২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

৩ কাশ্মিরিকে বেআইনি হত্যার কথা স্বীকার ভারতীয় সেনাবাহিনীর

-

ভারতশাসিত কাশ্মিরে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্থানীয় অধিবাসীদের ওপর অন্যায় নির্যাতন ও বেআইনি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। তবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বা বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে নিরীহ কাশ্মিরিদের হত্যার কথা স্বীকারের ঘটনা বেশ বিরল। তবে গত জুলাইয়ে করোনাভাইরাসের কারণে চলা লকডাউনের মধ্যে তিন কাশ্মিরি শ্রমিককে হত্যার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ভারতীয় বাহিনী।
গত শুক্রবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, গত ১৮ জুলাই সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, তারা শোপিয়ানের আমশিপোরা গ্রামে অজ্ঞাত তিন ‘বিদ্রোহীকে’ হত্যা করেছে। এখন তদন্তে দেখা গেছে, তারা রাজৌরি জেলার বাসিন্দা ছিলেন, যাদের সাজানো বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল তাদের পরিবার।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রাজেশ কালিয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘সেনা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে আমশিপোরা অভিযানের বিষয়ে তদন্ত শেষ হয়েছে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু প্রমাণ মিলেছে যাতে মনে হয়েছে, অভিযানের সময় সশস্ত্র বাহিনী বিশেষ ক্ষমতা আইনের (এএফএসপিএ) অধীনে প্রয়োগ করা ক্ষমতা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘তদন্তে সংগৃহীত প্রাথমিক প্রমাণ ইঙ্গিত দিচ্ছে, আমশিপোরা অভিযানে নিহত তিন অপ্রমাণিত সন্ত্রাসী হলেন ইমতিয়াজ আহমেদ, আবরার আহমেদ ও মোহাম্মদ ইবরার। তারা রাজৌরি থেকে ফিরছিলেন। তাদের ডিএনএ প্রতিবেদন আসার অপেক্ষায় রয়েছে। সন্ত্রাস বা এ সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডে তাদের যোগসূত্রের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।’
এর আগে পুলিশের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছিল, ওই অভিযানে সেনা কর্মকর্তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এ ঘটনার কিছু দিন পরে নিহত তিন ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। সেখান থেকেই তাদের শনাক্ত করেন স্বজনরা এবং বেআইনি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ করেন। গত শুক্রবার ভারতীয় সেনাবাহিনী বেআইনি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারের পর নিহত ইবরারের চাচাতো ভাই নসিব খাতানা জানান, নিহতরা সবাই একে অপরের চাচাতো ভাই ছিলেন। তারা কাজের উদ্দেশ্যে রাজৌরি থেকে শোপিয়ান গিয়েছিলেন।
নসিব বলেন, ‘তারা ১৭ জুলাই শোপিয়ান পৌঁছায় এবং ওই রাতেই শেষবার তাদের সাথে কথা হয়েছিল আমাদের। এটি লকডাউনের সময় ছিল, তাই আমরা ভেবেছিলাম তাদের হয়তো কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছিলাম, তবে কোনো খবর ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ছবি দেখার পর স্বজনদের চিহ্নিত করে অভিযোগ দায়ের করি। তাদের সন্ত্রাসী বলে দাবি করেছিল সেনাবাহিনী। নিরপরাধ মানুষের সাথে তারা আর কত অন্যায় করতে পারে!’ ভুক্তভোগী আরেক পরিবারের এক সদস্য জানান, স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে ঘুরেও তা এখনো পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘গত ৩ আগস্ট নমুনা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল; কিন্তু এখনো ফলাফল আসেনি। আজ প্রতিটি পরিবারের একজনকে ডেকে তারা স্বীকার করেছে, তিনজনকে একটি মিথ্যা বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই তাদের হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে এনে সাজা দেয়া হোক। আমরা পরিবারের সদস্যদের লাশ চাই।’ জুলাইয়ের ওই মিথ্যা বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন ইবরার। তিনি পড়াশোনার জন্য দিনমজুরের কাজ করে অর্থ জমাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, কাশ্মিরে ভারতীয় সেনারা আর্থিক সুবিধা ও মেডেলের জন্য বেসামরিক লোকদের হত্যা করে অনেক সময় ‘বিদ্রোহী’ বলে চালিয়ে দেন। আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ২০১০ সালের মে মাসে মাচিল এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারতীয় সেনারা সাজানো বন্দুকযুদ্ধে তিন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছেন, কাশ্মির পুলিশের তদন্তে এ তথ্য বেরিয়ে আসার পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে উপত্যকায়। সেনারা পুরস্কারের লোভে ওই তিন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে ‘সশস্ত্র বিদ্রোহী’র ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক

সকল