১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জনগণ ‘সকল সম্ভাবনা’ হারিয়ে ফেলে : প্রধানমন্ত্রী

দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে শুক্রবার বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : বাসস -

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জন্যে আবারো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে দায়ী করে বলেছেন, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের জনগণ সব সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলেছিল। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা উপহার দেন কিন্তু যারা এই স্বাধীনতা চায়নি ও এতে বিশ্বাসও করে না এবং যারা দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে স্বাধীনতার জন্যে কোনো সহায়তাই করেনি তারাই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
এই হত্যাকাণ্ডের পর দেশের জনগণের সব সম্ভাবনা হারিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে এমন এক সময়ে হত্যা করা হয় যখন স্বাধীনতার পর তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। গত রোববার নগরীতে আওয়ামী লীগের কৃষক সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত এক স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এই কর্মসূচির উদ্বোধন ও বক্তব্য প্রদান করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ স্মরণে ৪৫তম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠসমূহের মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে কৃষক লীগ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে এই স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচি ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী ক্ষুধা ও দারিদ্র্রমুক্ত সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কাজ করতে বিকেএলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, বাঙালির কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গঠন করতে বঙ্গবন্ধু তার জীবন উৎসর্গ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তার সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের জন্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ সরকারের লক্ষ্য জনগণের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করে তাদের একটি সুন্দর জীবন উপহার দেয়া। তিনি বলেন, জনগণ যাতে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং বসবাসের জায়গা পায় সে লক্ষ্যে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীর সময়ে সরকার জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষ যাতে উন্নত জীবন পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
সরকার ও দলের পক্ষ থেকে অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে খাবার পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গরিব, এতিম ও অসহায়দের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ তিনি দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়ার এবং তার আদর্শ বাস্তবায়নে ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানান।
দুঃসময়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোয় আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘করোনার এই সময়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোও ভালো কাজ করছে।’ তিনি শোকের মাসে তার পরিবারের সদস্যদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং বলেন, ‘এই মাসে আমি আমার সবাইকে হারিয়েছি, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’ এ সময় তিনি বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি ও উদাত্ত আহ্বান জানান। ভিডিওকলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
আরো বক্তৃতা করেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, এমপি।
প্রধানমন্ত্রীকে মোদি ও মমতার ঈদের শুভেচ্ছা : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মোদির বার্তাকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঈদুল আজহার উৎসব, যা ভারতের বেশ কয়েকটি অংশেও পালিত হয়, ‘আমাদের গভীর ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক সংযোগের কথা মনে করিয়ে দেয়।
প্রেস সচিব বলেন, মোদি ঈদ উপলক্ষে শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। এ দিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ শুভেচ্ছা জানান। চিঠিতে মমতা বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং আপনার মাধ্যমে সকল বাংলাদেশীকে আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে আমাদের পরম প্রতিবেশী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আরো শ্রী বৃদ্ধি হবে, এই কামনা করছি।’ চিঠিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement