২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নিজের নির্মাণাধীন ভবন থেকে আবাসন ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

-

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আবুল খায়ের (৫২) নামে এক আবাসন ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার সকালে নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে পুলিশ তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে। কে বা কারা কেন তাকে হত্যা করেছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কিছু দিন আগে বসুন্ধরা এলাকায় কেনা একটি জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন স্বজনরা। নিহত ব্যবসায়ী সজীব বিল্ডার্স নামে একটি আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মালিক।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি আবুল খায়ের। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, শক্ত কিছু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে তাকে মারা হতে পারে। অন্য দিকে স্বজনদের দাবি, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফোন করে আবুল খায়েরকে বাসা থেকে বের করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর স্ত্রী রুপালী আক্তার জানান, পরিবারের সঙ্গে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এফ ব্লকের ২১ নম্বর সড়কের ৬৯২ নম্বর ভবন জালাল গার্ডেনের অষ্টম তলায় থাকতেন আবুল খায়ের। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নে। তিনি সাধারণত রাত ৮টার মধ্যেই বাসায় ফিরতেন। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বের হওয়ার পর তিনি আর ফিরে আসেননি। রাত ৮টার পর কল দিয়ে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর রাতভর রুপালী সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে খোঁজ নেন। কিন্তু তার স্বামীর সন্ধান মেলেনি। রাতে ভাটারা থানা পুলিশকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়। শেষে গতকাল ভোরে স্বজনরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে গিয়ে এন ব্লকে নির্মাণাধীন একটি ভবনের দোতলায় তার হাত-পা বাঁধা লাশ দেখতে পান।
পুলিশ জানায়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এন ব্লকের ওই ভবনটি সজীব বিল্ডার্সই নির্মাণ করছিল। আবুল খায়েরসহ নয়জন ভবনটির মালিক। ফেব্রুয়ারিতে তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাই হওয়ার পর থেকে ভবনের কাজ বন্ধ ছিল।
পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ। এরই মধ্যে নিহতের ব্যবসায়িক অংশীদারসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এন ব্লকে নির্মাণাধীন ৯ তলা ভবনের দোতলা থেকে তার লাশ পাওয়া গেছে। কার কল পেয়ে তিনি বাসা থেকে বের হন এবং হত্যায় কে বা কার সম্পৃক্ততা আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের মাথায় পেছনের দিক থেকে কিছু দিয়ে জোরালো আঘাত করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হওয়া যাবে।
নিহতের ছোট ভাই সুবর্ণচর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী বাবলু সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হন আবুল খায়ের। পরে তার রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে খাদিজা আক্তার স্বর্ণা মেডিক্যাল কলেজে পড়েন। ছেলে সজীবের নামেই তিনি বছর দশেক আগে গড়ে তোলেন নিজের আবাসন প্রতিষ্ঠান। এর আগে একসময় ঠিকাদারি করেছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার আবুল খায়ের।
আব্দুল বারী বাবলু বলেন, আমার ভাইয়ের সঙ্গে কারো শত্রুতা ছিল না। তাই কে বা কারা কেন তাকে হত্যা করল তা বুঝতে পারছি না। তবে আবাসিক ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্যে কিছু দিন আগে তিনি জমি কিনেছিলেন। ওই জমি নিয়ে একটি পক্ষের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তিনি তার ভাইকে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেন।
ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান বলেন, স্বজনরাই প্রথমে তার লাশ খুঁজে পান। তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement