বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে একসাথে কাজ করতে চায় ভারত-জাপান
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে বিভিন্ন প্রকল্পে সহযোগিতার ভিত্তিতে একসাথে কাজ করতে চাইছে ভারত ও জাপান।
‘ইন্ডিয়া-জাপান : টাইম টু সিজ দ্য অপারচুনিটি’ বিষয়ক থিমের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে এ কথা জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গত শুক্রবার অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)।
জয়শঙ্কর বলেন, তৃতীয় দেশে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা থেকে শুরু করে এখন বাস্তবায়ন পর্যায়ে চলে এসেছে ভারত ও জাপান। শ্রীলঙ্কায় আমরা এর কিছু সম্পন্ন করেছি। সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে কাজ করতে পারি কি না এখন আমরা তা দেখছি। তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুনির্দিষ্ট কিছু প্রকল্প আধুনিকায়নের দিকে দৃষ্টি রাখে ইন্ডিয়া-জাপান অ্যাক্ট ইস্ট ফোরাম। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাথে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উল্লেখযোগ্য সংযুক্তি রয়েছে।
অনুষ্ঠানে দিল্লিতে জাপান দূতাবাসের উপপ্রধান তোশিহিদে আন্দো বলেন, ক্রমবর্ধমান অনিশ্চিত বিশ্বে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আনতে পারেÑ এমন সমমনা দেশগুলোর সাথে একসাথে কাজ করবে জাপান ও ভারত।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের আগ্রাসী তৎপরতা মোকাবেলায় ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানসহ বেশ কিছু দেশ নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
জয়শঙ্কর বলেন, সম্প্রতি ভারত ও জাপানের মধ্যে একুইজিশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট (এসিএসএ) সই হয়েছে। এর আওতায় ভারত ও জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনী পরস্পরকে সহযোগিতা দেবে। একই সাথে এই চুক্তি পুরো এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে। তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানসহ বিভিন্ন ফোরামে ভারত ও জাপান ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। দুই দেশ দূরপ্রাচ্য এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোতে সহযোগিতা ভিত্তিতে কাজ করতে পারে।
গত সপ্তাহে ভারত ও জাপানের মধ্যে স্বাক্ষরিত এসিএসএ চুক্তিকে একসাথে কাজ করার সক্ষমতা ও মানসিকতার একটি বাস্তব উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করে জয়শঙ্কর বলেন, আমি অত্যন্ত আস্থাশীল যে এই চুক্তি এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য উভয় দেশের দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় পরিবর্তন আনবে। জাপান হলো একমাত্র দেশ যার সাথে প্রতি বছরই ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে সংলাপ হয়। দুই দেশই ইন্দো-প্যাসিফিকে ভারসাম্য আনতে সচেষ্ট। তিনি বলেন, ভারত ও জাপানের দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা দ্রুত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে।
জাপান মিশনের উপপ্রধান তোশিহিদে আন্দো বলেন, মেক ইন ইন্ডিয়া এবং মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ডÑ উভয় ক্ষেত্রেই ভারতের অংশীদার জাপান। উন্নত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ভারত আরো শক্তিশালী হতে পারে। বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের প্রাণকেন্দ্র হতে ভারতের যে আকাক্সক্ষা, তাতে বড় ভূমিকা রাখতে উদগ্রীব হয়ে আছে জাপানের ব্যবসা খাত।
ভারতে ব্যবসা করতে গিয়ে জাপানের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে তার একটি তালিকা দেন তোশিহিদে আন্দো। এর মধ্যে রয়েছে জটিল আইন ও আয়কর ব্যবস্থা, বিলম্বে পাওনা পরিশোধ করা, শ্রমিক ইস্যু, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো প্রভৃতি। তিনি জানান, গত বছর ভারতে সক্রিয় জাপানি ফার্মের সংখ্যা এক হাজার ৪৫৪টিতে দাঁড়িয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে চীনের নাম উল্লেখ না করে জয়শঙ্কর বলেন, এশিয়ার উত্থানের জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করা প্রয়োজন। যদি বিশ্ব রাজনীতিতে আপনি এশিয়াকে আরো বড় স্থান দিতে চান, তা হলে এশিয়ার সব দেশকে একসাথে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এশিয়ার বৃহৎ দেশগুলোকে একত্রিত হতে হবে, যদি তারা তাদের শক্তিকে ইতিবাচক উপায়ে ব্যবহার করতে চায়। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা