২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আকবরকে পালাতে সহায়তা করায় এসআই হাসান বরখাস্ত

রায়হানের পরিবারের নতুন কর্মসূচি
-

বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ সাময়িক বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ফাঁড়ি থেকে পালাতে সহায়তা করা এবং তথ্য গোপনের অপরাধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিস) এসএমপি বি এম আশরাফ উল্যাহ তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, রায়হান হত্যা মামলায় ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেফতর করে রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। তবে মূল অভিযুক্ত বন্দরবাজার থানার ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া পালিয়ে গেছেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় আকবর পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আকবরের পালিয়ে যাওয়ার সাথে কারা জড়িত, তা তদন্তে কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দফতর। তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ফাঁড়ি থেকে পালাতে সহায়তা করা এবং তথ্য গোপনের অপরাধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
নতুন কর্মসূচি রায়হানের পরিবারের : সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদকে হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল তার পরিবার। গত রোববার দুপুরে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসআই আকবরসহ অভিযুক্ত সবাইকে গ্রেফতারে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন রায়হানের মা সালমা বেগম।
বেঁধে দেয়া সময়সীমা (৭২ ঘণ্টা) অতিক্রম হয়েছে গতকাল দুপুরে। এখনো প্রধান অভিযুক্ত আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়নি। একমাত্র পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ছাড়া এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রেফতার নেই। ফলে লাগাতার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে রায়হানের পরিবার। এমনটিই জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান, আজ পরিবার ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ, পরদিন শুক্রবার বাদ জুমা মসজিদে মসজিদে রায়হানের জন্য দোয়া মাহফিল ও শনিবার বিকেল ৪টায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মদিনা মার্কেট পয়েন্টে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
পরিবারের পক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রায়হানের স্বজন মো: শওকত হোসেন। তিনি ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে সিলেটের সর্বস্তরের জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন,৭২ ঘণ্টার আলটিমেটামের অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা আপাতত কঠোর কর্মসূচি থেকে সরে এসেছি। তবে এরপর যদি প্রশাসন জড়িতদের গ্রেফতারে ব্যর্থ হয় তা হলে নতুন করে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে।
এ দিকে বুধবার দুপুরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের ধরতে ও বিচারের দাবিতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ সিলেটের কর্মীরা।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর ভোরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন রায়হান আহমদ (৩৩) নামের এক যুবক। পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হেফাজতে মৃত্যু আইনে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। রায়হানের স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই।


আরো সংবাদ



premium cement