কৃষক-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র দিল্লি
ট্রাক্টর উল্টে কৃষকের মৃত্যু, গুলির অভিযোগ ; লালকেল্লা দখল করে শিখ পতাকা উত্তোলন- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২৭ জানুয়ারি ২০২১, ০০:১২
ভারতীয় প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে ঢুকতে গিয়ে পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সিঙ্গুর সীমান্তে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। পরে আরো কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষ হয়। ট্রাক্টর মিছিল কর্মসূচিতে ট্রাক্টর উল্টে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ গুলি চালানোর ফলে মৃত্যু হয়েছে ওই কৃষকের। মঙ্গলবার দুপুরে মধ্য-দিল্লিতে এ ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ওই কৃষকের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আন্দোলনরত হাজার হাজার কৃষক হেঁটে ও ট্যাক্টর নিয়ে রাজধানী দিল্লির কেন্দ্রস্থলে ঢুকে পড়ে। মোদি সরকারের কথিত ‘নতুন বাজার বান্ধব’ আইনের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কৃষক ট্রাক্টর চালিয়ে শহরে প্রবেশের চেষ্টা করে। কয়েকটি জায়গায় কৃষকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে এবং তাদের জন্য নির্ধারিত রুটে না গিয়ে অন্য দিকে এগিয়ে যায়। বিবিসি ও আনন্দবাজার।
ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির কেন্দ্রস্থলে ‘রাজপথে’ বার্ষিক প্যারেড শেষ হওয়ার পর ট্র্যাক্টর মিছিল করবে, এই শর্তে কৃষকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু প্যারেড শুরু হওয়ার আগেই সকাল ৮টার মধ্যে হাজার হাজার আন্দোলনকারী দিল্লির সীমান্তে জড়ো হয়। এর মধ্যে তারা কয়েক হাজার পুলিশের বাধা তুচ্ছ করে হেঁটে রাজধানীতে ঢুকে পড়ে। পূর্ব নির্দিষ্ট সড়ক ধরে না গিয়ে বিভিন্ন রাস্তা ধরে মিছিল করে নগরীর কেন্দ্রস্থলের দিকে রওনা হয় তারা। এই নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। দিল্লির নয়ডা মোড়, আইটিও মোড় ও এসবিটি এলাকায় পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। আইটিও মোড়ে কৃষকরা পুলিশের একটি বাস দখল করে নেয় বলে জানা গেছে।
কৃষকদের মিছিল লাল কেল্লায় পৌঁছে যাওয়ার পর তারা সেখানে আন্দোলনের পতাকা উড়িয়ে দেয়। এখানে আন্দোলনকারী কৃষকরা ‘অকুপাই দিল্লি’ বলে সেøাগান দিতে থাকে। আন্দোলনকারী কৃষকদের ব্যাপক উপস্থিতিতে পুলিশ অসহায় হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দিল্লির মেট্রো পরিষেবা আংশিক বন্ধ করে দেয়া হয়। ভারতের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘ এই কৃষক আন্দোলন চলছে। সরকার প্রস্তাবিত আইনটি আপাতত স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে কিন্তু কৃষকরা বলছে তারা আইনটির বাতিল চায়। এর আগে দিল্লির সীমান্তে প্রায় দুই মাস অবস্থান ধর্মঘট করেছিল কৃষকরা।
গাজিপুর সীমান্তে একজন কৃষক বলেন, মোদিকে অবশ্যই এই কালো আইন ফিরিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, কৃষকরা সবাই সীমান্ত অতিক্রম করে দিল্লি অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকে। ধারণা করা হচ্ছিল দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান চলায় পুলিশের সাথে কৃষকদের আরো সংঘর্ষ হতে পারে। বার্ষিক প্যারেডে সশস্ত্রবাহিনী তাদের সর্বশেষ যুদ্ধ উপকরণ প্রদর্শনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্য তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরে। তবে করোনা মহামারীর কারণে এবারের আয়োজনকে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। যে আইন নিয়ে কৃষকরা এত বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাতে কৃষিকে উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থার আওতায় নেয়া হয়েছে আর এটিই কৃষকদের ক্ষুব্ধ করেছে। যদিও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার সংস্কারের পক্ষে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা