আড়াই লাখ কোটি ডলারের হালাল বাজার ধরতে চায় বাংলাদেশ
- সৈয়দ সামসুজ্জামান নীপু
- ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
প্রায় আড়াই লাখ কোটি ডলারের ‘আন্তর্জাতিক হালাল বাজার’ ধরতে চায় বাংলাদেশ। এই বাজারে রফতানি বাড়াতে দুবাই ভিত্তিক ‘ইন্টারন্যাশনাল হালাল অ্যাক্রিডিটেশন ফোরামের’ (আইএইচএএফ) সদস্য পদ প্রাপ্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ‘বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটিশন বোর্ডের’ (বিএবি) মাধ্যমে এই ফোরামের সদস্য পদটি নিশ্চিত করা হবে।
জানা যায়, ফোরামের নতুন সদস্যদের জন্য প্রথম তিন বছর কোনো চাঁদা দিতে হয় না। চতুর্থ বছরে চাঁদার হার কতো হবেÑ সেটিও এখনো নির্ধারিত হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে আইএইচএএফের সদস্য পদ লাভে বিএবিকে সম্মতি দিয়েছে ‘আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থায় বাংলাদেশের চাঁদা প্রদান সংক্রান্ত সচিব কমিটি’। একই সাথে চাঁদার হার নির্ধারিত হলে সে বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সচিব কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা গেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বাণিজ্য, শিল্প ও ইআরডি সচিবগণ এতে অংশগ্রহণ করেন।
সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমান বিশ্বে ১৮০ কোটি মুসলিম ভোক্তার পণ্য ও সেবার চাহিদার ভিত্তিতে গড়ে ওঠেছে বৈশ্বিক হালাল পণ্য, কাঁচামাল ও সেবার বাজার। ‘দ্য গ্লোবাল হালাল ইন্ডাস্ট্রি : অ্যান ওভারভিউ’-র ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর্থিক সেবা খাত ছাড়াই বর্তমানে বৈশ্বিক হালাল পণ্য ও সেবা বাজারের মূল্য প্রায় ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার। প্রতিবছর এ বাজারের আকার বাড়ছে প্রায় ২০ শতাংশ হারে। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘হেক্সা রিসার্চে’র মতে, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক হালাল পণ্য ও সেবা বাজারের আকার দাঁড়াবে প্রায় ১২ দশমিক ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার। দ্রুত সম্প্রসারণশীল হালাল পণ্যের এই বাজার ধরতে আইএইচএএফের সদস্য হলে দেশে উৎপাদিত হালাল পণ্য, খাদ্য ও খাদ্যসামগ্রী রফতানি সহজ হবে বলে মনে করছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে হালাল পণ্যের সনদ দিচ্ছে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, হালাল পণ্য বাজার দ্রুত সম্প্রসারণের কারণে বিভিন্ন দেশে হালাল পণ্যের সনদ প্রদানকারী একাধিক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এসব সংস্থার মান প্রদান সক্ষমতার প্রত্যয়ন প্রদানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মান প্রত্যয়নকারী সংস্থা গড়ে ওঠেছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে এক দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইএইচএএফের সদস্য পদ গ্রহণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিএবির বর্তমান উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতিরও ধারাবাহিকতা।
প্রসঙ্গত, দুবাই ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএইচএএফ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হালাল পণ্য ও সেবার সনদ প্রদানকারী সংস্থার অ্যাক্রিডিটেশন প্রদান করে থাকে। বর্তমানে ৩৬টি দেশ ‘আইএইচএএফ’ সদস্য। এর মধ্যে ২৯টি দেশ ফোরামের পূর্ণাঙ্গ সদস্য, ২টি সহযোগী সদস্য এবং ৫টি অ্যাফিলিয়েট সদস্য। সংস্থাটির প্রধান কাজ হচ্ছেÑ ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক হালাল অ্যাক্রিডিটেশনের মান ও পদ্ধতি নির্ধারণ; সদস্য দেশগুলোর অ্যাক্রিডিটেশন সংস্থার সাথে পারস্পরিক স্বীকৃত চুক্তি সই; হালাল শিল্প উন্নয়নে সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে যোগাযোগ রক্ষা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা