২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ

ডা: সাবরিনা চৌধুরীসহ ৮ জনের জামিন নাকচ

সিএমএম কোর্টে ডা: সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুল হক : নয়া দিগন্ত -

করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে প্রতারণার মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা: সাবরিনা চৌধুরী ও সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের জামিন নাকচ করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন এবং চার্জ শুনানির জন্য সময় চান। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে জামিন আবেদন নাকচ করে চার্জ শুনানির জন্য আগামী ২০ আগস্ট পরবর্তী দিন ধার্য করেন। গত ৫ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত মামলাটি বিচারের জন্য উল্লিখিত আদালতে বদলি করেন। সেমতে গতকাল আসামিদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে আদালত তা নাকচ করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ডা: সাবরিনা, আরিফুল হক চৌধুরী, তার সহযোগী সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, শফিকুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্সের স্বত্বাধিকারী জেবুন্নেছা রিমা ও বিপ্লব দাস। এই আট আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী চার্জশিটে সাবরিনা ও আরিফকে মূল হোতা হিসেবে উল্লেখ করেন। বাকিরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করতে তাদের সহযোগিতা করেছেন। সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই ফরিদ চার্জশিটটি ঢাকার মহানগর হাকিম মো: মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালতে উপস্থাপন করেন। আদালত চার্জশিটটি পর্যালোচনা করে মামলাটি বদলির জন্য গত ৬ আগস্ট ঢাকার সিএমএম-এর নিকট উপস্থাপন করলে আদালত মামলাটি বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে বদলির নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত গত ২৩ জুন সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। ২৪ জুন আরিফ চৌধুরী ও সহযোগী সাঈদ চৌধুরীর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদেও বেরিয়ে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তবে ১৫ জুলাই আরিফুলের ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। ১৬ জুলাই রিমান্ডে মুখোমুখি হন আরিফ-সাবরিনা। স্বামীর সামনে সাবরিনা বলেছিলেন, ‘আরিফের জন্যই আজ এই অবস্থা’। করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডা: সাবরিনা আরিফ চৌধুরীসহ আটজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আসামিদের মধ্যে এজাহার নামীয় ছিল হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, তদন্ত অবস্থায় পুলিশ আরিফুল হক চৌধুরী, তার সহযোগী সাঈদ চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, জেবুন্নেছা রিমা, বিপ্লব দাস এবং মামুনুর রশীদকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে হুমায়ুন কবির, সাঈদ চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।
প্রসঙ্গগত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি হেলথ কেয়ার ২৭ হাজার মানুষকে রিপোর্ট দেয়। এর বেশির ভাগই ভুয়া বলে ধরা পড়ে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটিতে গত ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেয়া হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement