২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বাধীন মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা বন্ধের আহ্বান অ্যামনেস্টির

-

স্বাধীন মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশকারীদের ওপর ক্রমবর্ধমান হামলা জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা আরো বলেছে, প্রতিশোধ নেয়ার আতঙ্ক ছাড়াই সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের অনুমতি দিতে হবে। ১১ আগস্ট নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ : রাইজিং এটাকস অন ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন অ্যান্ড পিসফুল অ্যাসেম্বলি মাস্ট বি আর্জেন্টলি স্টপড’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। শীর্ষনিউজ।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে সম্প্রতি ধারাবাহিক যেসব হামলা হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। সম্প্রতি একজন ছাত্রনেতাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গুম করার চেষ্টাসহ সাম্প্রতিক হামলাগুলোর আলোকে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এতে বলা হয়েছে, মিসরের আল আজহার ইউনিভার্সিটির ২৭ বছর বয়সী ছাত্র ও একজন ছাত্র-অধিকার কর্মী আশরাফ উদ্দিন মাহদিকে গত ৬ আগস্ট স্থানীয় সময় রাত ১১টায় জোর করে গুম করা হয়। আত্মীয়দের বাসায় বেড়িয়ে তিনি যখন বাসায় ফেরেন তখন রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। ৪৮ ঘণ্টা তাকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়।
নাগরিক সমাজের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র চাপ সৃষ্টির পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মাহদির রয়েছে অনলাইনে বিপুল অনুসারী। তিনি সরকারের একজন সমালোচক।
অ্যামনেস্টিকে মাহদি বলেছেন, অপহরণকারীরা তাকে মুক্তি দিয়েছেন। তবে শর্ত দিয়েছেন, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনামূলক পোস্ট দেয়া বন্ধ করতে হবে তাকে। অ্যামনেস্টি বলেছে, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ক্রমেই বাড়ছে জোরপূর্বক গুম। প্যারিসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটসের (এফআইডিএইচ) মতে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কমপক্ষে ৫০৭ জন মানুষ জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৬২ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। জীবিত ফিরেছেন ২৮৬ জন। বাকি ১৫৯ জনের ভাগ্যে কী ঘটেছে বা তারা কোথায় আছেন, তা এখনো অজানা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষক সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেছেন, কয়েক বছরে বাংলাদেশে যেভাবে জোরপূর্বক গুম বৃদ্ধি পাচ্ছে তা হতাশাজনক। বিশেষ করে এতে টার্গেট করা হচ্ছে রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বী মতপ্রকাশকারীদের। আশরাফ উদ্দিন মাহদিকে রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রস্থল থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গুম করা হয়। তার কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেয়ার এটা এক নির্লজ্জ কৌশল।
কর্তৃপক্ষের সমালোচনাকারীদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে ছাত্র অধিকারকর্মীরা সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন বিভিন্ন গ্রুপের পক্ষ থেকে। এসব গ্রুপের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে। ৮ আগস্ট বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রবিষয়ক সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র সালেহ উদ্দিন সিফাতকে প্রহার করে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে প্রহার করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফেলে যায় হামলাকারীরা। সেখান থেকে তাকে নেয়া হয় একটি হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
একই দিনে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির একজন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী শাহাদুল ইসলামের মুক্তি দাবিতে বরগুনায় শান্তিপূর্ণ র্যালি ও মানববন্ধন করা হয়। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ সহিংসতার আশ্রয় নিয়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশি লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হাতে যে ভিডিওগুলো আছে, তাতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে কোনো রকম উসকানি ছাড়াই পুলিশ ওই মানববন্ধনে সহিংসতার আশ্রয় নিয়ে তাদেরকে দমন করছে।
সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, বাংলাদেশে জরুরি ভিত্তিতে জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকার অবশ্যই সমুন্নত রাখতে হবে। প্রতিশোধ নেয়ার ভয় ছাড়াই সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করতে দিতে হবে। সরকারের সমালোচনাকারী বলে বিবেচিত হলেই তাদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম করার রীতি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এসব ঘটনা দ্রুততায় কার্যকর ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে। যাদেরকে এতে দায়ী পাওয়া যাবে তাদেরকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। তবে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি নয়, সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।
এতে আরো বলা হয়, কয়েক বছরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন তীব্র করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। শুধু ২০১৯ সালেই বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ৭৩২টি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে কমপক্ষে ১৩২৫ জনকে। এর অর্থ হলোÑ প্রতিদিন আটক করা হয়েছে তিনজনের বেশি মানুষকে। ২০২০ সালের প্রথম অর্ধেক সময়ে এই আইনে আটকের সংখ্যা ৫০০ অতিক্রম করেছে। সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনামূলক পোস্ট, লেখা এমনকি ব্যঙ্গচিত্রের কারণে ছাত্র, শিক্ষক, কার্টুনিস্ট এবং মানবাধিকারকর্মীদের কয়েক ডজনকে গ্রেফতার করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
মেক্সিকোয় মেয়র প্রার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহেও ক্লাস বন্ধ ঘোষণা দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন : প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের শোষণ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার সিংড়ায় প্রতিমন্ত্রীর শ্যালককে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ আ’লীগের চুয়াডাঙ্গায় হিট‌স্ট্রো‌কে যুবকের মৃত্যুর ৭ ঘণ্টা পর নারীর মৃত্যু ঢাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়াল, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ ৪২.৬ শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল

সকল