২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় সব আসামি খালাস

-

প্রায় তিন দশক আগে ভারতের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদবানীসহ ৩২ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছে উত্তর প্রদেশের একটি আদালত। গতকাল বুধবার লক্ষেèৗয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রায় দিয়েছেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ওই ঘটনা ‘পরিকল্পিত ছিল না’। অভিযুক্তরা মন্দির ভাঙায় বাধা দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব।
বিশেষ আদালতের রায় প্রদানের পরই বিতর্কিত এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মুসলিম ল বোর্ড। আদালতের এই রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় বিচার বিভাগের ইতিহাসে আজকের দিনটি একটি কালো দিন। এখন আদালত বলছে যে সেখানে কোনো ষড়যন্ত্র ছিল না।’ ওয়াইসির আরো প্রশ্ন, ‘দয়া করে আমাকে বোঝান, কোনো ঘটনা স্বতঃস্ফূর্ত হওয়া থেকে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য কত মাসের প্রস্তুতি প্রয়োজন?’ লক্ষেèৗয়ের সিবিআই আদালতের এই রায়ের পর এবার হাই কোর্টে আবেদন করার সুযোগ থাকছে সিবিআইয়ের কাছে।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর হিন্দু ‘করসেবকরা’ অযোধ্যার ৫০০ বছরের পুরনো মসজিদটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন। স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রায় ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা কিছুটা দেরিতে শুরু হয়। সোয়া ১১টা পর্যন্ত ২৬ জন অভিযুক্ত আদালতে হাজির হন। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বয়স ও স্বাস্থ্যগত কারণে আদালতে সশরীরে হাজিরা দেয়া থেকে নিষ্কৃতি পান বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলিমনোহর যোশী, সাবেক মন্ত্রী উমা ভারতী, কল্যাণ সিং, সতীশ প্রধান এবং রামমন্দির ট্রাস্টের প্রধান নৃত্যগোপাল দাস। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারা আদালতে হাজিরা দিলেও যোশী যোগ দেননি। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিজেপির কল্যাণ সিং।
অভিযুক্তরা মন্দির ভাঙার ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উসকানিতে যুক্ত ছিল, এ বিষয়ে যথাযথ প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানিয়ে বিচারক সবাইকে খালাস দেন। বিচারক জানান, মসজিদ ভাঙায় অভিযুক্তদের কোনো ভূমিকা ছিল না। উন্মত্ত লোকজন মসজিদ ভেঙেছে আর অভিযুক্তরা তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ২৩০০ পাতার রায় পড়ে শোনানোর সময় বিচারক বলেন, ‘প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মসজিদ ভাঙার ঘটনায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আএএসএস) এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) কোনো ভূমিকা ছিল না।’
১৯৯০-র দশকের শুরুর দিকে বিজেপি নেতা আদবানীর ধারাবাহিক রথযাত্রা আয়োজনের একপর্যায়ে ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হাতে মসজিদ ধ্বংসের এই ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনার জেরে সঙ্ঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ওই সময় ভারতে প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয় আর দেশটির রাজনৈতিক ভারসাম্য ওলটপালট হয়ে যায়।
মসজিদ ধ্বংসের সময় আদবানী, যোশী ও ভারতী নিকটবর্তী একটি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তকারী সংস্থাগুলো বলেছে, তারা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে উপস্থিত লোকজনকে প্ররোচিত করেছিলেন। এই মামলার মোট ৪৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে ইতোমধ্যেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিংঘল, শিবসেনার বাল ঠাকরে, অযোধ্যার পরমহংস রামচন্দ্র দাসসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। জীবিত ছিলেন ৩২ জন, তারা সবাই বেকসুর খালাস পেলেন।
মুঘল সম্রাট বাবরের নামে প্রতিষ্ঠিত ১৫ শতকের ওই মসজিদটি সম্রাটের সেনাপতি মীর বাকি নির্মাণ করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। মসজিদ নির্মাণের স্থানটিকে রামে জন্মভূমি বলে দাবি করে আসছেন অনেকে। একটি পুরনো মন্দির ভেঙে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে তাদের অভিযোগ। যদিও এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পেশ করতে সক্ষম হয়নি তারা। গত নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে মসজিদের ওই জায়গায় একটি মন্দির নির্মাণ করার অনুমতি দিয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর

সকল