২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাজারদর

পাইকারি ও খুচরা দামে বিস্তর ফারাক

পাইকারি বাজারে আলু ১৪ টাকা কেজি, খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা; পাইকারি বাজারে দেশী পেঁয়াজ ২৮ টাকা, খুচরা বাজারে ৪০-৫০ টাকা; চালের বস্তায় ৩০০ টাকা তারতম্য
-

পাইকারি বাজারে দেশী পেঁয়াজের কেজি ২৮ টাকা। সেই পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। পাইকারিতে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা কেজি। আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। পাইকারি আড়তে চালের মূল্য বস্তায় গড়ে ১০০ টাকা কমলেও খুচরা বাজারে এখনো তার কোনো প্রভাব নেই। উল্টো পাইকারি বাজারের চেয়ে বস্তায় কম হলেও ৩০০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এভাবেই বিভিন্ন নিত্য পণ্যে পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে দামের বিস্তর ফারাক দেখা যাচ্ছে। ক্রেতারা বলেছেন, বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা সক্রিয় থাকলে তাদের এভাবে বাড়তি টাকা গুনতে হতো না। এ দিকে চালের বাজারে গতকালই ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল এসেছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলেছেন, ভারতে চালের যে দাম তাতে এ দেশের সাথে বেশি তারতম্য নেই। যে কারণে ভারত থেকে চাল আসা শুরু হলেও তা উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব ফেলবে না বাজারে।
গতকাল সকালে টঙ্গীর পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায় সব পণ্যই খুচরা বাজারের চেয়ে কম হলেও কেজিতে ১০ টাকা কম। এর মধ্যে মানুষ যেসব পণ্য নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিল সেই আলু, পেঁয়াজ আর চালের মূল্য প্রতিদিনই কমছে। টঙ্গীর পাইকারি আড়তদার সবুজ হোসেন মাতব্বর গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, পাইকারি বাজারে আলুর কেজি এখন ১৪ টাকা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর আলু আসছে। যে কারণে প্রতিদিনই আলুর দাম কমছে। তিনি বলেন, দেশী পেঁয়াজের দামও কম। উল্টো ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সবুজ বলেন, পাইকারি বাজারে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা কেজি। আর হল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ এখন পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭ টাকা কেজি। উল্টো ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩৭ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। সবুজ বলেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম বেশি পড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পেঁয়াজ আসছে। যারা আগাম চাষ করেছেন তারা আগাম ফসল তুলে বাজারে পাঠাচ্ছে। অথচ গতকালও বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে আমদানিকৃতটি ৩০ টাকা কেজি। আর দেশী পেঁয়াজ ছোট আকৃতির ৪০ টাকা। আর বাছাইকৃতটি ৫০ টাকা কেজি। আলুর কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে ২৫ টাকা কেজি। এত তারতম্যের কারণ জানতে চাইলে মানিক নগর এলাকার খুচরা বিক্রেতা বলেন, তাদের রাস্তায় খরচা হয়ে যায়। রাসেল নামের এক ক্রেতা বলেন, রাস্তায়তো আর এত টাকা খরচা হওয়ার কথা না। রাসেল বলেন, খুচরা বাজারে কোনো মনিটরিং না থাকার কারণেই ক্রেতাদের বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে।
টঙ্গীর মেসার্স আঁখি এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: আব্দুল ওয়াদুদ সুমন নয়া দিগন্তকে বলেন, চালের বাজার কিছুটা কমেছে। ৫০ কেজির বস্তায় ১০০ টাকা কমেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পাইকারি বাজারে মিনিকেট গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২৮শ’ ৫০ থেকে ৩১০০ টাকা। গতকাল সেই চাল বিক্রি হয়েছে ২৭০০-৩০০০ টাকা। বিআর ২৮ চালের বস্তা গত সপ্তাহে ছিল ২৩০০-২৫০০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয়েছে ২২৫০-২৩৫০ টাকায়। পাইজাম স্বর্ণা গত সপ্তাহে ছিল ২৩০০০-২৩৫০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয়েছে ২১০০-২১৫০ টাকায়। গুটি স্বর্ণা আগের সপ্তাহে ছিল ২১৮০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৯৫০ টাকায়। পাইজাম নাজিরের মূল্য কমেনি। ৩০০০ টাকায় বস্তা বিক্রি হচ্ছে। কাটারি নাজিরও আগের দামে ৩১৫০-৩২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ দিকে হিলি বর্ডার থেকে গতকাল ভারতীয় চাল প্রবেশ করেছে। এখন পর্যায়ক্রমে ভারতীয় আমদানিকৃত চাল আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ভারতীয় চাল দেশের চালের বাজারে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। গতকাল টঙ্গী বাজারে ভারত থেকে ২০ টন চাল নিয়ে আসেন ব্যবসায়ী আল আমিন। কাটারি সেদ্ধ এই চালের ২৫ কেজির বস্তা গতকাল পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১৩৬০ টাকায়।
এ দিকে পাইকারি বাজারে চালের মূল্য কমলেও খুচরা বাজারে চাল বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। এমনিতেই পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে বস্তা ২০০-৩০০ টাকা বেশিতে চাল বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে এখন মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ টাকায় ৫০ কেজি। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ টাকা বস্তা।
প্রতিবেশী দেশ থেকে ডিম আদমানি নিষিদ্ধ করা হলেও বাজারে আপতত এর কোনোই প্রভাব নেই। বাজারে এখনো ১০০ টাকায় ১৩-১৪টি মুরগির ডিম পাওয়া যাচ্ছে। একাধিক বিক্রেতা বলেছেন, দেশে উৎপাদিত ডিমই চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট।


আরো সংবাদ



premium cement