২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাঁচ মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ

-

পাঁচ বাংলাদেশী মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল। এর মধ্যে তিনজন আগে থেকে লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। আর বাকি দু’জনের অবস্থান সম্পর্কে এখনো কিছু জানতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২৫ নভেম্বর এদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হয়। এর আগে ৬ নভেম্বর মিন্টু মিয়া নামে আরো এক মানবপাচারকারীর নামে রেড নোটিশ জারি করা হয়। এ নিয়ে মোট ছয় বাংলাদেশী মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করা হলো। এদের নামে রাজধানীর পল্টন ও বনানী থানায় মানবপাচারের অভিযোগে ২ জুন মামলা করা হয়। শীর্ষ নিউজ।
গত বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো-এনসিবি) মহিউল ইসলাম। তিনি বলেন, এবারই প্রথম বাংলাদেশী কোনো মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির ঘটনা ঘটল। যে পাঁচজনের নামে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছেন তানজিলুর ওরফে তানজিলুম ওরফে তানজিদ। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে। তিনি আগে থেকেই লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। একই উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের জাফর ওরফে জাফর ইকবালের নামেও রেড নোটিশ জারি হয়েছে। তিনিও আগে থেকেই লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। লিবিয়ায় আগে থেকে অবস্থান করা স্বপনের নামেও রেড নোটিশ জারি হয়েছে। তার বাড়িও একই উপজেলার শম্ভুপুরে।
এ ছাড়া তালিকায় থাকা মাদারীপুর সদরের মধ্যাহাউসদি গ্রামের নজরুল মোল্লা এবং ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের শাহাদাত হোসেনের অবস্থান এখনো অজানা। পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি সূত্র জানিয়েছে, এই রেড নোটিশের পর ওই ব্যক্তিরা যেকোনো দেশের স্থলপথ, নৌপথ ও আকাশপথের বন্দরে গেলেই গ্রেফতার হবেন। এরপর সেই দেশের আইনকানুন পর্যালোচনা করে দেশে তাদের ফেরত আনা সম্ভব। এ পর্যন্ত ১৫ বাংলাদেশীকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফেরত আনা গেছে।
সূত্র জানায়, আকাশ মিয়া নামে এক ভুক্তভোগীর ভাই জানিয়েছেন, আগেই নোটিশ খাওয়া মিন্টু মিয়া লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার পল্টনে দু’টি মামলা হয়েছে। মিন্টু মিয়া কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার বোছামারা গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি ২০১৮ সালে দুবাই হয়ে লিবিয়ায় গেছেন। এখন তার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে লিবিয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮১ জন মানবপাচারকারীকে চিহ্নিত করেছে সিআইডি। এর মধ্যে ৩১ জন গ্রেফতার হয়েছেন। আর বিদেশে অবস্থান করছেন ২৭ জন। বিদেশে অবস্থানকারীদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। লিবিয়ার গোলাগুলির ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় করা মামলাগুলোর মধ্যে চারটির চার্জশিট প্রস্তুত করা হয়েছে।
এ ছাড়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে লিবিয়ার বাইরের তদন্তাধীন ৩৮৭ মানবপাচারকারীর। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, ২৮ মে অবৈধ পথে ইতালি পাঠানোর সময় লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানবপাচারকারীরা গুলি করে হত্যা করে ৩০ জনকে, যেখানে ছিলেন ২৬ বাংলাদেশী। এ ঘটনায় স্থানীয় দালালদের ধরতে তৎপর হয় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ৪ জুন রাতে ১৬ জনের নামে পল্টন থানায় মামলা করেন লিবিয়ায় ভুক্তভোগী যুবক রাকিবের বাবা মান্নান মুন্সী। তার বাড়ি শরীয়তপুরে। সাত মাস আগে দুই দফায় মোট সাত লাখ টাকায় দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় গিয়ে আটকা পড়েন রাকিব। একই সময় পল্টন থানায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে এবং বনানী থানায় ৩৩ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা হয়। এর আগে ২ জুন পল্টন থানায় ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। এদের মধ্যে রেড নোটিশ জারি হওয়া ছয়জনের নামও রয়েছে। ঢাকা থেকে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা প্রথমে ভিজিট ভিসায় বাংলাদেশীদের শ্রীলঙ্কায় পাঠায়। সেখান থেকে দুবাই নেয়। আবার কখনো কখনো মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে দুবাই হয়ে লিবিয়ার বেনগাজিতে নিয়ে আসে। এরপর সুযোগ বুঝে তারা তাদের ইউরোপে পাঠায়। এর আগে একটি ঘরে জিম্মি করে রাখে।


আরো সংবাদ



premium cement