১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ব্যাংকগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালা

সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো পুঁজিবাজারে আনার উদ্যোগ

-

সরকারি বেসরকারি অবকাঠামোকে পুঁজিবাজারমুখী করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে এসব অবকাঠামোতে ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর বিনিয়োগকৃত অর্থ যাতে অতি সহজে উত্তোলন করা যায়, সে জন্য বিনিয়োগের এক বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর জন্য গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত এক নীতিমালা জারি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করে ব্যাংকের পুঁজি দীর্ঘ দিন ধরে আটকে থাকে। যেমন, বেসরকারি খাতে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে সরকারি চারটি ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে। এ ফ্লাইওভারে শেয়ারের বিনিয়োগ করার পর থেকে ব্যাংক কোনো অর্থই উত্তোলন করতে পারছে না। আবার প্রকল্পটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়ায় এ প্রকল্পের শেয়ার ব্যাংক হস্তান্তরও করতে পারছে না। এ কারণে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যাংকের পুঁজি আটকে রয়েছে। এমনিভাবে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পর্যটনসহ আরো কয়েকটি খাতে কয়েকটি ব্যাংক শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু একইভাবে শেয়ার হস্তান্তর করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর পুঁজি দীর্ঘদিন আটকে আছে। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালাও ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তালিকাবহির্ভূত সরকারি, বেসরকারি প্রকল্প বা কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে একটি নীতিমালা দেয়া হয়েছে। এ নীতিমালাটি গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারের উড়াল সেতু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, পর্যটন খাতসহ বিভিন্ন প্রকল্প এবং একইভাবে এসব খাতের বেসরকারি প্রকল্পগুলোতে ব্যাংকগুলো ইচ্ছে করলে শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াতে পারবে। তবে, শেয়ারে বিনিয়োগ করার প্রথম বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার যৌথ সমন্বয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আর যেসব কোম্পানি ইতোমধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াধীনে রয়েছে ওই সব কোম্পানিতে ব্যাংক বিনিয়োগ করার ৬ মাসের মধ্যে তালিকাভুক্তির কাজ সম্পন্ন করতে হবে। ডাইরেক্ট লিস্টিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্তি সম্পাদন করতে হবে এবং শেয়ারপ্রতি মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যে মূল্যে আলোচ্য কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ সম্পাদন করেছে তার গড় মূল্যের কম ধার্য করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিশোধিত মূলধনের ৫ শতাংশের বেশি প্রথম বছরে তালিকাভুক্ত করা যাবে না। এরূপ কোনো প্রকল্প বা প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিপরীতে বন্ড থাকলে এবং সংশ্লিষ্ট বন্ডের চুক্তিপত্রের ভিন্নরূপ কিছু না থাকলে তালিকাভুক্তির মূল্যে রূপান্তর সম্পন্ন করার সুযোগ থাকবে। এ ক্ষেত্রে ওই বন্ডের বিপরীতে থাকা শেয়ারে রূপান্তরিত অংশের বিপরীতে থাকা আনুপাতিক অংশ আলোচ্য প্রকল্প বা সংশ্লিষ্ট কোম্পানি অবশিষ্ট বন্ডের (যদি থাকে) মেয়াদপূর্তির আগেই নিজস্ব প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে। এরূপ কোনো প্রকল্প বা প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের নিরাপত্তার জন্য অ-তালিকাভুক্ত থাকাকালীন গঠিত কোনো বিশেষ তহবিল সংশ্লিষ্ট কোম্পানি তার পর্ষদের অনুমোদনক্রমে শুধুমাত্র নগদ লভ্যাংশ প্রদান বা তফসিলি ব্যাংকের সাথে থাকা দায় পরিশোধ করার কাজে ব্যবহার করতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ নীতিমালার ফলে একটি ব্যাংক অ-তালিকাভুক্ত প্রকল্প বা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে তাদের প্রয়োজনে যেকোনো সময় শেয়ার হস্তান্তর করতে পারবে। ফলে বাজারে কোম্পানির পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে ভালো কোম্পানির শেয়ার।


আরো সংবাদ



premium cement