২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য : জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব

-

জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য। সমস্যাটি সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসঙ্ঘ সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকে গুতেরেস এসব কথা জানান। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে, তার প্রশংসা করেন মহাসচিব। ভাসানচরে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে মহাসচিবকে অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসঙ্ঘের মানবিক সহায়তার অনুরোধ জানান তিনি।
করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যগত ও আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেন গুতেরেস। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব উভয়েই সম্মত হন, করোনার টিকাকে ‘বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচিত করা উচিত।
দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের রেকর্ডের উদাহরণ টেনে মহাসচিব গুতেরেস বলেন, যেকোনো ঝুঁকি নিরসনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানীয়। তাই করোনা মহামারী মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য দেখে আমি মোটেও অবাক হইনি। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা তার জীবনের যুদ্ধ বলে অভিহিত করে মহাসচিব বলেন, অভিযোজন কৌশল বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত জলবায়ু তহবিলের ৫০ ভাগ বরাদ্দ পেতে দাতাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক অভিযোজন কর্মসূচি এবং নদী ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন গুতেরেস। ভার্চুয়াল বৈঠকে জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।
মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি থেকেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে : মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি থেকেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়া অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করতে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের সাথে গঠনমূলকভাবে আলোচনা চালাতে হবে।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন এবং রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালানোর সাথে জড়িতদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৬তম অধিবেশনে দেয়া ভিডিও বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি অধিবেশনটি জেনেভায় শুরু হয়েছে। চলবে ২৩ মার্চ পর্যন্ত।
মানবাধিকারের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের ওপর আলোকপাত করে ড. মোমেন বলেন, এই নেতিবাচক প্রভাবে ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে একজন বিশেষ রেপোর্টিয়ার পদ সৃষ্টি করা উচিত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মানুষের অধিকার সমুন্নত রেখে বাংলাদেশে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সফলতার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, লিঙ্গবৈষম্য দূর করা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘুসহ নারী, শিশু, প্রতিবন্ধীসহ সবার অধিকার নিশ্চিত করতে পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


আরো সংবাদ



premium cement