মহেশখালীতে প্রদীপের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ
মেজর সিনহা হত্যা- কক্সবাজার সংবাদদাতা
- ১৪ আগস্ট ২০২০, ০০:০০
বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গত বুধবার দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন মহেশখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে খারিজাদেশ দিয়ে ৪ বছর আগে ওসি প্রদীপের দায়ের করা হত্যা মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদি হামিদা বেগমের আইনজীবী শহীদুল ইসলাম আদেশের বিষয়ে নিশ্চিত করে জানান, ‘আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবো। তবে তিনি এই আদেশকে বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কথিত বন্দুকযুদ্ধে লবণচাষি আবদুস সত্তার হত্যাকাণ্ডের পর ওসি প্রদীপের নির্দেশে তৎকালীন উপপরিদর্শক হারুন বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মহেশখালী থানায় একটি মামলা রেকর্ড করেন। মামলা নং জি আর ৩৭/১৭। মামলাটি এতদিন থানায় পড়েছিল। চার্জশিট কিংবা ফাইনাল রিপোর্ট কিছুই হয়নি।এই মামলাটির যদি সঠিক তদন্ত হয় তাহলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। আদালত মামলাটি সিআইডির একজন পদস্থ কর্মকর্তাকে (অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার মর্যাদার উপরে) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল মামলাটি খারিজের পর বাদি হামিদা বেগম বলেন, স্বামী হত্যার বিচারের জন্য তিনি এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। হামিদা বেগম বুধবার বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার অভিযোগে নালিশি মামলাটি করেছিলেন। বাদির অভিযোগ ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওসি প্রদীপ বন্দুকযুদ্ধের গল্প সাজিয়ে তার লবণচাষি স্বামী আবদুস সত্তারকে হত্যা করে। আবদুস সত্তারকে হত্যার পর মহেশখালী থানায় মামলা করতে গেলে সে সময় তা নেয়া হয়নি। পরে হামিদা বেগম উচ্চ আদালতে রিট করলে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা গ্রহণ করতে তখন ওসিকে (প্রদীপ কুমার দাশ) নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ওসি প্রদীপ আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ওই আদেশ বাতিল করে নতুন করে রিট শুনানি করতে বলেন। এরপর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ওসি প্রদীপ কুমার দাশের হুমকি ধমকিতে ওই রিটের কার্যক্রম আর এগোতে পারেনি বলে জানান হামিদা বেগম। তিনি বলেন, বর্তমানে আমার স্বামী হত্যার বিচার পাওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে তাই আমি আবার আমার নিরপরাধ স্বামী হত্যার বিচার চাইতে আদালতের কাছে এসেছি।
গণশুনানি ১৬ আগস্ট : এ দিকে টেকনাফের শাপলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের সত্য বের করে আনতে আগামী রোববার সকাল ১০টায় গণশুনানির দিনক্ষণ ঠিক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। এ বিষয়ে রোববার সন্ধ্যায় একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। টেকনাফ শাপলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জের (সিআইসি) কার্যালয়ে এই শুনানিতে প্রত্যক্ষদর্শীদের নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা তদন্ত কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাজাহান আলী স্বাক্ষরিত এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শাপলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গত ২ আগস্ট চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটি ইতোমধ্যে সরেজমিন তদন্ত করেছেন। তদন্ত কাজের সময়সীমা প্রথমে সাত কর্মদিবস বলা হলেও পরে আরো সাত কর্মদিবস সময় বৃদ্ধি করেছে মন্ত্রণালয়।
এ দিকে কক্সবাজার (দক্ষিণ) সংবাদদাতা জানান, সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার মামলায় গ্রেফতার করা ৩ আসামিকে রিমান্ডে নেয়নি র্যাব। গতকাল বিকেলে র্যাব ১৫ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মির্জা মেহেদী পরে তাদের রিমান্ডে নেবেন বলে জানিয়েছেন।
নিহতের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে র্যাবের একটি টিম গতকাল বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে আসে। পরে র্যাব আধা ঘণ্টা অবস্থান করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কক্সবাজার জেলা কারাগার হতে ফেরত যান। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, বিষয়টি আমরা গণমাধ্যমকে পরে জানাব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা