২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সুস্থ হওয়াদের দেহে করোনার অ্যান্টিবডি থাকে ৫ মাস

-

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষদের বেশির ভাগই অন্তত পাঁচ মাস আবার এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকেন। এ সময় যারা কখনোই আক্রান্ত হননি তাদের চেয়ে এসব মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি ৮৩ শতাংশ কমে যায়। পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব ইতিহাস থাকার পরও কিছু কিছু মানুষ ওই সময়সীমার আগেই আবারো আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন এবং অন্যদের সংক্রমিত করতে পারেন।
গবেষণার অংশ হিসেবে ১২ মাস ধরে স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। গত বছরের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যজুড়ে প্রায় ২১ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে নিয়মিত করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি ধরে নেয়া হয়েছিল তারা কখনো আক্রান্ত হননি। পরীক্ষায় দেখা গেছে ওই পাঁচ মাসে এসব স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে ৩১৮ জন নতুন সংক্রমিত হয়েছেন। আর অ্যান্টিবডি থাকা ছয় হাজার ৬১৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৪ জন।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়া অধ্যাপক সুসান হপকিন্স জানান, গবেষণায় প্রাপ্ত ফল খুব উৎসাহব্যঞ্জক। কারণ এর মধ্য দিয়ে দেখা গেছে মানুষের শরীরে যে সময় পর্যন্ত ইমিউনিটি থাকার কথা ভাবা হচ্ছিল, তার চেয়ে বেশিদিন ইমিউনিটি থাকে। তবে এ থসুরক্ষাকে পরিপূর্ণ সুরক্ষা বলতে রাজি নন সুসান।
করোনা পরিস্থিতি আরো কঠিন হতে পারেÑ রায়ান : করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় বছরটি আরো কঠিন হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ান। গত বুধবার তিনি বলেন, মহামারীর দ্বিতীয় বছরে করোনা সংক্রমণের যে গতিশীলতা দেখছি সে বিষয়গুলো বিবেচনা করে বলা যেতে পারে এটি আরো শক্তিশালী হতে পারে। তিনি আরো বলেন, করোনার নতুন স্ট্রেইন যেভাবে ছড়াচ্ছে, বিশেষত উত্তর গোলার্ধে, তাতে প্রথম দিকের চেয়ে কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় বছরটি আরো কঠিন হবে। করোনায় গত সপ্তাহে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। উত্তর গোলার্ধে, বিশেষত ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাতে সামাজিক মিশ্রণ বেড়ে যাওয়ায় অনেক দেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার নতুন স্ট্রেইন প্রথমে ব্রিটেনে শনাক্ত হয়েছে কিন্তু এখন বিশ্বজুড়ে করোনার এই নতুন স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে ইউরোপজুড়ে সরকারগুলো আরো কঠোর, দীর্ঘায়িত বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে।
মার্চে আসছে সিঙ্গেল ডোজের ভ্যাকসিন : যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রীর কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন (জে অ্যান্ড জে) আশা করছে, মার্চের মধ্যেই তারা তাদের সিঙ্গেল ডোজের করোনা ভ্যাকসিন বাজারে আনতে সক্ষম হবে। টিকাটি কতখানি কার্যকর, এই মাসের শেষের দিকে বা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই সে সম্পর্কে পরিষ্কার তথ্য পাওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে তাদের। কোম্পানির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা: পল স্টোফেলস বলেছেন, এ বছরের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহের লক্ষ্য রয়েছে তাদের।
ভাইরাসের উৎস খুঁজতে উহানে ডব্লিউএইচও : করোনাভাইরাসের উৎস সন্ধান করতে অবশেষে চীনের উহানে পৌঁছেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দল। দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকার পর কাজ শুরু করবেন তারা। চীনের পক্ষ থেকে এ বিশেষজ্ঞ দলকে প্রবেশের অনুমতি দিতে খানিকটা গড়িমসি করা হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার তারা উহানে পৌঁছান। জানুয়ারির শুরুতেই বিশেষজ্ঞ দলটির চীনে যাওয়ার কথা ছিল। ২০১৯ এর ডিসেম্বরে উহানে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।
আইসিইউ সঙ্কটে পড়েছে ব্রিটেন : যুক্তরাজ্যে বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। রোগী বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের কর্মীদের। আর এতে হাসপাতালের বাইরে অ্যাম্বুলেন্সের রোগীদের হস্তান্তরে সময় বেশি লাগছে। এ দিকে করোনা রোগী বৃদ্ধির সাথে সাথে আইসিইউ সঙ্কট বাড়ছে যুক্তরাজ্যজুড়ে। এ নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সতর্ক করে বলেন, আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন কখন আইসিইউগুলোর ধারণ ক্ষমতা শেষ হবে তা আমি নির্দিষ্ট করতে বলতে পারব না। তবে আমি বলতে পারি যে আমরা ঝুঁকিতে রয়েছি।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকা নিয়েছেন এক কোটির বেশি মানুষ : যুক্তরাষ্ট্রের এক কোটিরও বেশি নাগরিক করোনাভাইরাস টিকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এক কোটি দুই লাখ বাসিন্দাকে টিকা দিতে পেরেছে বলে জানিয়েছে তারা। মর্ডানা ও জার্মানির অংশীদার বায়োএনটেকের সাথে মিলে ফাইজারের তৈরি করা টিকার প্রায় তিন কোটি ডোজ যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোকে দেয়া হয়েছে।
ফাইজারের টিকা নেয়ার পর ডাক্তারের মৃত্যু : ফাইজারের টিকা নেয়ার ১৬ দিন পর মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে মারা গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন চিকিৎসক। গ্রেগরি মাইকেল (৫৬) নামের ওই গাইনোকলজিস্ট ফ্লোরিডার মায়ামিতে কর্মরত ছিলেন। গত ডিসেম্বরে সম্পূর্ণ সুস্থদেহে ফাইজার আবিষ্কৃত করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছিলেন গ্রেগরি মাইকেল। এর ১৬ দিন পরে গত ৩ জানুয়ারি তিনি মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে মারা যান। মাইকেলের স্ত্রী হিদি নেকেলম্যান বলেছেন, করোনাভাইরাসের টিকার শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার কারণে তার স্বামীর ব্রেনে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে ফাইজারের দাবি, তারা মনে করেন না টিকা নেয়ার সাথে ওই ডাক্তারের মৃত্যুর কোনো সম্পর্ক আছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement