন, সব অনুমান এখনো উন্মুক্ত।
ব্রিটেনে ফের করোনার নতুন স্ট্রেন : করোনার নতুন স্ট্রেনের মধ্যে আবারো এলো আরেকটি স্ট্রেন। নতুন স্ট্রেনটি সম্পর্কে এখনো বেশ কিছু জানা যায়নি। তবে এটি ব্রিটেনেই উৎপত্তি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা বিজ্ঞানীদের। এখন পর্যন্ত ১৬ জনের শরীরে এই নতুন স্ট্রেন পাওয়া গেছে। নতুন এই স্ট্রেন নিয়ে এরই মধ্যে গবেষণা শুরু করে দিয়েছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা। বিস্তারিত তত্ত্ব প্রকাশ্যে না আসা পর্যন্ত আপাতত এ নয়া স্ট্রেনটিকে ‘ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার ইনভেস্টিগেশন’ বা ‘ভইউআই’ বলেই অভিহিত করছে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য দফতর। আপাতত ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন (ভিওসি) বা উদ্বেগজনক স্ট্রেনের তালিকায় না থাকায় তা নিয়ে এখনই আতঙ্কের কারণ নেই বলেই আশ্বস্ত করা হয়েছে দফতরের তরফে।
অনুমতি ছাড়া ভ্রমণ করলে ব্রিটেনে কাল থেকে জরিমানা : আগামীকাল সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় ব্রিটেনের যে কেউ তিন পৃষ্ঠার একটি ফরম পূরণ করে তা সাথে রাখতে হবে। ফর্মে বিবরণ দিতে হবে তিনি কেন দেশ ত্যাগ করছেন। এই ফরম পূরণের অর্থ হলো তিনি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখবেন যে তিনি লকডাউনের নিয়মানুসারে ভ্রমণের অনুমতি রয়েছে। ফরম পূরণ করার পর তা ডাউনলোড করে অথবা মোবাইলে সাথে রাখতে হবে। ভ্রমণকারী যাত্রীরা যথাযথভাবে ফরমটি পূরণ করেছেন কি না, তা ভ্রমণের আগে নিশ্চিত করবে কর্তৃপক্ষ। যদি কোনো যাত্রী কোনো কারণে তা প্রদর্শনে ব্যর্থ হন, তা হলে তার ভ্রমণ বাতিল করা হবে এবং জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে। বিমান সংস্থা বোডিংয়ের আগে ফরমগুলো সম্পূর্ণ হয়েছে কি না, তা চেক করবে। শুক্রবার দেশটির সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ঘোষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, আগামী ৮ মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রা করার আগে তাদের ফরমটি বহন করা বাধ্যতামূলক।
সিনোভ্যাকের টিকা নেয়ার পর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করছে হংকং : করোনার টিকার কার্যকারিতা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কেটে গেছে- এমনটি এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা নেয়ার আগ্রহ বাড়ছে। এর মধ্যে টিকা নেয়ার পর অনেকের শরীরে দেখা দিচ্ছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। টিকা নেয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে, ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও। হংকংয়ের কোয়ান চুং স্পোর্টস সেন্টারে ২৬ ফেব্রুয়ারি চীনের সিনোভ্যাকের তৈরি করা করোনার টিকা নেন ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিকা নেয়ার পর ওই ব্যক্তির শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়। এক সূত্রের বরাত দিয়ে জি৫নিউজের খবরে বলা হয়, হাসপাতালে ভর্তির পর তার হার্ট অ্যাটাক হয় এবং একই দিনে তার মৃত্যু হয়। এ দিকে সিনোভ্যাকের টিকা নিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ২ মার্চ তদন্ত করার কথা জানিয়েছে হংকংয়ের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
সিনোভ্যাক বায়োটেক উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের এ টিকা কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ৫০.৪ শতাংশ কার্যকর। ফলে বিশেষজ্ঞরা এ টিকার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বেশ কয়েক দিনের মধ্যে সিনোভ্যাকের টিকা নিয়েছেন এমন সাতজনকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়েছে। এরই মধ্যে হংকংয়ের ৪০ হাজার বাসিন্দাকে দেয়া হয়েছে সিনোভ্যাক উদ্ভাবিত করোনার টিকা।


আরো সংবাদ



premium cement